অপেক্ষা: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের সিরিজ় শুরুর আগে ট্রফি নিয়ে অধিনায়ক রুট ও কোহালি। ছবি বিসিসিআই।
ইংল্যান্ডে টেস্ট মানেই সুইংয়ের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানদের লড়াই। সেই সঙ্গে পিচে যদি থাকে ঘাস, তা হলে আর কথাই নেই। মেঘলা আবহাওয়ায় সব চেয়ে বড় পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হয় ব্যাটসম্যানদেরই।
শেষ বার ইংল্যান্ড সফরে সেই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল ভারতীয় দল। ১-৪ হেরে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গিয়েছিল বিরাট-বাহিনী। এ বার যদিও তাঁর দল অনেক পরিণত, অভিজ্ঞ। শেষ সফরে করা ভুল, আর এই সফরে করতে চায় না ভারতীয় দল। এক মাসের ছুটি শেষে তাঁরা এখন ফুরফুরে। ভারতীয় অধিনায়ক আশ্বাস দিয়েছেন, সফর জুড়েই এই মনোভাব থাকবে দলে। ইংল্যান্ডে সিরিজ় জেতার স্বপ্ন এ বার পূরণ করার জন্য মরিয়া বিরাট কোহালি।
জো রুটদের বিরুদ্ধে বুধবার থেকে টেস্ট দ্বৈরথ শুরু হওয়ার প্রায় দু’মাস আগে এ দেশে পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় দল। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সম্পূর্ণ সুযোগ পেয়েছে। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে দেখে নিয়েছে, কে কোন জায়গায় আছে। তা ছাড়া গত বারের সফরে একাধিক ক্রিকেটারের অভিজ্ঞতা খুব একটা ছিল না। কিন্তু এ বার ঋষভ পন্থ, মহম্মদ সিরাজ, শার্দূল ঠাকুর-রা একেবারে তৈরি হয়ে এ দেশে এসেছেন। প্রস্তুতি ম্যাচে রান পেয়েছেন কে এল রাহুল। সব মিলিয়ে দল সব রকমের পরীক্ষার জন্য তৈরি। তাই ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে এসে বিরাটের বলতে দ্বিধা নেই, ‘‘গত সফরের চেয়ে এ বার আমাদের দলের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। শেষ বার যা করে দেখাতে পারিনি, এ বার তা করতেই হবে। মনে রাখতে হবে, সব সেশন কিন্তু আমাদের পক্ষে যাবে না। তবুও লড়াই করে যেতে হবে শেষ পর্যন্ত।’’ যোগ করেছেন, ‘‘গত দু’বছরে এমন সব ম্যাচ আমরা বার করেছি যে, ভরসা আছে কঠিন সময় কেউ না কেউ ঠিক দাঁড়িয়ে যাবে।’’
গত বারের চেয়ে এ বার কি আরও বেশি প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পেয়েছেন? অধিনায়কের উত্তর, ‘‘অবশ্যই। আমরা এ বার বেশ ভাল তৈরি। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অনেক সময় পেয়েছি। অনেক ছোট ছোট বিষয় বড় ভূমিকা পালন করে। যেমন বাতাসে আর্দ্রতার সঙ্গে মানাতে পারছি কি না। হঠাৎ মেঘলা আবহাওয়ায় কী রকম খেলা উচিত। সেগুলো আয়ত্তে আনতে পেরেছি।’’
বিরাট মনে করেন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে যে একটি মাস কাটানোর সময় পেয়েছেন, তা অনেকটাই সাহায্য করেছে। ভারতীয় অধিনায়ক বরাবরই মানসিক সুস্থতার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। বেন স্টোকসের সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে তিনি সমর্থন জানিয়েছেন। বিরাট অনুভব করেন, একজন অধিনায়ক কতটা চাপের মধ্যে থাকেন। ক্রিকেটীয় চাপের পাশাপাশি সমর্থকদের আশা পূরণ করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তার উপরে বলয়ের মধ্যে দমবন্ধ করা পরিবেশের প্রভাব পড়তে পারে ক্রিকেটের উপরেও। বিরাট জানিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে তাঁর দল চাঙ্গা। আসন্ন পাঁচটি টেস্টে কোনও সমস্যাই হবে না।
ভারতীয় দলের প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার পরে ইংল্যান্ডে সিরিজ় জিততে পারলে তাঁর দলের কাছে বড় প্রাপ্তি হবে। ইংল্যান্ডের এক সংবাদমাধ্যমকে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘কোচ হিসেবেও ইংল্যান্ডে জিততে চাই। অস্ট্রেলিয়ার পরে ইংল্যান্ডে জিতলে ছেলেদের মধ্যে আলাদাই অনুভূতি হবে। দারুণ একটা প্রাপ্তি হবে।’’
ভারতীয় দল নিয়ে কিছুটা সমস্যা হয়তো থেকেই যাচ্ছে। ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মার সঙ্গে কাকে দেখা যাবে, তা বুধবারের আগে জানা যাবে না। মায়াঙ্ক আগরওয়াল চোট পাওয়ায় কে এল রাহুল ও অভিমন্যু ঈশ্বরনের মধ্যেই কোনও একজনকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। রাহুলের খেলার সম্ভাবনাই যদিও বেশি। ইংল্যান্ডে এই ব্যাটসম্যানের পরিসংখ্যান খারাপ নয়। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরিও আছে। রাহুলই হয়তো প্রথম পছন্দ বিরাটের। তবে তিন নম্বরে নেমে চেতেশ্বর পুজারা কি একই ভঙ্গিতে খেলবেন? সেই প্রশ্ন করার পরেই বিরাট বলে দিয়েছেন, ‘‘পুজারাকে নিয়ে সমালোচনা একেবারেই ভিত্তিহীন। সমালোচনা হলেও আমি জানি পুজারার কিছু যায় আসে না। ও যদি ভুল করে, তা হলে ওকেই সেটা শুধরে নিতে হবে।’’