International Women's Day

মায়ের লড়াইয়ে ঝলমলে সফর রিচার 

বাবা মানবেন্দ্র ঘোষের হাত ধরেই রিচার ক্রিকেট মাঠে নামা। কখনও আপত্তি করেননি স্বপ্নাদেবী।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০২:৫২
Share:

স্বপ্না ঘোষ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বাড়িতে অনুশীলনের সময় কখনও ভেঙেছে নতুন আলমারির কাচ, কখনও বা জানলার। কিন্তু বকাবকি করেননি, ঝাড়ু দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে ভাঙা কাচ। নিজের ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হওয়ার। তা আর হয়নি, কিন্তু মেয়ের স্বপ্নপূরণের পথে তিনিই অন্যতম কান্ডারী। বরাবর রিচার উৎসাহ জুগিয়ে এসেছেন তার মা স্বপ্না ঘোষ।

Advertisement

বাবা মানবেন্দ্র ঘোষের হাত ধরেই রিচার ক্রিকেট মাঠে নামা। কখনও আপত্তি করেননি স্বপ্নাদেবী। মেয়ের ইচ্ছেকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। বাইরে খেলতে গেলে টাকার সমস্যা হলে তা সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পড়ত স্বপ্নাদেবীর উপরেই। কখনও ১২ হাজার টাকার ব্যাট কিনে দিতে হয়েছে রিচাকে। খেলতে গিয়ে ওই ব্যাটে ফাটল ধরায় পরে ২৬ হাজার টাকার ব্যাট কিনতে হয়েছে। কোথা থেকে কী ভাবে টাকা জোগাড় হবে তা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারেননি মানবেন্দ্রবাবুও। পরিচিতদের থেকে টাকা জোগাড় করেছেন স্বপ্নাদেবী।

অস্ট্রেলিয়ায় টি টোয়েন্টি মহিলা বিশ্বকাপে আজ, রবিবার ভারতীয় দলের খেলা। মাঠে রিচাকে দেখার জন্য মুখিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা। হাকিমপাড়ার বাড়িতে বসেই মেয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন স্বপ্নাদেবী। মানবেন্দ্রবাবুর কম্পিউটারের সরঞ্জামের ব্যবসা। রিচা এবং তার দিদির পড়াশোনার দায়িত্ব স্বপ্নাদেবীর উপরেই। মহিলা টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেয়ের সুযোগ পাওয়া খবর যখন এল তখন একটু চিন্তায় পড়লেও আমল দেননি। স্বপ্নাদেবী জানালেন, এই সুযোগ বারবার আসে না। মেয়েকে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই নেই।

Advertisement

মধ্যবিত্ত ঘোষ পরিবার মানবেন্দ্রবাবুর উপরেই নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘‘স্ত্রী সব সময় পাশে থেকেছে। না হলে সব দিক সামাল দেওয়া সত্যি মুশকিল হতো।’’ স্বপ্নাদেবী বলেন, ‘‘আমি যতটা পারি চেষ্টা করেছি। স্বপ্ন দেখতাম পড়াশোনা করে চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াব। নিজে পারিনি। কিন্তু আর পাঁচটা মেয়ে যে নিজের পায়ে দাঁড়ায়, এটাই চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement