কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম।
আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো গড়তে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সোমবার স্টেডিয়াম কমিটির জরুরি বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
স্টেডিয়াম কমিটির একাংশের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতানৈক্যও হয়েছিল। আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য আগে থেকেই এর বিরোধিতা করেছিলেন। তবে এ দিন বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয় ভবিষ্যতে জাতীয়, আন্তর্জাতিক মানের খেলা করাতে স্টেডিয়ামে পরিকাঠামো উন্নয়ন দরকার। কিন্তু স্টেডিয়াম সরকারের হাতে তুলে না-দিলে সেই কাজ করা যাবে না বলে জানানো হয়। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত।
ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘ক্রীড়া দফতরের তরফে আমরা আগেও বলেছি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম রাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক মানের করে সাজিয়ে তুলতে চায়। ওই কাজের জন্য টাকার কোনও সমস্যা হবে না। কেবল রাজ্য সরকারের হাতে স্টেডিয়ামটি তুলে দিতে হবে। স্টেডিয়াম কমিটি তা তুলে দিলে সেই কাজ করবে ক্রীড়া দফতর।’’
অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য ফিফার নির্দেশে কলকাতার যুবভারতীয় স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলেছিল রাজ্য সরকারই। এক দিনের নোটিসে সেখানে সেমিফাইনালের মতো ম্যাচ আয়োজন করতে সফল হওয়ায় ফিফা কর্তাদের প্রশংসাও মিলেছে। তাই ক্রীড়া দফতরের দাবি, আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম গড়ার অভিজ্ঞতা যেহেতু রয়েছে, তাই কাঞ্চনজঙ্ঘার ভোলবদলে অ়সুবিধে হবে না।
অশোকবাবু অবশ্য এ দিন বৈঠকে ছিলেন না। তিনি পরে বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের পক্ষে আমি নই। এই স্টেডিয়াম গড়ার পিছনে একটি আন্দোলন রয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম কমিটি নামে যে সোসাইটির অধীনে এটি রয়েছে তেমনই থাকা উচিত। প্রয়োজনে মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ যু্ক্ত করে তাদের হাতে রাখা যেতে পারে। কিন্তু কোনও ভাবেই সরাসরি সরকারের হাতে যাওয়া উচিত নয়।’’ মেয়রের দাবি, সোসাইটি বা ক্রীড়া পরিষদের হাতে রেখে সরকার এখানে আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো গড়ে তুলুক।
এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্টেডিয়াম কমিটির সম্পাদক তথা মহকুমাশাসক সিরাজ দানেশ্বর, শিলিগুড়ির পূর্ত দফতরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের প্রতিনিধি, অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে কৃষ্ণ পাল, জয়দীপ নন্দী, ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপ রতন ঘোষ, আমন্ত্রিত সদস্যদের মধ্যে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার, সৌমিত্র কুণ্ডু, শিলিগুড়ি রেফারি অ্যান্ড আম্পায়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পরিমল ভৌমিক।
বৈঠক শেষে কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো আন্তর্জাতিক মানের করতে না-পারলে ভবিষ্যতে বড় খেলা করানো সম্ভব হবে না। এ দিন বৈঠকে সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে এই স্টেডিয়াম রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’