পোলিশ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন ঋতুপর্ণা দাস। —নিজস্ব চিত্র
পিভি সিন্ধুর পর হায়দরাবাদের গোপীচন্দ অ্যাকাডেমিতে আর একটি বড় সাফল্য এল বাংলার ঋতুপর্ণা দাসের হাত ধরে। রবিবার ঋতুপর্ণা পোলিশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হলেন ভারতেরই রাসিকা রাজেকে ১১-২১, ২১-৭, ২১-১৭ হারিয়ে।
পোল্যান্ডের বাইরুরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে হলদিয়ার ঋতুপর্ণা হারান আয়ার্ল্যান্ড, ইউক্রেন, রাশিয়া, স্কটল্যান্ডের প্রতিপক্ষদের। বাঙালি ছাত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ঋতুর ‘কোচ কাম মেন্টর’ গোপীচন্দ। ফোনে ঋতুকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘তোমাকে আরও বড় সাফল্য পেতে হবে।’’ অলিম্পিক্সের আগে দেশের বাইরে একটি প্রতিযোগিতায় চোট পেয়ে রিহ্যাবে ছিলেন হলদিয়ার মেয়ে। সুস্থ হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম প্রতিযোগিতা।
পোল্যান্ড থেকে ফোনে এ দিন ঋতুপর্ণা বলেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে। স্যারের ফোন পেয়ে আরও ভাল লাগছে। সিন্ধুদির অলিম্পিক্সে সাফল্য আমাদের আরও বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছে।’’ উচ্ছ্বসিত হলদিয়ায় ঋতুর পরিবার। তবে মা অনন্যা দাস জানান, বড় মাপের প্রতিযোগিতায় যেতে হলে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তার যোগান দিতে তারা হিমসিম খাচ্ছেন। ভালো স্পনসর পেলে ঋতুর স্বপ্ন সত্যি হবে।
গত পাঁচ বছর হায়দরাবাদের গোপীচন্দ অ্যাকাডেমিতে আছেন ঋতুপর্ণা। সেই ঋতু গত বছর শ্রীলঙ্কার একটি প্রতিযোগিতায় হাঁটুতে চোট পান। পোল্যান্ড যাওয়ার আগে অবশ্য তিনি পুরোদমে অ্যাকাডেমিতে প্র্যাকটিস করেছেন বলে জানালেন। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা, তারপর আবার ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা অবধি। আর বিকেলে ৩টা থেকে টানা ছ’ঘণ্টা।
হলদিয়ার মত ছোট্ট একটা জায়গা থেকে নিজের লড়াই আর জেদকে সম্বল করেই বিশ্বের দরবারে পাড়ি দেন ঋতুপর্ণা। গোপীচন্দ নিজেই তাঁর খেলা দেখে অ্যাকাডেমিতে সুযোগ দিয়েছিলেন। যেখানে পিভি সিন্ধুর মতো দেশের সেরা শাটলারদের খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতাও ঋতুপর্ণার আর একটা বড় প্রাপ্তি। সঙ্গে ‘গোপীস্যার’ তো আছেনই। তবে চোটের ধাক্কা কাটিয়ে প্রথম টুর্নামেন্টে নেমেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চ্যালেঞ্জ সোজা ছিল না।
ঋতুর এই হার না মানা জেদের আর এক বড় প্রেরণা তাঁর বাবা-মা। মা অনন্যা দাসের কথাতেই সেটা পরিষ্কার, ‘‘আমাদের বিশ্বাস ছিল ঋতু চোট সারিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেই। ওকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন রয়েছে।’’
শুধু বাবা-মা কেন, ব্যাডমিন্টনের প্রতিভাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে হলদিয়া। সারা বাংলাও।