মুগ্ধ ভারত অধিনায়ক, বিশ্বকাপ উত্তাল বুম বুম গর্জনে

নেটেও বুমরা ভয়ঙ্কর, ফাঁস করলেন বিরাট

তাঁকে নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়া উত্তাল হলেও বুমরা নিজের পা মাটিতেই রাখতে চান। শিখতে চান যত বেশি সম্ভব।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৯ ০৪:৩৪
Share:

দুরন্ত: বুমরার গতি এবং লাইন-লেংথের সামনে দিশাহারা হাসিম আমলার মতো ব্যাটসম্যানও। ফাইল চিত্র

বিশ্ব জুড়ে ব্যাটসম্যানদের কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছেন তিনি। সচিন তেন্ডুলকর পর্যন্ত বলে দিয়েছেন, তিনিই বিশ্বের এক নম্বর বোলার। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা প্রত্যাশার চাপ পড়তে দিচ্ছেন না নিজের ওপর।

Advertisement

বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে উঠে বিরাট কোহালির এক নম্বর অস্ত্র বলে দেন, ‘‘প্রত্যাশার চাপ নিয়ে আমি কখনও ভাবি না। আমি শুধু দেখি, দল আমার থেকে কী চাইছে। আমি মনে করি না, আমার এমন কিছু সুনাম আছে যার প্রতি সুবিচার করতে হবে। সব কিছু সোজা সরল রাখতে চাই আমি।’’

তাঁকে নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়া উত্তাল হলেও বুমরা নিজের পা মাটিতেই রাখতে চান। শিখতে চান যত বেশি সম্ভব। বুমরা বলেছেন, ‘‘আমি সব সময় চোখ খোলা রাখতে চাই। যাতে সম্ভব হলে নতুন নতুন অস্ত্র যোগ করা যায় নিজের তূণে। শেখার চেষ্টা করলে তো কোনও ক্ষতি নেই। ধরুন, আপনারা যদি আমাকে এমন কোনও বোলার দেখান, যার অ্যাকশন একেবারে নিখুঁত, তা হলে আমি সেই অ্যাকশন অনুকরণ করার চেষ্টা করব।’’

Advertisement

বিরাট কোহালিও মুগ্ধ তাঁর সেরা বোলারের পারফরম্যান্সে। ভারত অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘বুমরা মনে করে, বোলার পিচ থেকে সাহায্য পাক না পাক, গুডলেংথ স্পটে বলটা ফেলতে পারলে ব্যাটসম্যান সমস্যায় পড়বে। বুমরা এখন দুরন্ত ছন্দে বল করছে। ব্যাটসম্যানরা কিছু বুঝতেই পারছে না ওর বল। হাসিম আমলাকে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ওই ভাবে আউট হতে আমি কখনও দেখিনি।’’ প্রসঙ্গত বুমরার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন আমলা।

বুমরা আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সাফল্যের পিছনে রোজ কতটা পরিশ্রম করতে হয় তাঁকে। ‘‘সবাই দেখতে পায় না যে এর পিছনে কতটা পরিশ্রম রয়েছে। ম্যাচে নামার আগে অনুশীলনে আমি সব ধরনের বোলিং প্র্যাক্টিস করি। তা নতুন বলে বল করাই হোক বা নতুন কোনও ডেলিভারিই হোক। প্রস্তুতিটা নিখুঁত হলে বাকি থাকে মাঠে নেমে সেটা কাজে লাগানো।’’

বুমরা নেটে কতটা পরিশ্রম করেন, সেটা বোঝা যায় স্বয়ং অধিনায়ক কোহালির কথায়। কোহালি পরিষ্কার জানিয়েছেন, ম্যাচের মতো নেটেও ভয়ঙ্কর বুমরা। ‘‘বুমরার বিরুদ্ধে খেলতে হলে নিখুঁত টেকনিক আর ভাল ক্রিকেটীয় শট খেলতে হবে। ও যদি বুঝে যায় এক জন ব্যাটসম্যানের কোনও একটা বিশেষ ডেলিভারি খেলতে সমস্যা হচ্ছে, তা হলে সেই বলটাই করে যাবে। যেমন, কোনও ব্যাটসম্যান যদি নেটে শর্ট বলে অস্বস্তিতে পড়ে, তা হলে সেই বলটাই ও টানা করবে,’’ বলেছেন কোহালি। পাশাপাশি ভারত অধিনায়ক এও বলেন, ‘‘বুমরাকে ম্যাচে যেমন গতি আর তীব্রতার সঙ্গে বল করতে দেখেন, নেটেও ও একই ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে বল করে। ও মাথায় রাখে না, উল্টো দিকে কে দাঁড়িয়ে আছে। বুমরা নেটেও ব্যাটসম্যানদের বাউন্সার দেবে, বোল্ড করার চেষ্টা করবে আবার নতুন বলে ইয়র্কারও দেবে।’’

একের পর এক ম্যাচে বুমরার এমন ধারাবাহিক ভাল বোলিংয়ের রহস্যটা কী, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। কোহালি পরিষ্কার বলছেন, ‘‘বুমরা ওর খেলাটা বদলানোর চেষ্টা করে না। নেটে যে রকম বল করে, ম্যাচে গিয়েও সে রকমই করে। এটাই ওর ধারাবাহিকতার কারণ।’’

নেটে যে শুধু নিজের বোলিংকেই ধারালো করেন বুমরা, তা নয়। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদেরও তৈরি করে দেন ম্যাচে নেমে ফাস্ট বোলারদের খেলার জন্য। কোহালি নিজেই বলেছেন, ‘‘নেটে আমরা এমন এক জন বোলারের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পেয়েছি, যে ম্যাচের মতোই নিজেকে নিংড়ে দিয়ে নেটে বল করে। এ রকম এক জন বোলারের বিরুদ্ধে অনুশীলন করে আপনি যখন ম্যাচ খেলতে নামবেন, আত্মবিশ্বাস এমনিতেই বেড়ে যাবে।’’

দলের এই তরুণ পেস-অস্ত্রকে নিয়ে কোহালি আরও বলে দিচ্ছেন, ‘‘সফল হতে গেলে যে মানসিকতা থাকা দরকার, তা বুমরার মধ্যে আছে। বিশ্বকাপে বুমরা খুব বড় তাস হতে চলেছে আমাদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement