এ বার কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়ালেন অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রা। ফাইল চিত্র।
রবিবার দিল্লিতে নতুন সংসদ ভবন অভিযানের আগে পথেই আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিশ্বমঞ্চে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করা কুস্তিগিরদের আটকায় পুলিশ। বিনেশ ফোগট, সাক্ষী মালিকদের টেনে হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়। দীর্ঘ ক্ষণ আটকও করে রাখা হয়েছিলতাঁদের। সন্ধে ছ’টা নাগাদ ছেড়ে দেওয়া হয় সাক্ষীদের। কুস্তিগিরদের আন্দোলন থামাতে পুলিশের অতিতৎপরতার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই গর্জে ওঠেন বিজেন্দ্র সিংহ, নীরজ চোপড়া, সুনীল ছেত্রীদের মতো ক্রীড়াবিদরা।
প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেন তাঁরা। এ বার কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়ালেন অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রা ও ভারতীয় দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইরফান পাঠানও।
সোমবার টুইটারে ইরফান লিখেছেন, ‘‘খুবই কষ্ট পাচ্ছি আমাদের ক্রীড়াবিদদের দুরাবস্থার এই ছবি দেখে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার সমাধান হোক।’’ ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্স শুটিংয়ে সোনাজয়ী বিন্দ্রা লিখেছেন, ‘‘প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের হেনস্থার ভয়ঙ্কর সব ছবি দেখে গতকাল বিনিদ্র রাত কেটেছে।’’ বিন্দ্রা আরও লেখেন, ‘‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে এই সমস্যার যাতেযথাযথ সমাধান হয়। বন্ধ করতে হবে ক্রীড়াবিদদের হয়রানি। আক্রান্তদের ন্যায়বিচার দিতে হবে। আমাদের অবশ্যই সমস্ত ক্রীড়াবিদদের উন্নতির জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।’’
বিন্দ্রা এর আগে লিখেছিলেন, ‘‘অ্যাথলিট হিসেবে আমরা প্রত্যেক দিন কঠোর পরিশ্রম করি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। ভারতীয় কুস্তি সংস্থার হয়রানির অভিযোগ তুলে আমাদের ক্রীড়াবিদরা পথে নেমে প্রতিবাদ করার প্রয়োজনীয়তা যে অনুভব করছেন, তা গভীর উদ্বেগের। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের জন্য আমার হৃদয় আজ অত্যন্ত ভারাক্রান্ত।’’
অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ টুইট করেন, ‘‘আজ আমার সঙ্গে হচ্ছে, কাল তোমাদের সময় আসবে। সবার সময় আসবে।’’ জ্যাভলিনে অলিম্পিক্স সোনাজয়ী নীরজ চোপড়া গণমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এই ঘটনা দেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আরও ভাল ভাবে এই ব্যাপারটা সামলানো যেত।” এর আগেও সমাজমাধ্যমে কুস্তিগিরদের ধর্নাকে সমর্থন করে নিজের মতামত জানিয়েছিলেন টোকিয়ো অলিম্পিক্স জ্যাভলিনে সোনা জয়ী অ্যাথলিট।
নীরজের পাশাপাশি ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীও রবিবার টুইটারে লেখেন, “কোনও বিবেচনা ছাড়াই কেন কুস্তিগিরদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? এটা উপযুক্ত ব্যবহার নয়। আশা করি এই বিতর্কের সমাধান যে পথে হওয়া উচিত সে ভাবেই হবে।”
রবিবার দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বারবার অনুরোধ করার সত্ত্বেও তাঁরা আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। সমাজমাধ্যমে দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘কুস্তিগিররা যদি আবার অবস্থানে বসার জন্য আবেদন করেন, যন্তর মন্তর ছাড়া অন্য কোথাও তাঁদের বসার অনুমতি দেওয়া হবে।’’
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আরও কঠোর অবস্থান নিল দিল্লির পুলিশ। তাদের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়, যন্তর মন্তরে আর ধর্নায় বসতে পারবেন না কুস্তিগিররা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।