ফুরফুরে: ফাইনাল রবিবার রাতে। এই ছবি দিয়ে নেমারের বার্তা, জিততে হবে।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দেশে আকর্ষণের কেন্দ্রে এখন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) বনাম রবার্ট লেয়নডস্কি দ্বৈরথ। একদিকে অপ্রতিরোধ্য বায়ার্ন মিউনিখ। অন্য দিকে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠা দুরন্ত প্যারিস সাঁ জারমাঁ (পিএসজি)।
লিসবনে খেতাবি লড়াইয়ে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বায়ার্ন ও পিএসজি দুই শিবিরে অদ্ভুত মিল। দু’টি ক্লাবই ত্রিমুকুট জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে। জার্মান বুন্দেশলিগা ও জার্মান কাপ জিতেছেন থোমাস মুলার, স্যাজ ন্যাব্রিরা। ফরাসি লিগ ও ফরাসি কাপে চ্যাম্পিয়ন কিলিয়ান এমবাপেরা। ২০১২-’১৩ মরসুমেও বায়ার্ন ত্রিমুকুট জিতেছিল। পিএসজি-র সামনে এ বারই প্রথম সুযোগ এই নজির গড়ার। নেমারেরা কি পারবেন লক্ষ্য পূরণ করতে? চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মুখোমুখি সাক্ষাতে অবশ্য এগিয়ে পিএসজি। এখনও পর্যন্ত দু’দলের দেখা হয়েছে আট বার। এর মধ্যে পাঁচ বার জিতেছে পিএসজি। তিন বার বায়ার্ন। সব ম্যাচই অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ছিল। এই পরিসংখ্যান ছাড়া সব দিক থেকেই এগিয়ে রয়েছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী বায়ার্ন। আর এই মরসুমের পারফরম্যান্স তো অবিশ্বাস্য।
লিয়োনেল মেসির বার্সেলোনাকে ৮-২ চূর্ণ করেছেন মুলারেরা। শুধু তাই নয়। শেষ দশটি ম্যাচেই জিতেছে বায়ার্ন। এখনও পর্যন্ত গোল করেছে ৪২টি। খেয়েছে মাত্র আটটি। সর্বোচ্চ গোলদাতা লেয়নডস্কি। ১৫টি গোল করে তিনি এখন সি আর সেভেনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক মরসুমে সব চেয়ে বেশি গোল করার নজির রোনাল্ডোর দখলে। তিনি গোল করেছেন ১৭টি। রবিবার লিসবনে তাঁকে ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে লেয়নডস্কির সামনে। শেষ দশটি ম্যাচে নেমারেরা জিতেছেন আটটিতে। হার ও ড্র একটি করে ম্যাচে। পিএসজি গোল করেছে ২৫টি। খেয়েছে পাঁচটি। সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপে (৫)। বায়ার্নের অধিনায়ক গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার তো লিয়ঁ-কে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পরেই বলেছিলেন, ‘‘২০১২-’১৩ মরসুমের চেয়েও আমাদের এই দল অনেক বেশি শক্তিশালী। সকলেই দুর্দান্ত। অসাধারণ দল আমাদের।’’
কিংবদন্তি ফ্রানৎজ বেকেনবাউয়ার কিন্তু সতর্ক। বায়ার্নের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘পিএসজি এমন একটা দল, যাদের হাল্কা ভাবে নিলে কাপ জয়ের স্বপ্ন তছনছ করে দেবে। ওরা ভয়ঙ্কর।’’ কেন? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির সব খেলা আমি দেখেছি। ওদের কোনও দুর্বলতা খুঁজে পাইনি।’’ বায়ার্নের ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা কতটা? বেকেনবাউয়ারের কথায়, ‘‘ফাইনাল সব সময়ই পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। বায়ার্ন যদি নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারে, তা হলে জয় পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘বার্সেলোনার বিরুদ্ধে বায়ার্ন যে ভাবে খেলেছিল, সেমিফাইনালে লিয়ঁ-র বিরুদ্ধে তা চোখে পড়েনি। তবে আমি খুশি।’’ গোলরক্ষক নয়্যারেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘নয়্যার দুর্দান্ত। লিয়ঁ-র বিরুদ্ধে একাধিক নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছে।’’