ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট সম্পর্ক নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মধ্যে নতুন করে বোমা ফাটালেন পাকিস্তানের অফস্পিনার সইদ আজমল। পরিষ্কার বলে দিলেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং হরভজন সিংহ দু’জনেই চাকার। দু’জনেই বল ছোড়েন। এখানেই শেষ নয়। আইসিসি-কেও একহাত নিয়ে আজমল বলেছেন, ভারতীয় বলেই অশ্বিনরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন। আর পাকিস্তানি হলেই তাঁদের চাকিংয়ের জন্য ডাকছেন আম্পায়াররা।
আজমলের এই বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার পাক টিভি-তে দেখানোর পরই ভারতীয় ক্রিকেট মহল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। আজমলের অভিযোগ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ভারতের কিংবদন্তি স্পিনাররা। স্বর্ণযুগের দুই স্পিনার এরাপল্লি প্রসন্ন এবং বিষেণ সিংহ বেদী উড়িয়ে দিচ্ছেন আজমলের অভিযোগকে। বলছেন, আজমল চরম হতাশার শিকার হয়ে এ সব বলছেন।
ঠিক কী বলেছেন আজমল?
আজমলের অভিযোগনামা যথাক্রমে এ রকম:
‘‘হরভজন এবং অশ্বিন দু’জনেই ১৫ ডিগ্রির বেশি কনুই ভাঙে। কিন্তু ওদের অ্যাকশনের উপর সে রকম ভাবে নজর রাখা হয় না।’’
‘‘হরভজন যদি ষাটটা বল করে, তা হলে ষাটটা বলই অবৈধ। ও যদি ৪০০-৪৫০ উইকেট পায়, তা হলে সব ক’টাই ছুড়ে পেয়েছে।’’
‘‘অশ্বিন মাঝে মাঝে ঠিক ঠাক বল করে। মাঝে মাঝে বল ছোড়ে।’’
‘‘বছরের পর বছর চাকিং করে এলেও ওদের ধরা হয় না।’’
আজমলের এই অভিযোগ শোনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন প্রসন্ন। মঙ্গলবার ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘চরম হতাশার শিকার হয়ে আজমল এ সব বলছে। আইসিসি তো অশ্বিন-হরভজনকে নিয়ে একটা কথাও বলেনি। আজমলের এখন অনেক কিছু মনে হচ্ছে। আসলে চাকিংয়ের অভিযোগে দীর্ঘ দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকলে লোকে এ রকম কথা বলে। সস্তা প্রচার পেতে চাইছে ও।’’ একটু থেমে প্রসন্ন যোগ করলেন, ‘‘সত্যি বলতে কী, আজমলের এই অভিযোগগুলো শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি।’’
বেদী তো এই বিতর্কে ঢুকে সময় নষ্ট করতেই চাইছেন না। বলছেন, ‘‘এ সব ফালতু জিনিসের মধ্যে আমাকে আর ঢোকাবেন না। কী আর বলব। আজমল যে এত কথা বলছে, ও নিজে কী?’’
শুধু ক্রিকেট মহলেই নয়, ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কেউ কেউ আজমলের পাশে দাঁড়ালেও অনেকেরই বক্তব্য, অনেক দিন প্রচারের বাইরে থাকলে মিডিয়ার নজরে আসার একটা সোজা রাস্তা আছে। কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের উদ্দেশে বিতর্কমূলক কিছু কথা বলো। পাকিস্তানের যে টিভি সাংবাদিক সাক্ষাৎকারটা নিয়েছিলেন, তিনিও টুইট করেছেন, আজমলকে এতটা হতাশ হতে কোনও দিন দেখিনি। তবে, এ দিন গভীর রাত পর্যন্ত ভারতীয় বোর্ডের তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চাকিংয়ের অভিযোগে আইসিসির কোপে পড়েছিলেন আজমল। এখন তিনি জাতীয় দলের বাইরেই আছেন। এবং জানিয়েছেন, আগামী বছরই হয়তো টেস্ট থেকে তিনি অবসর নিতে পারেন।
আজমল শেষ বোমাটা ফাটিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট আর আইসিসি-কে কাঠগড়ায় তুলে। বলে দিয়েছেন, ‘‘ভারতীয়রা বল ছুড়লে পার পেয়ে যায়। আর পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন। বিলাল আসিফ পাঁচ উইকেট পেল একটা ম্যাচে আর পরের ম্যাচেই আম্পায়াররা চাকিংয়ের জন্য নো বল ডাকল। আইসিসি যদি কোনও নিয়ম তৈরি করে, তা হলে সব দেশের ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম মেনে চলা উচিত।’’