মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ২০৯ তুলেছে দেখে সেই টিমের ভক্তরা দারুণ খুশি হয়ে থাকতে পারেন। আমার কিন্তু তখনই মনে হয়েছিল, চিন্নাস্বামীর উইকেটে এটা ভাল স্কোর ঠিকই। কিন্তু জয় নিশ্চিত করার মতো স্কোর নয়। বিশেষ করে যেখানে রান তাড়া করা টিমটার নাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। যাদের প্রধান তিন ব্যাট ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলি আর এবি ডে’ভিলিয়ার্স।
আর দেখুন, আরসিবি কিন্তু ম্যাচটা বেশ ক্লোজ করে দিয়েছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল এবি আউট হয়ে গেল মানে ওখানেই সব শেষ। কিন্তু তার পরেও ডেভিড ওয়াইস জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল টিমকে। ও যে শেষ পর্যন্ত পারল না, তার কারণ রান তাড়া করতে নেমে আরসিবির জঘন্য, অদ্ভুত শুরু।
একটু বুঝিয়ে বলি। টি-টোয়েন্টিতে একটা টিম যখন ২০৯ তাড়া করতে নামে, তখন তাদের হাতে নষ্ট করার মতো সময় একেবারেই থাকে না। তখন অবশ্যই দরকার বড় শট। আর তার চেয়েও বেশি জরুরি বল নষ্ট না করা। যেটা রবিবার করে দেখাল ক্রিস গেইল। ২৪ বলে ১০— কী ব্যাখ্যা হয় এই ইনিংসের? জানি না গেইল কী ভাবছিল। কেন ও ভাবে বলের পর বল নষ্ট করে যাচ্ছিল। টি-টোয়েন্টির পৃথিবীতে একটা নিয়ম খুব পরিষ্কার। তুমি বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে সময় নিয়ে খেলতেই পারো। ভাবতেই পারো যে লাসিথ মালিঙ্গার চারটে ওভার আমি দেখে খেলব। কিন্তু তা হলে বাকি বোলারদের তো মারো! বিপক্ষকে সম্মান দেওয়ার তো একটা সীমা থাকে। আর শুরুতে যদি দেখে খেলো, তা হলে শেষ পর্যন্ত থেকে গেমটা ফিনিশ করে দিয়ে তবে এসো।
গেইল যে চব্বিশটা বল খেলে মাত্র দশ করল, তাতে বাকিদের উপর চাপটা কেমন হল বুঝতে পারছেন? এ দিকে ওর দেশেরই আন্দ্রে রাসেল কী সুন্দর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কেকেআরকে শনিবার জিতিয়ে দিল। পরে তো ও বললও যে, চার-ছয় মারছিল যাতে ও আউট হয়ে গেলেও বাকিদের উপর চাপটা অত বেশি না হয়। সেখানে গেইল জানত যে ও ফিরে গেলেও ওর টিমে একটা এবি ডে’ভিলিয়ার্স আছে। তা হলে খুলে খেলল না কেন? গেইলের আর একটা সমস্যা হল, ও বেশি সিঙ্গলস নেয় না। তাতে যে দিন ও শট পায় না, সে দিন নিজের উপর চাপটা তো বাড়িয়ে তোলেই, উল্টো দিকের ব্যাটসম্যানের উপরেও বাড়তি চাপ তৈরি করে।
এ রকম ম্যাচে গেমপ্ল্যানটা হওয়া উচিত যে, বিপক্ষ যেন আমার টিমকে নিয়ন্ত্রণ না করে। কিন্তু আরসিবি কি আদৌ সেই গেমপ্ল্যান নিয়ে খেলছিল? আমার তো মাথায় ঢুকল না ওরা কী ভেবে নেমেছিল। কমেন্ট্রি করছিলাম বলে আরও স্পষ্ট ভাবে দেখলাম যে, গেইল যে শটটা খেলে আউট হল সেটা ও খেলতে চায়নি। কিন্তু চাপের জন্য খেলতেই হল। গেইলের মতো ব্যাটসম্যান যেখানে বোলারদের এ ভাবে মাথায় উঠতে দেয়, তা হলে কী ভাবে ম্যাচের রাশ আরসিবির হাতে থাকবে?
রবিবারের পর কোহলি নিয়েও নিশ্চয়ই প্রচুর সমালোচনা হবে। ওর ব্যাটিং স্লট নিয়ে বলব, গেইলের সঙ্গে ওপেন না করে তিনে নামাই ওর জন্য ভাল। বিরাট শুরু থেকে বড় শট মারে না, তাই গেইলের সঙ্গে ব্যাট করতে ওর হয়তো অসুবিধে হচ্ছে। কিন্তু মনে হয় না বিরাট ব্যক্তিগত ভাবে বাড়তি চাপে রয়েছে। আরে, এটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। যেখানে তুমি যত বড় নামই হও, ভাল না খেললে ও সবের দাম থাকে না। আর রাজস্থান বা পঞ্জাবের তুলনায় মুম্বই-আরসিবিতে প্রত্যাশার চাপটা আরও বেশি, কারণ এদের কাছ থেকে জয় ছাড়া কিছু আশা করা হয় না। এটাই কর্পোরেট সংস্কৃতি!
পোলার্ডের অভিনব প্রতিবাদ
সংবাদ সংস্থা • বেঙ্গালুরু
মুখে সেলোটেপ কায়রন পোলার্ডের। রবিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে লড়াই চলছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারকে এ ভাবে দেখে কেউই প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনেও বারবার পোলার্ডকে এ ভাবে দেখানো হচ্ছিল। যা দেখে মুচকি হাসি ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ডাগ আউটে তাঁর সতীর্থদের। কিছুক্ষণ পরই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়। মাঠে আরসিবির ক্যারিবিয়ান সতীর্থ ক্রিস গেইলের সঙ্গে ঝামেলার জেরে যে ঘটনার সূত্রপাত। আরসিবির ইনিংসের তৃতীয় ওভারে গেইলের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন পোলার্ড। এর পর ঝামেলা থামিয়ে দুই ফিল্ড আম্পায়ার তাঁকে সতর্ক করলে ডাগ আউটে চলে যান পোলার্ড। ফিরে আসেন মুখে সেলোটেপ নিয়ে। আম্পায়াররা সতর্ক করায় তিনি রুষ্ট হয়েছেন সেটা বোঝাতে।