পীযূষ চাওলা।
পীযূষ চাওলা যখন আইপিএল খেলা শুরু করেছেন, তখন রিস্ট স্পিনার (যাঁরা কব্জির সাহায্যে বল ঘোরান) খেলানোর ঝুঁকি নিতে চাইত না বেশির ভাগ দল। বর্তমানে কোনও দলে রিস্টস্পিনার থাকা মানে তাদের বাড়তি সুবিধা। কারণ, সময়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছে রিস্টস্পিনারেরা রান দিলেও উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি তৎপর।
কলকাতা নাইট রাইডার্স দলেও এ বার রিস্টস্পিনারের সংখ্যা বেড়েছে। পীযূষ, কুলদীপ যাদবের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে কে সি কারিয়াপ্পাকে। যাঁকে বিস্ময় স্পিনার বলা হলেও ধরা হচ্ছে লেগস্পিনার হিসেবেই। কারণ, লেগস্পিনই তাঁর মূল অস্ত্র। এ ছাড়া গুগলি, ক্যারম বল, ফ্লিপার, স্লাইডার সব দেওয়ার ক্ষমতাই তাঁর রয়েছে। তিন রিস্টস্পিনারের পাশাপাশি কেকেআর স্পিন বিভাগকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে সুনীল নারাইনের বিস্ময়। পীযূষ মনে করেন, ভারতের যে কোনও পিচে বিপক্ষকে চাপে রাখার ক্ষমতা রয়েছে কেকেআর স্পিন বিভাগের।
সোমবার কেকেআর টিম হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে পীযূষ বলেন, ‘‘অন্যতম সেরা স্পিন বিভাগ আমাদের। ভারতের যে কোনও পিচ, যে কোনও পরিস্থিতি জয় করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। কারিয়াপ্পা আসার পরে আমরা আরও শক্তিশালী। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির পারফরম্যান্স ওকে আবার আমাদের দলে ফিরিয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া কুলদীপ তো মার খেলেও উপরে বল করতে ভয় পায় না। ওর সাহসই ওকে উইকেট পাইয়ে দেয়।’’
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের শেষ দু’টি ম্যাচে ভারতীয় চায়নাম্যান বোলারকে সহজে খেলেছেন উসমান খোয়াজারা। যার প্রভাব আগামী প্রতিযোগিতায় পড়তেই পারে। পীযূষ যদিও সেটা মনে করেন না। তিনি বললেন, ‘‘অনেকেই কুলদীপকে বিস্ময় স্পিনার বলে ভুল করেন। কিন্তু কুলদীপ কখনওই নিজেকে বিস্ময় স্পিনার বলে মনে করে না। ও একজন দক্ষ রিস্টস্পিনার। সময়ের সঙ্গে যার দক্ষতা আরও বাড়ছে।’’ নাইটদের স্পিন বিভাগ শক্তিশালী হলেও পেস বিভাগ কেমন করবে তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারছেন না। গত বার শিবম মাভি নিয়মিত ভাল বল করেছেন। কিন্তু এ বার তিনি চোটের জন্য প্রতিযোগিতার বাইরে। নেই কমলেশ নগরকোটিও। তাঁর পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে সন্দীপ ওয়ারিয়রকে। নাইটদের শক্তির সঙ্গে আদৌ মানিয়ে নিতে পারবেন এই কেরল পেসার? পীযূষ আত্মবিশ্বাসী। বলে দিলেন, ‘‘সন্দীপ যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ভাল রেকর্ড রয়েছে ওর। একটি দল গড়তে গেলে সব দিক সমান ভাবে শক্তিশালী করে তোলা যায় না। কম্বিনেশনের উপরে অনেকটা নির্ভর করে। আমার বিশ্বাস, আমরা সঠিক কম্বিনেশন নিয়েই মাঠে নামব।’’
২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তিনি। ক্রিকেটের বিশ্বযুদ্ধের আগে কতটা পরিশ্রম করা দরকার সে বিষয়ে তিনি ওয়াকিবহাল। এ বিষয়ে কুলদীপদের কোনও পরামর্শ দিলেন অভিজ্ঞ স্পিনার? পীযূষের উত্তর, ‘‘বিশ্বকাপ অবশ্যই বড় প্রতিযোগিতা। আইপিএলও বিশ্বের সেরা ক্রিকেট লিগ। এখানে যারা খেলে তারা প্রত্যেকেই জানে কতটা পরিশ্রম করা উচিত। আশা করি কোনও অসুবিধা হবে না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘বিশ্বকাপের আগে আইপিএল ভাল প্রস্তুতির জায়গা। হতে পারে এটা টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা। কিন্তু এখানে ভাল বল করা মানে বিশ্বকাপের জন্যও তুমি অনেকটা এগিয়ে থাকলে।’’
শোনা যাচ্ছে এ বারের বিশ্বকাপে বেশির ভাগ ম্যাচেই ব্যাটিং সহায়ক পিচ থাকবে। রিস্টস্পিনারদের কতটা কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলে এ ধরনের উইকেট? পীযূষ বলছিলেন, ‘‘ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে লেগস্পিনাররাই যা একটু চাপ তৈরি করতে পারে।’’