ট্রফি হাতে বিরাট কোহালি। ছবি: এএফপি।
এখনও পর্যন্ত সেরা সাফল্য।
কিন্তু টি২০তে ব্যাট হাতে ওপেন করে এখনও সাফল্য আসেনি। সিরিজ উইনিং ম্যাচে মাত্র দু’রানেই ফিরে যেতে হয়েছে অধিনায়ককে। আর ম্যাচ জিতলেও সেই প্রশ্নের মুখে যে তাঁকে পড়তে হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তরও দিলেন তিনি। ‘‘আমি যখন আইপিএল-এ বেঙ্গালুরুর হয়ে ওপেন করে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলাম তখন তো কেউ কিছু বলেনি। আর এখন দু’ম্যাচে রান পাইনি তাতে এত সমস্যা হয়ে গেল?’’ পুরোটাই হিন্দিতে বলেন বিরাট। এখানেই শেষ নয়। এর পর বলেন, ‘‘সব যদি আমিই করে দেই তা হলে বাকি ১০ জয় প্লেয়ার কী করবে?’’
আরও খবর: আট রানে আট তুলে সিরিজ ভারতের, জয় এল চহল-বিরাটের হাত ধরে
ইংল্যান্ডকে ঘরের মাটিতে বলে বলে তিন সিরিজে হারিয়ে ফেরত পাঠালেন কোহালি অ্যান্ড ব্রিগেড। তখন এই সব প্রশ্ন অবান্তর। দলের জয়টাই আসল। একমাত্র টি২০ ছাড়া কখনওই মনে হয়নি সিরিজ জিততে পারে ইংল্যান্ড। শুরু টেস্ট দিয়ে। যেখানে দাঁড়াতেই পারেননি কুকরা। এর পর ওয়ান ডের আগে ভারতীয় ক্রিকেটে ঘটে গেল একটা বড় পরিবর্তন। লিমিটেড ওভারের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব হঠাৎ করেই ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ঠিক ওয়ান ডে টিম নির্বাচনের আগের দিন। স্বভাবতই সব দায়িত্ব এসে পড়ল বিরাট কোহালির উপর।
চাহালকে নিয়ে দলের উচ্ছ্বাস।
প্রথম দায়িত্ব নিয়েই লিমিটেড ওভারের ক্রিকেটেও বাজিমাত অধিনায়ক বিরাটের। শেষ ওয়ান ডে ও প্রথম টি২০ ছাড়া ভারতকে পরাস্ত করা যায়নি। এক বারও। আর এই সাফল্যকেই আপাতত সেরা সাফল্য বলে মনে করছেন বিরাট কোহালি। বলেন, ‘‘এই সিরিজ জয় সারা জীবন মনে থাকবে। সেরা দুটো মাস ছিল ভারতীয় দলের। যে ভাবে এগিয়েছে সিরিজ সেভাবেই আলাদা আলাদা ফর্ম্যাটের জন্য প্ল্যান তৈরি হয়েছে।’’ টেস্ট সিরিজে ৪-০ জয়, ওয়ান ডে-তে ২-১এ জয় আর টি২০তে ২-১এ। ভারতীয় ক্রিকেটে এমন দিন খুব কমই এসেছে। এই জয়ের জন্য বিশেষ করে দলের দুই সিনিয়র প্লেয়ার ধোনি ও যুবরাজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কোহালি।
কোহালি বলেন, ‘‘এটা কখনও খারাপ হতে পারে না যখন ধোনির উইকেটের পিছনে রয়েছেন। সঙ্গে আশু ভাই (আশিস নেহরা) ও যুবি পা (যুবরাজ সিংহ)-এর মতো অভিজ্ঞরা দলের সঙ্গে রয়েছেন। আমি লিমিটেড ওভার ক্রিকেটে নতুন। ওরা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খেলছেন। যখনই দরকার হয়েছে ওদের থেকে উপদেশ নিয়েছি। এই জয়ের পিছনে ওদের ভূমিকা অনেক।’’ ধোনিকে আলাদা করে কৃতিত্ব দিয়েছেন নবাগত এই অধিনায়ক। শেষ টি২০তে তাঁর ৫৬ রানের ইনিংস যে কতটা কাজে লেগেছে সেটাও মেনে নিয়েছেন কোহালি। ধোনিকে হঠাৎ করে ব্যাটিংয়ে তুলে আনাটাও যে পরিকল্পনারই অঙ্গ ছিল মেনে নিয়েছেন তিনি। ‘‘আমি সব সময়ই চাইতাম ধোনিকে উপরে পাঠাতে। কিন্তু ও বলেছিল টিমের ভারসাম্যের জন্য ওর পিছনে ব্যাট করা সুবিধে। যখন বড় ম্যাচের কথা এসেছে তখন ওকে উপরে তুলে আনা হয়েছে সে ওয়ান ডে হোক বা টি২০।’’
শুধু ধোনি বা সুরেশ রায়নার ব্যাটই নয় যে ভাবে যুজবেন্দ্র চাহালের বল শেষ কয়েক ওভারে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ডকে সেটা এই ভারতীয় দলের জন্য বড় প্রাপ্তি। ২৫ রানে ছয় উইকেট তুলে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। যখন ক্রিজে টিকে গিয়েছেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। বিরাট বলেন, ‘‘ও জানে এই মাঠের চরিত্র। ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলে। ও জানে এখানে কী ভাবে বল করতে হয়। আমার ওর ওপর বিশ্বাস ছিল, আর ও পুরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেছে। ওর মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।’’
বিরাট মনে করেন খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে দুটো ঘটনা, এক অমিত মিশ্রার দুটো ওভার আর দুই যুবরাজকে জর্ডনের ওভার। জর্ডনের সেই ওভারেই আমরা ২০০ পেড়িয়ে যাই। যেটা মানসিকভাবে ভারতকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিল সেই সময়। বলেন, ‘‘আমরা যেটা ভয়ঙ্কর ভুল করেছিলাম সেটা হল মোক্ষম সময়ে যখন আমরা খুব ভাল করছি তখন দু’উইকেট পড়ে যাওয়া।’’ তবে সেই সমস্যা কাটিয়ে শেষে জয়টাই আসল। যেটা তুলে নিয়েছে ভারত।