ইডেনে ডিপ মিড উইকেটে হাফিজের অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে সৌম্য স্তুতি। অবিশ্বাস্য ওই অ্যাক্রোবেটিক ক্যাচে সর্বকালের অন্যাতম সেরা ফিল্ডার জন্টি রোডস পর্যন্ত হয়েছেন বিস্মিত। ক্যাচটির প্রশংসা করেছেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তী ব্রায়ান লারা। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে চারটি ক্যাচ নিয়ে ভারতের মহম্মদ কাইফ এবং পাকিস্তানের ওমর আকমলের সঙ্গে যৌথ ভাবে রেকর্ড করে ফেলেছেন আগেই। তাই হাফিজকে অবিশ্বাস্য ক্যাচে বন্দি করাকে নিজের দায়িত্ব বলেই করছেন মনে ডিপ ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফিল্ডার। বললেন, “ফিল্ডিংয়ে যখন থাকি তখন চেষ্টা করি ভাল কিছু করার। এমন কিছু করতে চাই, যা সবাই দেখবে, প্রশংসা করবে। চেষ্টা করেছি ভাল ফিল্ডিং করার, ভাল ক্যাচ নেওয়ার। ওইরকম সুযোগ সে দিন পেয়েছিলাম। ক্যাচটা নিতে পেরে ভাল লেগেছে। শুনলাম জন্টি রোডসও নাকি ওই ক্যাচ নিয়ে প্রশংসা করেছেন। আমি অভিভূত।”
তবে প্রধান পরিচয়টা যার ব্যাটসম্যান, সেই সৌম্যকে যে বড়ই অচেনা মনে হচ্ছে টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে। ভাল ফিল্ডারের পরিচয়টা তাঁর মূখ্য নয়। আগে তাঁর পরিচয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। এবং আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। কিন্তু ২০১৫ বিশ্বকাপের সৌম্যর সঙ্গে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপের সৌম্যকে মেলানো যাচ্ছে না। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কৃতিত্বপূর্ন জয়ে মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরি কিংবা রুবেল হোসেনের বোলিং বেশি বাহবা পেলেও ওই ম্যাচে সৌম্যর শুরুটাই যে ম্যাচে বড় স্কোরের পথ সুগম করেছে। স্কোরশিটে ৮/২ থেকে তার আক্রমণাত্মক ৪০-এর হাত ধরে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে সাউদি, বোল্ট ঝড়ে লন্ডভন্ড বাংলাদেশ শুরুতে, ২৭/২ থেকে ওই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ২৮৮/৭ স্কোরের পথটাও দেখিয়েছিল সৌম্যর ৫১ রানের ইনিংসে। ২০১৫ বিশ্বকাপেও প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙ্গে দিতে ভয়ঙ্কর শুরু করেছেন প্রতিটি ম্যাচেই। বিশ্বকাপই শুধু নয়, গত বছর ওয়ানডে ম্যাচে ৬৭২ রানে ( গড় ৫৭.৬৯), পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ( ১২৭ নট আউট) এবং দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে নট আউট ৮৮ ও ৯০ রানের ইনিংসে সিরিজ জয়ে অবদান রেখেছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপে সে ভাবে চেনা যাচ্ছে না তাঁকে। বাংলাদেশের হয়ে যাওয়া ৫ ম্যাচে সৌম্য’র রান ১৫,২০,১২ এবং ০! আউটগুলোও যথেষ্ট হতাশ করছে। ইডেন গার্ডেনে মহম্মদ আমিরের লেন্থ ডেলিভারিতে সৌম্য লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন। ইনিংসের তৃতীয় বলে সৌম্যর ওই আউটটি ব্যাকফুটে এনেছে বাংলাদেশকে। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে সৌম্যকে বড্ড বেমানান মনে হচ্ছে। সর্বশেষ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৮ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই একটিও। এ বছরে ১৩টি টি-২০ ইনিংসে সর্বসাকূল্যে রান তার ২২৭ (গড় ১৭.৪৬)!
ফর্মে ফেরা জরুরী, তার তাগিদ অনুভব করছেন সৌম্য নিজেও। সুপার টেনের অবশিষ্ঠ ম্যাচগুলোতে ফর্মে ফিরে আসতে সংকল্পবদ্ধ সাতক্ষীরার এই ছেলেটি। “সময় একটু খারাপ যাচ্ছে। চেষ্টা করছি ফর্মে ফিরতে। অনুশীলনে বাড়তি সময় দিচ্ছি। ভুলগুলো কোথায় হচ্ছে, বের করার চেষ্টা করছি। আশা করি সামনের ম্যাচগুলোয় রান পাব।”
আরও পড়ুন:
সৌম্য সরকারের প্রশংসায় টুইট করলেন জন্টি