গম্ভীর ও ধোনি। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ের দুই রূপকার। —ফাইল চিত্র।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে ভাল নয়, তা দেশের ক্রিকেট খুব ভালই জানে। ভারতের প্রাক্তন ওপেনার গৌতম গম্ভীর আগেও বহুবার আক্রমণ করেছেন ধোনিকে, এ বারও এক সাক্ষাৎকারে তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন দেশের প্রাক্তন অধিনায়ককে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার জন্য গম্ভীর তুলোধনা করেছেন মাহিকে।
শ্রীলঙ্কার ২৭৪ রান তাড়া করতে নেমে এক সময়ে ভারত বীরেন্দ্র সহবাগ ও সচিন তেন্ডুলকরের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। স্কোর বোর্ডে ভারতের রান তখন ৩১। সেই সময়ে ব্যাট করতে নামেন গম্ভীর। ধোনিও ব্যাটিং অর্ডারে নিজেকে উপরের দিকে তুলে আনেন। মাহির সঙ্গে পার্টনারশিপে ১০৯ রান জোড়েন গম্ভীর।
৪২ ওভারে থিসারা পেরেরাকে চালাতে গিয়ে ৯৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। সে দিন কেন সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে হয়েছিল? বহুবার তাঁকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। গম্ভীর অবশেষে কারণ জানালেন। বললেন, “৯৭ রানে ব্যাট করার সময়ে কী হয়েছিল, বহুবার এই প্রশ্নটা আমাকে করা হয়েছিল। ৯৭ রানে পৌঁছনোর আগে ব্যক্তিগত রান নিয়ে আমি মাথাই ঘামাইনি। শ্রীলঙ্কার রান তাড়া করা কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়েই চিন্তাভাবনা করছিলাম। একটা ওভারের পরে ধোনি এগিয়ে এসে আমাকে বলল, আর তিন রান করতে পারলেই তুমি সেঞ্চুরি করে ফেলবে।’’
আরও পড়ুন: ধর্ম বদলেছেন, ঢাকার সেই ঐতিহাসিক স্কোয়াডের অভিমানী ক্রিকেটার থাকছেন ইডেনে
গম্ভীরের দাবি, মাহির সেই কথা শোনার পরে তাঁর ফোকাস নড়ে যায়। ব্যক্তিগত রান নিয়ে সচেতন হয়ে পড়েন। সাক্ষাৎকারে গম্ভীর বলেন, ‘‘যখনই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স, ব্যক্তিগত স্কোর নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করা হয়, তখনই রক্তের গতি বেড়ে যায়। আগে শ্রীলঙ্কার টার্গেট নিয়ে চিন্তাভাবনা করছিলাম। সেটা নিয়েই যদি ভাবনাচিন্তা করতাম, তা হলে হয়তো সেঞ্চুরি করেই ফিরতাম।’’ গম্ভীর আউট হয়ে গেলেও অবশ্য বিশ্বকাপ জিততে সমস্যা হয়নি ভারতের। নুয়ান কুলশেখরাকে গ্যালারিতে ফেলে ধোনি বিশ্বকাপ এনে দেন ২৮ বছর পরে। গম্ভীর বলেন, “৯৭ রানে ব্যাট করার সময়ে আমি বর্তমানেই ছিলাম। যেই মাথায় ঢুকে গেল, আর তিন রান করতে পারলেই সেঞ্চুরি পেয়ে যাব, তখনই আমার ফোকাস নড়ে যায়। সেঞ্চুরি করার তাগিদ অনুভব করতে শুরু করে দিলাম।’’ গম্ভীরের দাবি, আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময়ে নিজের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘বর্তমানে থাকাটা খুবই জরুরি। আউট হয়ে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছিলাম, তখন নিজের মনেই কথা বলছিলাম। বলছিলাম, এই তিন রান সারা জীবন আমাকে সমস্যায় ফেলতে পারে। সত্যি কথা বলতে কী, সেটাই হয়েছে। মানুষ এখনও আমাকে প্রশ্ন করে, সে দিন কেন তিন রান করতে পারলাম না।’’
মুম্বইয়ের সেই ফাইনাল হয়ে গিয়েছে আট বছর। এত দিন পরে গম্ভীর বরফ গলালেন।
আরও পড়ুন: ইডেনে প্রথম গোলাপি বলে দিনরাতের টেস্টই বড় পরীক্ষা, বলছেন সৌরভ