দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রস্তুতি শুরু। বেঙ্গালুরু ক্যাম্পে চলে এলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও বিরাট কোহলি।
গুরকিরত সিংহ মান আর শ্রীনাথ অরবিন্দ— ভারতীয় দলের এই নতুন দুইকে নিয়ে দেখছি, প্রচুর আলোচনা চলছে। আমাদের, মানে দেশের ক্রিকেট-সার্কিটের কাছে গুরকিরতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ওয়ান ডে টিমে ঢুকে পড়াটা আশ্চর্যের কিছু নয়। ও যা খেলছিল, তাতে এর পর ওকে টিমে না নিলেই অন্যায় হত। অরবিন্দকে নিয়ে সেখানে কেউ কেউ অবাক হচ্ছে। বলছে, ছেলেটাকে নিল ঠিকই, কিন্তু ওকে ব্যবহার কী ভাবে করা হবে?
দু’জনের মধ্যে পরে আমি অরবিন্দ নিয়ে ঢুকছি। গুরকিরত নিয়ে আগে একটু বলে নিই। হাসিখুশি পঞ্জাবপুত্তর বলতে যা বোঝায়, ও কিন্তু তাই। সব সময় হইহল্লা করছে। গান-বাজনা করছে। আবার সিরিয়াসলি ক্রিকেটটাও খেলছে। শুনেছি ছোটবেলায় মোহালিতে গিয়ে ও বসে থাকত। ক্রিকেটারদের প্র্যাকটিস দেখত। যেখান থেকে ওর ক্রিকেটের প্রতি টানটা জন্মায়। আর এখন তো পঞ্জাব ব্যাটিং লাইন আপের এক নম্বর লোক ও। গত বার রঞ্জিতে পরপর হাফসেঞ্চুরি করল কয়েকটা। প্রথমে তিন নম্বরে ব্যাট করত ও। পরে বুঝল যে, শুধু একটা স্লট নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। ফ্লেক্সিবল হতে হবে। ও যে খেলাটা খেলে তাতে লোয়ার মিডল অর্ডারটা ওর জন্য সেরা। সেঞ্চুরি করবে না। কিন্তু ষাট-সত্তর করে চলে যাবে। আবার বল হাতেও তিনটে উইকেট তুলে নেবে। সোজাসুজি বললে, ওকে কিছুতেই ‘ব্যাটসম্যান হু ক্যান বোল’ তালিকায় ফেলা যাবে না। ওর ব্যাটিং যতটা ভাল। ততটা অফস্পিনও।
ভারত ‘এ’-র হয়ে ওর পারফরম্যান্স দেখলেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’-র বিরুদ্ধে ফাইনালে তো ও-ই ৮৭ রান করে জিতিয়ে দিল টিমকে। তা-ও যখন ভারত ‘এ’ ২২৭ তাড়া করতে গিয়ে ৮২-৪ হয়ে গিয়েছে। আবার দু’তিন দিন আগে বাংলাদেশ ‘এ’-র বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট তুলেছে। ওকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে টিমে রাখা হয়েছে। কিন্তু ও যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে শেষ পর্যন্ত ঢুকে পড়ে, অবাক হব না। স্টুয়ার্ট বিনির সঙ্গে লোয়ার মিডল অর্ডারে ওর লড়াই চলতে পারে। আরও একটা ব্যাপার আছে। গুরকিরত সিংহ মান দুর্ধর্ষ ফিল্ডার। আইপিএলে ওর রস টেলরের একটা ক্যাচ নিয়ে তো আজও কথা হয়।
শ্রীনাথ অরিবন্দ ছেলেটাও কম আকর্ষণীয় নয়। এমনিতে ও বাঁ হাতি সিমার। কিন্তু ক’জন জানে যে, বল পুরনো হলে ও স্পিন বোলিংও করে দিতে পারে! এমএসকে যতটুকু চিনি, ও বরবারই টি-টোয়েন্টিতে একজন বাঁ হাতি সিমার চেয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ‘এ’-র বিরুদ্ধে ও সে দিন ভাল বলও করল। তিনটে উইকেট নিল। আসলে টি-টোয়েন্টিতে যদি একজন বাঁ হাতি সিমার থাকে, তা হলে বৈচিত্র বেড়ে যায়। অরবিন্দ যদি ডে’ভিলিয়ার্সদের বিরুদ্ধে ভাল করে তা হলে ওকেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ভাবা যেতেই পারে। মোহিত শর্মা বা ভুবনেশ্বর কুমারের মধ্যে একজনকে খেলিয়ে, ওকে নামিয়ে দেখা যেতেই পারে। তা হলে পেস আক্রমণে বৈচিত্র আরও বাড়তে পারে।