ফাইনাল জিতে উল্লাস ইগা শিয়নটেকের। ছবি: রয়টার্স।
গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে অভিজ্ঞতার কতটা গুরুত্ব তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিলেন মহিলাদের এক নম্বর ইগা শিয়নটেক। ফাইনালে ইটালির ইয়াসমিনে পাওলিনিকে দাঁড়াতে দিলেন না তিনি। ৬৭ মিনিটের লড়াই জিতে নিলেন স্ট্রেট সেটে (৬-২, ৬-১)। ফরাসি ওপেনে টানা তিন বার তথা মোট চার বার চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। কেরিয়ারে জিতলেন পঞ্চম গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ওপেন এরায় এত কম ম্যাচে কোনও মহিলা টেনিস খেলোয়াড় পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি।
ফাইনালে নামার আগে পাওলিনির থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন শিয়নটেক। তার প্রধান কারণ, লাল সুরকির কোর্টে দাপট। রলঁ গারোসে এর আগে ৩৬টি ম্যাচের মধ্যে ৩৪টি জিতেছিলেন শিয়নটেক। এ বারের প্রতিযোগিতাতেও সেটা দেখা গিয়েছে। শেষ তিনটি ম্যাচে মাত্র আটটি গেম খুইয়েছিলেন তিনি। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে একমাত্র নাওমি ওসাকার বিরুদ্ধে একটি সেট হেরেছিলেন। সেই কারণেই টেনিস বিশ্লেষকেরা এগিয়ে রেখেছিলেন শিয়নটেককে। সেটাই দেখা গেল। অনভিজ্ঞ পাওলিনি বুঝতেই পারলেন না তাঁকে দিয়ে কী ভাবে একের পর এক ভুল করিয়ে গেলেন শিয়নটেক।
২৮ বছরের পাওলিনি নিজের কেরিয়ারে মাত্র এক বারই ডব্লিউটিএ খেতাব জিতেছেন। এ বারই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল খেলছেন তিনি। তবে ফাইনালের শুরুটা কিন্তু খারাপ করেননি তিনি। প্রথম সেটের তৃতীয় গেমেই শিয়নটেকের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যান। সেটাই হয়তো কাল হল। শিয়নটেক ভাবতে পারেননি, তাঁর সার্ভিস ভেঙে দেবেন পাওলিনি। এই রকম পরিস্থিতিতে সেরারা নিজেদের সেরা খেলা বার করে আনেন। সেটাই করলেন শিয়নটেক। পরের গেমেই বদলা নিলেন পোল্যান্ডের তারকা। সার্ভিস ভাঙলেন পাওলিনির।
সেই শুরু। প্রথম সেটে পরের চারটি গেম জিতলেন শিয়নটেক। আরও দু’বার পাওলিনির সার্ভিস ভাঙলেন তিনি। ৬-২ প্রথম সেট জিতে নেওয়ার পরে যে হুঙ্কার দিলেন তাতেই বোঝা যাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত কী হতে চলেছে। যত সময় গড়াল তত দাপট দেখালেন শিয়নটেক।
গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কোথায় সমস্যা হয় তা বোঝা গেল পাওলিনির খেলা দেখে। যত খেলা গড়াল তত পাওয়ার গেমে চলে গেলেন তিনি। গায়ের জোরে শট মারা শুরু করলেন। ফিলিপে শাঁতিয়ের কোর্টে হাওয়া বইছিল। ফলে এক দিকের কোর্ট থেকে জোরে শট মারলেই তা লাইনের বাইরে গিয়ে পড়ছিল। হাওয়ার গতি অনুযায়ী খেলা বদলাতে পারলেন না। শিয়নটেক লম্বা লম্বা র্যালি খেলতে শুরু করলেন। তাতে আরও বেশি ভুল করলেন তিনি। পোল্যান্ডের খেলোয়াড়ের শটে যে বিষাক্ত স্পিন ছিল তা ধরতে পারলেন না পাওলিনি। এত ভুল করলে কী ভাবে আর ফাইনাল জেতা যায়?
দ্বিতীয় সেটে তো পাওলিনিকে দাঁড়াতেই দিলেন না শিয়নটেক। টানা পাঁচটি গেম জিতলেন। ষষ্ঠ গেমে পাওলিনি নিজের সার্ভিস ধরে রাখলেও তত ক্ষণে খেলার ফল স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সপ্তম গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রেখে তৃতীয় বারের মতো লাল সুরকির রানি হলেন শিয়নটেক।