মহেন্দ্র সিংহ ধোনি-কে আর ফিনিশার বলা যায় কি না, এই নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, সেই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসছেন আর এক ক্রিকেটার। তিনি হার্দিক পাণ্ড্য। যিনি বলছেন, ম্যাচ শেষ করে আসার কাজটা এখন থেকে করার চেষ্টা করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জামাইকায় শেষ ওয়ান ডে। তার আগে হার্দিকের সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে অ্যান্টিগার হার নিয়ে। যেখানে তিনি আর ধোনি উইকেটে জমে গিয়েও ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। যা নিয়ে হার্দিক বলছেন, ‘‘আমরা যখন ব্যাট করছিলাম, তখন ঠিক করে নিই, যতদূর পারি ইনিংস টেনে নিয়ে যাব। আমরা জানতাম, আমাদের যা ক্ষমতা, তাতে শেষ দিকে বড় আস্কিং রেটও তুলে দেওয়া যাবে। বেশিরভাগ দিনই আমরা ২৯ বলে ৩১ রান তুলে দিতে পারি, কিন্তু সে দিন হয়নি।’’
এর পরেই হার্দিক শোনাচ্ছেন নিজের সংকল্পের কথা। বলছেন, ‘‘আমার নিজের ওপর আস্থা আছে, ম্যাচ শেষ করে আসতে পারব। আমি সেই কাজটা করতে চাই। এ সব কিছু থেকেই আমি শিক্ষা নিতে চাই।’’
যে সিরিজ ভারতের হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল, তা এখন জিততে গেলে জামাইকায় হারলে চলবে না ভারতের। ২-১ এগিয়ে থাকার কারণে ম্যাচের ফয়সালা না হলেও সিরিজ জিতবে ভারত। এই অবস্থায় হার্দিক বলছেন, ‘‘আমরা শেষ ওয়ান ডে-তে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চাই। শেষ ম্যাচটায় আমরা ক্লিক করিনি ঠিকই, কিন্তু তাতে কোনও চাপ নেই। আমরা মাঠে নেমে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলব। তা হলেই আমরা সেরাটা দিতে পারব।’’
আরও পড়ুন: কোচের দৌঁড়ে সব দিকেই এগিয়ে রবি
হার্দিক মানেই স্বাভাবিক ভাবে উঠে আসবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের প্রসঙ্গ। যেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ইনিংস খেলার সময় রবীন্দ্র জাডেজার ভুলে রান আউট হয়ে যান হার্দিক। যা নিয়ে তাঁকে মেজাজ হারাতেও দেখা যায়। যে প্রসঙ্গ উঠতে এখন হার্দিক বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, মানছি আমি ওই সময় মাথায় গরম করে ফেলেছিলাম। কিন্তু ঘটনাটা ঝেড়ে ফেলতে খুব বেশি সময় লাগেনি। মিনিট তিনেকের মধ্যে সব ভুলে গিয়েছিলাম।’’ হার্দিক আরও বলছেন, ‘‘ওই সময় মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাথা গরম হয়ে গেলেও কয়েক মিনিটের সব ঠিক হয়ে যায়। ড্রেসিংরুমে ফিরে আমি হাসতে থাকি। আমাকে দেখে কয়েক জন সতীর্থও হাসতে থাকে।’’
হার্দিক জানাচ্ছেন, ক্যারিবিয়ানে কী ধরনের পরিবেশ পাওয়া যাবে বা কী রকমের পিচ হতে পারে, তা এখানে আসার আগেই মোটামুটি জেনে গিয়েছিলেন তিনি। সৌজন্যে কায়রন পোলার্ড। হার্দিক বলছিলেন, ‘‘আমি পোলার্ড এবং লেন্ডল সিমন্সের খুব ভাল বন্ধু। ক্যারিবিয়ানে আসার আগে আমি প্রথম ফোনটা করেছিলাম পোলার্ডকে। ওকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পিচ এবং পরিবেশ নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। ওরা দু’জনে আমার ভাইয়ের মতো। খুব ভাল হতো ওরা যদি ওয়ান ডে টিমটায় থাকত। তা হলে ওদের বিরুদ্ধে খেলে বেশ মজা হতো।’’ ওয়ান ডে সিরিজে সেই সুযোগ না পেলেও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পোলার্ডের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবেন হার্দিক। যে টিমে রয়েছেন ক্রিস গেইল, সুনীল নারাইনও।
আইপিএলে প্রথম নজর কেড়েছিলেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পরে হার্দিক এখন ভারতেরও অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন। যা নিয়ে হার্দিক বলছেন, ‘‘যে ভাবে সব কিছু এগোচ্ছে, তাতে আমি খুশি। আমি যে কোনও পরিস্থিতিতে খেলার জন্য তৈরি। আমি নিজেকে এক জন সত্যিকারের অলরাউন্ডার হিসেবে দেখি। ব্যাটিং বা বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে নয়।’’
আগ্রাসী হলেও পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করতে পারেন হার্দিক। সে জন্য তিনি কৃতিত্ব বিরাট কোহালির কাছে। ‘‘বিরাট আমাকে অনেক ভাবে সাহায্য করেছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একবার ৪৩ বলে ৪০ করে ম্যাচ জেতানোর পরে বিরাট বলেছিল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হল কপি-পেস্টের মতো ব্যাপার। প্রয়োজনে বার বার একই কাজ করতে হবে,’’ বলেছেন ভারতের নতুন অলরাউন্ডার।