আনোয়ার আলি। — ফাইল চিত্র।
আনোয়ার আলিকে নিয়ে নতুন করে জট তৈরি হল শুক্রবার। ইস্টবেঙ্গল, দিল্লি এফসি এবং আনোয়ারের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে এ দিনই দিল্লি হাইকোর্টে ছিল শুনানি। সেখানে ফেডারেশনের প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির (পিএসসি) নির্বাসনের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় আদালত। এর পর ইস্টবেঙ্গলে সই করার জন্য আনোয়ারকে যে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) দিয়েছিল পিএসসি, তা-ও বাতিল করে দেওয়া হয়। শনিবার পিএসসি-কে নতুন করে আনোয়ারের আবেদন শোনার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। অর্থাৎ এই মুহূর্তে আনোয়ার ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান কারওরই ফুটবলার নন।
আনোয়ারকে নিয়ে সমস্যা যে সহজে মিটবে না, সেটা বোঝা গিয়েছিল সই করার সময় থেকেই। মোহনবাগানের সঙ্গে একপাক্ষিক ভাবে চুক্তি বিচ্ছিন্ন করে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সই করেছিলেন আনোয়ার। বিষয়টি পিএসসি পর্যন্ত গড়ায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর পিএসসি আনোয়ারকে চার মাস নির্বাসিত করে এবং ইস্টবেঙ্গল, দিল্লি এফসি ও আনোয়ারকে নির্দেশ দেয় মোহনবাগানকে ১২.৯০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। এই রায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল।
এ দিন দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। বিচারপতি ফেডারেশনের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, কোন কোন কারণের উপর ভিত্তি করে পিএসসি নির্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সেগুলি লিখিত আকারে জানানো হয়েছে কি না। আইনজীবী জানান, এখনও কারণগুলি লিখিত আকারে জানানো হয়নি। তখন আদালত জিজ্ঞাসা করে, কোনও কারণ ছাড়াই কী ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
পাশাপাশি, শাস্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল যে পাল্টা আবেদন করতে পারে, সেটিও উল্লেখ করা ছিল না। ফেডারেশনের আইনজীবী তখন জানান, সংস্থার নিয়মেই আছে ১০ দিনের মধ্যে আবেদন করা যায়। তখন আদালত জানায়, এ ক্ষেত্রে ফেডারেশনের আইন নয়, দেশের সংবিধানে যে আইন রয়েছে তা অনুসরণ করতে হবে। তার পরেই পিএসসি-র নির্দেশ বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে সেই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আনোয়ারের খেলায় কোনও বাধা ছিল না। লাল-হলুদ সমর্থকেরা সমাজমাধ্যমে খুশি হয়ে বিভিন্ন বার্তা পোস্ট করতে থাকেন।
তবে পরিস্থিতি বদলে যায় মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরের শুনানিতে। যে এনওসি-র ভিত্তিতে আনোয়ার ইস্টবেঙ্গলে সই করেছিলেন, তা-ও খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালত পিএসসি-কে নির্দেশ দেয় শনিবার গোটা বিষয়টি প্রথম থেকে শুনে তার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্পষ্ট করে তার কারণগুলি লিখিত আকারে উল্লেখ করারও নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
ফিফার আইনে রয়েছে, কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু দিন পরেও সবিস্তার কারণ জানানো যায়। কিন্তু ফিফার এই নিয়ম আদালতে সঠিক ভাবে ফেডারেশনের আইনজীবী তুলে ধরতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে।
অবস্থা যা, তাতে এই মুহূর্তে আনোয়ার ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান কারওরই ফুটবলার নন। আনোয়ার ইতিমধ্যেই মোহনবাগানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। ফলে মোহনবাগান জোর করে আনোয়ারকে খেলাতে পারে না। অন্য দিকে, এনওসি খারিজ হওয়ায় আনোয়ারের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তিও বৈধ নয়। এখন দেখার, শনিবার কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।