এই বছরেই অস্ট্রেলিয়ায় বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। তার প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবেই নিউজিল্যান্ডে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে ভারত। এর আগে টিম ইন্ডিয়া কখনও এই ফরম্যাটে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলেনি। কিউয়িদের দেশে সেই সিরিজের জন্য নির্বাচিত ভারতীয় স্কোয়াড বেছে নেওয়া হল রবিবার।
বিরাট কোহালি যথারীতি অধিনায়ক। ৩১ বছর বয়সি খেলেছেন ৭৮ টি-টোয়েন্টি। ৫২.৭২ গড়ে করেছেন ২৬৮৯ রান। স্ট্রাইক রেট ১৩৮.৫৩। এই ফরম্যাটে ২৪ হাফ-সেঞ্চুরি থাকলেও শতরান অধরা থেকে গিয়েছে তাঁর। নিউজিল্যান্ড সফরের পাঁচ টি-টোয়েন্টি তাঁর কাছে ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক, উভয় ভূমিকাতেই কঠিন পরীক্ষার।
রোহিত শর্মা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেননি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে ফিরেছেন তিনি। ৩২ বছর বয়সি এই ফরম্যাটে খেলেছেন ১০৪ ম্যাচ। ৩২১০ গড়ে করেছেন ২৬৩৩ রান। চার সেঞ্চুরি ও ১৯ হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১৩৮.২১।
লোকেশ রাহুল ওপেনার হিসেবে রীতিমতো ধারাবাহিক থেকেছেন সম্প্রতি। ২৭ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত ৩৭ টি-টোয়েন্টিতে ৪৮.১৭ গড়ে ১২৩৭ রান করেছেন। যাতে রয়েছে দুটো সেঞ্চুরি ও নয়টি হাফ-সেঞ্চুরি। তাঁর সর্বাধিক স্কোর অপরাজিত ১১০। যে ফর্মে আছেন, তাতে রাহুলকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়।
শিখর ধওয়ন চোট সারিয়ে ফিরে এসেছেন এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পুণেয় শেষ টি-টোয়েন্টিতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। যা তাঁকে রোহিতের সঙ্গী ওপেনার হওয়ার লড়াইয়ে রেখেছে। ৩৪ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৬১ টি-টোয়েন্টি। ২৮.৩৫ গড়ে করেছেন ১৫৮৮ রান। রয়েছ ১০ হাফ-সেঞ্চুরি।
শ্রেয়াস আইয়ার চার নম্বরে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন। ২৫ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ১৭ টি-টোয়েন্টি। ২২ গড়ে করেছেন ২৬৪ রান। পঞ্চাশ একটিই। সর্বাধিক ৬২। স্ট্রাইক রেট ১২৮.১৫। যেমন তুলে মারতে পারেন, তেমনই ইনিংস মেরামতের ক্ষমতাও রয়েছে শ্রেয়াসের।
মণীশ পাণ্ডে সদ্য পুণেয় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিজেকে ফের চিনিয়েছেন। ৩০ বছর বয়সি দীর্ঘদিন রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন। তাই শুক্রবার সুযোগ কাজে লাগানো জরুরি ছিল তাঁর কাছে। এখনও পর্যন্ত ৩৩ টি-টোয়েন্টিতে ৪১.২০ গড়ে ৬১৮ রান করেছেন। রয়েছে দুটো পঞ্চাশ। সর্বাধিক অপরাজিত ৭৯। স্ট্রাইক রেট ১২৪.৫৯।
ঋষভ পন্থ আইপিএলে দারুণ খেলেই উঠে এসেছেন। ফলে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৮ টি-টোয়েন্টিতে সাতটা ক্যাচ ও চারটি স্টাম্পিং করেছেন তিনি। তবে ব্যাট হাতে গড় মাত্র ২০.৫০। করেছেন ৪১০ রান। যদিও স্ট্রাইক রেট ১২১.৬৬।
রবীন্দ্র জাডেজা ব্যাট-বল-ফিল্ডিংয়ে সত্যিকারের থ্রি-ডি ক্রিকেটার। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজে প্রথম এগারোয় জায়গা পাননি তিনি। এখনও পর্যন্ত ৪৬ টি-টোয়েন্টিতে ৩১.২২ গড়ে ৩৫ উইকেট নিয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার। ইকনমি রেট ৭.১৮। স্ট্রাইক রেট ২৬।
জশপ্রীত বুমরার উত্থান ঘটেছিল আইপিএল দিয়ে। তার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে চিনিয়েছেন ক্রমশ। ২৬ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৪৫ টি-টোয়েন্টি। ২০.১১ গড়ে নিয়েছেন ৫৩ উইকেট। ইকনমি রেট ৬.৬৯। স্ট্রাইক রেট ১৮। ডেথ ওভারে তাঁর বৈচিত্র ভারতের বড় ভরসা।
যুজবেন্দ্র চহাল দীর্ঘদিন ধরে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের প্রায় নিয়মিত সদস্য। ২৯ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৩৯ টি-টোয়েন্টি। ২২.৫৩ গড়ে নিয়েছেন ৫২ উইকেট। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন এক বার। ২৫ রানে ছয় উইকেট, এই ফরম্যাটে তাঁর সেরা বোলিং। ইকনমি রেট ৮.১৬, স্ট্রাইক রেট ১৬.৫।
কুলদীপ যাদব মাঝের ওভারে তাঁর বৈচিত্রের জন্যই বিপক্ষের কাছে বিপজ্জনক। ২৫ বছর বয়সি চায়নাম্যান এখনও পর্যন্ত ২১ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন এক বার। ২৪ রানে পাঁচ উইকেট তাঁর সেরা বোলিং। এই ফরম্যাটে কুলদীপের গড় ১৩.৭৬। ইকনমি রেট ৭.১১। স্ট্রাইক রেট ১১.৬।
নবদীপ সাইনি সদ্য শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সেরা হয়েছেন। দুরন্ত গতিতে করা ইয়র্কার তাঁর প্রধান অস্ত্র। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজে যার প্রয়োগ করতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এক ওয়ানডে এবং আট টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন যথাক্রমে দুই ও ১১ উইকেট।
শার্দুল ঠাকুর সদ্য পুণেয় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে সেরা হয়েছেন। বল হাতে তাঁর বৈচিত্র ধাঁধায় রাখছে ব্যাটসম্যানকে। গতির হেরফের ঘটিয়ে নিচ্ছেন উইকেট। ব্যাট হাতেও মারমুখি। বলা হচ্ছে অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ২৮ বছর বয়সির মধ্যে। এখনও পর্যন্ত ১০ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটন সুন্দর এখন ভারতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারের মধ্যে বল করার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। রান আটকাতে পারেন ২০ বছর বয়সি। এখনও পর্যন্ত ২১ টি-টোয়েন্টিতে ১৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইকনমি রেট মাত্র ৬.৮০। আর এখানেই তাঁর গুরুত্ব। পাশাপাশি, লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতেও পারেন।
শিবম দুবে হলেন বোলিং অলরাউন্ডার। বড় শট খেলার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। ছয় মারতে সিদ্ধহস্ত। আবার মিডিয়াম পেসও কার্যকরী। ২০ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত আট টি-টোয়েন্টিতে চার ইনিংসে ৩২ গড়ে ৬৪ রান করেছেন। নিয়েছেন তিন উইকেট।
ভারতীয় পেস অ্যাটাককে আরও জোরাল করতে দলে রাখা হয়েছে মহম্মদ শামিকে। বল হাতে তাঁর কেরামতি তো দেখেইছেন দর্শকেরা, ব্যাট হাতেও স্লগ ওভারে কিন্তু চমক দিতে পারেন তিনি।