ব্যাট হাতে ফের ব্যর্থ কোহালি।
সকাল থেকে গ্যালারিতে উঠছিল ‘কোহালি... কোহালি...’ ধ্বনি। লাঞ্চের আগেও যখন মাঠে তাঁর দেখা পাওয়া গেল না, তখন গ্যালারিতে আকুতি শোনা গেল, ‘ঝলক দিখলা যা’।
বিরাট কোহালি অবশ্য ঝলকই দেখালেন। ইস্পাত-কঠিন জেদ আর ডান কাঁধে চওড়া স্ট্র্যাপ নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ভারত অধিনায়ক। ৩৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ২৩ বলে ছ’রান করে স্লিপে বিপক্ষের অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেললেন। যখন ফিরে যাচ্ছেন, গোটা স্টেডিয়ামে শ্মশানের স্তব্ধতা।
জেএসসিএ স্টেডিয়ামে যখন এই নৈঃশব্দ, তখন কোহালির এই আউট নিয়ে হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠল। ভারত অধিনায়কের ক্যাচ নিয়ে উল্লসিত অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের একটা ছবি ছড়িয়ে পড়ল ইন্টারনেটে, যা দেখে মনে হচ্ছিল স্মিথ নিজের কাঁধে হাত ঘষতে ঘষতে কোহালির চোট নিয়ে বিদ্রুপ করছেন।
কোহালির চোট নিয়ে ঠাট্টা করছেন স্মিথ?— এমনই প্রশ্ন তুলে টুইটার, ফেসবুকে গর্জে ওঠেন কোহালিভক্তরা। স্মিথকে আক্রমণও শুরু হয়। এমনকী সম্প্রচারকারী টিভি চ্যানেলে ধারাভাষ্যকারদেরও কেউ কেউ বলে বসেন, স্মিথ যা করেছে, তা ‘দুর্ভাগ্যজনক’।
দাবানলের মতো এই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ার কিছু পরেই অবশ্য আসল ছবিটা প্রকাশ পায়। যেখানে দেখা যায়, স্মিথের কাঁধে যে হাত নিয়ে এত হইচই, তা তাঁর নয়, এক সতীর্থের। অভিযোগ ওঠে বিকৃত ছবিটা প্রথম প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার এক টিভি চ্যানেল। সত্যিটা জেনে ধারাভাষ্যকাররাও দুঃখপ্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ধোনিদের হারিয়ে বিজয় হাজারের ফাইনালে বাংলা
কিন্তু বিতর্ক এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। কোহালিকে স্মিথ নকল না করলেও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যে করেছেন, তা আরও একটা ছবিতে ধরা পড়েছে। ডাইভ দিয়ে বাউন্ডারি বাঁচিয়ে উঠে হাসতে হাসতে কাঁধে হাত ঘষছেন ম্যাক্সওয়েল। এই দৃশ্য ফের বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। কাঠগড়ায় তোলা হয় ম্যাক্সওয়েলকে।
অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া আবার পাল্টা আক্রমণ করেন কোহালিকে। অভিযোগ, চেতেশ্বর পূজারার বিরুদ্ধে স্মিথদের রিভিউ বাতিল হওয়া দেখে কোহালি ড্রেসিংরুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাততালি দেন ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অস্ট্রেলিয়ার এক ক্রিকেট ওয়েবসাইট প্রশ্ন তোলে, ‘এটাই বা কোথাকার স্পোর্টসম্যান স্পিরিট?’
এই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকেও কাজিয়া দুই শিবিরের। মুরলী বিজয় বলে দেন, ‘‘ওরা যা করছে, করুক। আমরা ক্রিকেট থেকে ফোকাস সরাচ্ছি না।’’ আর স্মিথদের সহকারী কোচ ডেভিড সাকের বলেন, ‘‘কোহালি কেন হাততালি দিচ্ছিল, জানি না। হয়তো খুশি হয়েই দিচ্ছিল। তবে এই সিরিজে এ রকম অনেক কিছুই হচ্ছে।’’
শনিবার লাঞ্চের পরে কোহালি ক্রিজে আসতেই হেজ্লউডকে বল করতে ডাকেন স্মিথ। ভারত অধিনায়ককে যতটা সম্ভব লেগ সাইডে খেলানো হতে থাকে। কৌশলটা পরিষ্কার, কোহালির কাঁধের উপর আরও চাপ বাড়ানো, যন্ত্রণা বাড়ানো। সাকের বলেন, ‘‘আহত ব্যাটসম্যানকে শর্ট বল দেওয়াটা চালু প্রথা। এটা খেলারই অঙ্গ।’’ নতুন বল হাতে নেওয়ার পরেই কোহালিকে তুলে নেন প্যাট কামিন্স।