আশাহত: লড়াই করেও শেষরক্ষা হল না। রবিবার পুরস্কার মঞ্চে সিন্ধু (বাঁ দিকে) এবং ইয়ামাগুচি। গেটি ইমেজেস
সাত মাসের ট্রফি-খরা কাটাতে পারলেন না পি ভি সিন্ধু। গত মরসুমে পাঁচটি ফাইনালে হারলেও সিন্ধু মরসুম শেষের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। চলতি মরসুমে তিনি প্রথম ফাইনালে উঠেছিলেন ইন্দোনেশিয়া ওপেনে। সেখানেও রবিবার ফাইনালে জাপানের আকানে ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে স্ট্রেট গেমে হারলেন ভারতীয় তারকা। ফল ১৫-২১, ১৬-২১।
গত বছর ডিসেম্বরে প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার মরসুম শেষের ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনাল জিতেছিলেন সিন্ধু। কিন্তু তার পরে চলতি মরসুমে আর কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠতে পারেননি তিনি। কয়েকটি প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। কিছু দিন বিশ্রাম নিয়ে ইন্দোনেশিয়া ওপেনে নামার পরে অবশ্য শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে ছিলেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর বড় গাঁট প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নজোমি ওকুহারা এবং সেমিফাইনালে অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন চেন উফেইকে হারান তিনি। তা ছাড়া ফাইনালের প্রতিপক্ষ ইয়ামাগুচিকে এর আগে টানা চার বার হারিয়ে দিয়েছিলেন সিন্ধু। তাই তাঁর ভক্তরা আশায় ছিলেন, রবিবার মরসুমের প্রথম ট্রফি জিতবেন হায়দরাবাদি তারকা। কিন্তু ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে এক সময় এগিয়ে গিয়েও জয় তুলে নিতে পারেননি সিন্ধু।
হারের পরে ২২ বছর বয়সি প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রশংসা করে সিন্ধু বলেছেন, ‘‘খুব ভাল খেলেছে ইয়ামাগুচি। লম্বা লম্বা র্যালি হয়েছে ম্যাচে। প্রথম গেমে ২-৩ পয়েন্টে এগিয়ে গিয়েছিলাম। তবে কয়েকটা ভুল করেছিলাম। ইয়ামাগুচি সেটার সুযোগ নিয়ে ফিনিশ করল। যদি প্রথম গেমটা জিততে পারতাম, তা হলে হয়তো অন্য রকম কিছু হতে পারত।’’
এই নিয়ে ১৫ বার মুখোমুখি লড়াইয়ে ইয়ামাগুচির কাছে পাঁচ নম্বর হার সিন্ধুর। শেষ বার ইয়ামাগুচি তাঁকে হারিয়েছিলেন গত বছর অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়শিপের সেমিফাইনালে। ‘‘দ্বিতীয় গেমে ইয়ামাগুচি ৫-৬ পয়েন্টে এগিয়ে গিয়েছিল। আমাকে জিততে গেলে সমতা ফেরাতে হত। যাই হোক, এই প্রতিযোগিতাটা আমার জন্য খারাপ যায়নি। আশা করি এই আত্মবিশ্বাসটা আগামী প্রতিযোগিতায় কাজে লাগাতে পারব। এর পরে জাপান ওপেনে খেলছি। আশা করছি সেখানে ভাল পারফর্ম করতে পারব,’’ বলেছেন সিন্ধু।
জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ পুল্লেলা গোপীচন্দও ছাত্রী ফাইনালে হেরে যাওয়ায় অতটা হতাশ নন। তিনি মনে করেন সিন্ধু যে ভাবে এই প্রতিযোগিতায় খেলেছেন, তাতে উন্নতিই চোখে পড়েছে। রবিবার হায়দরাবাদ থেকে ফোনে গোপীচন্দ বলেন, ‘‘সিন্ধু ভালই খেলেছে। শনিবার সেমিফাইনাল ম্যাচে (চেন উফেইয়ের বিরুদ্ধে), তার আগে কোয়ার্টার ফাইনালেও (ওকুহারার বিরুদ্ধে) ভাল জিতেছে সিন্ধু। আজ ইয়ামাগুচি যোগ্য হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ম্যাচটা খুবই হাড্ডাহাড্ডি ছিল। আমার মনে হয় সিন্ধু সব মিলিয়ে ভাল খেলেছে।’’
কিন্তু আগে টানা চার বার হারানো প্রতিদ্বন্দ্বী ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে ফাইনালে প্রথম গেমে এগিয়ে গিয়েও সিন্ধুর এ ভাবে ব্যর্থ হওয়ার কারণ কী? মাঝপথে কি ফোকাস হারিয়ে ফেলছেন সিন্ধু? গোপীচন্দ কিন্তু সে রকম মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘‘সত্যি বলতে আজ ইয়ামাগুচি দুর্দান্ত খেলেছে। খুব ভাল আক্রমণ করেছে। দুরন্ত গতিতে খেলেছে। এ রকম নয় সিন্ধু খারাপ খেলেছে বলে হেরে গিয়েছে। ইয়ামাগুচি আরও ভাল খেলেছে, তাই জিতেছে।’’
সিন্ধুদের এর পরে চ্যালেঞ্জ জাপান ওপেনে। সেখানে কী আশা করছেন তিনি? গোপীচন্দ বলেন, ‘‘যে ভাবে সিন্ধু খেলছে তাতে খুশি। ওর খেলায় উন্নতি দেখে ভাল লাগছে। আমি নিশ্চিত এ ভাবেই খেলে যেতে পারলে আগামী প্রতিযোগিতাতে ও সফল হবে।’’