তাঁর একদা সঙ্গী মহেশ ভূপতি আগেই অবসর নিয়েছেন। সানিয়া মির্জাও এই মরসুমের পরেই অবসর নেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে আগামী দিনে ভারত থেকে কারা গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেন?
আকর্ষণ: প্রদর্শনী ম্যাচে লি ও ইউসুফ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সরকারী ভাবে ঘোষণা না করলেও, দু’বছর আগেই টেনিস সার্কিটে জীবনের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। এ বার ভারত থেকে আগামী দিনের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী খেলোয়াড় পেতে তরুণ প্রজন্মকে সাহায্য করতে চান লিয়েন্ডার পেজ। তবে তার জন্য ভারতীয় টেনিসকে অনেক পথ হাঁটতে হবে। রবিবার দক্ষিণ কলকাতার সিসিএফসি মাঠে এক প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে খেলতে এসে এমনই বললেন ভারতীয় টেনিসের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব।
সদ্য রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতা উপভোগ করলেও লিয়েন্ডার বলছেন, ‘‘৩১ বছর দেশের হয়ে টেনিস সার্কিটে খেলেছি। এখন রাজনীতিও দারুণ উপভোগ করলেও খেলার দিনগুলোই আমার কাছে বিশেষ সম্মানের। ডেভিস কাপে ডাবলসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জেতা, সাতটি অলিম্পিক্সে খেলা-এগুলো বিশেষ সম্মানের।’’
এ দিন অবসরের কারণও জানিয়েছেন লি। বলেন, ‘‘২০২০ সালের ৭ মার্চ ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ডেভিস কাপেই শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি। এই বয়সে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে খেলতে ইচ্ছুক নই। কাজটা খুব কঠিন। কারণ পেশাদার টেনিসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেলতে হবে। করোনা সংক্রমণ ও চোট-আঘাতের ভয় আছে। তার উপরে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকা এবং দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতা আমার খেলার ইচ্ছেটাই শেষ করে দিয়েছে।’’
ভারতের হয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতায় আটটি ডাবলস খেতাব ও ১০টি মিক্সড ডাবলস খেতাব জিতেছেন লিয়েন্ডার। তাঁর একদা সঙ্গী মহেশ ভূপতি আগেই অবসর নিয়েছেন। সানিয়া মির্জাও এই মরসুমের পরেই অবসর নেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে আগামী দিনে ভারত থেকে কারা গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেন? এই প্রশ্ন করা হলে লিয়েন্ডার বলেন, ‘‘য়ুকি ভামব্রি, সুমিত নাগাল, পূরব রাজা, জীবন নেদুনচেঝিয়ান, অঙ্কিতা রায়নার মতো খেলোয়াড়দের প্রতিভা বেশ ভাল। ওদের প্রতি আস্থা রয়েছে। ওদের কাজটা কতটা কঠিন, সে ব্যাপারে আমার ধারণা রয়েছে। কারণ বেশির ভাগ ম্যাচই ভারতের বাইরে খেলা হয়। ফলে ট্রেনিং, কোচ, অত্যাধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার খরচ প্রচুর। কাজটাও বেশ কঠিন। নিজে খেলতাম বলেই এ কথা বলতে পারছি।’’ যোগ করেন, ‘‘সে কারণেই ভারত থেকে পরবর্তী গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী খেলোয়াড় বার করতে গেলে অনেক পথ হাঁটতে হবে। সেই কাজ তরুণ প্রজন্ম করছে। আর ওদের সাহায্য করতে আমি সব সময়ে রাজি।’’ উঠেছে ডেভিস কাপের কথাও। যে প্রসঙ্গে আটলান্টা অলিম্পিক্সে সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জ জয়ী লি বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার প্রতি আমার আস্থা সব সময়েই। এখন দলের যে অক্রীড়ক অধিনায়ক, সেই রোহিত রাজপাল আমার জীবনের প্রথম ডেভিস কাপ ম্যাচের সময় দলে ছিল। ওর নেতৃত্বেই জীবনের শেষ ডেভিস কাপ ম্যাচটা খেলেছি দু’বছর আগে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। ও আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। ওকে বলে দিয়েছি। ভাল করার কোনও সমাপ্তি নেই। আরও ভাল
করতে হবে।’’ বাবা ডা. ভেস পেজের জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর থেকেই সিসিএফসি ক্লাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই অভিনব ক্রিকেট ম্যাচ। যেখানে কলকাতার চিকিৎসক একাদশ এবং ভেস পেজ একাদশ মুখোমুখি হয়। বাবার দলেই এ দিন ক্রিকেট ম্যাচ খেললেন লিয়েন্ডার। তাঁর দলে ছিলেন ইউসুফ পাঠানও।