ইন্টার মায়ামি ক্লাবে মেসি। ছবি: পিটিআই।
বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা তাঁরা। দু’জনেই কার্যত একক কৃত্বিতে দেশকে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বসেরা হওয়ার নেপথ্যে প্রধান কারিগর ছিলেন জ়িনেদিন জ়িদান। গত বছর প্রায় একই ভাবে কাতারে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন লিয়োনেল মেসি। একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াসরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থার অনুষ্ঠানে একে অপরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন দুই কিংবদন্তি। মেসিকে জাদুকর আখ্যা দিলেন জ়িদান।
‘‘মেসি প্রসঙ্গে একটা শব্দই শুধু বলব— জাদু। ওর সঙ্গে আমার নিয়মিত দেখা হয় না। তাই এই মুহূর্তটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লিয়োকে জানাতে পারব যে, ওকে আমি কত পছন্দ করি,’’ বলেছেন জ়িদান। তিনি যোগ করেছেন, ‘‘বল ধরার আগেই লিয়ো জানে ওকে কী করতে হবে। মানুষ ফুটবলে এটাই দেখতে চায়।’’
জ়িদান ও মেসি একসঙ্গে কখনও খেলেননি। তবে দু’জনের অসংখ্য দ্বৈরথের সাক্ষী থেকেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। জ়িদান যখন রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার ছিলেন, মেসি তখন খেলতেন বার্সেলোনায়। আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তি বলেছেন, ‘‘তুমি এখানে রয়েছো বলেই আমি বলছি না। আগেও বহুবার বলেছি— তুমি আমার খুবই প্রিয়। একসঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হয়নি। তবে আমরা একে অপরের বিপক্ষে কিছু ম্যাচ খেলেছি, তোমার প্রতি আমার সব সময় সম্মান ও মুগ্ধতা ছিল।’’
এখানেই শেষ নয়। আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তি আরও বলেছেন, ‘‘যখন রিয়াল মাদ্রিদে ছিলে, আমি তোমাকে অনুসরণ করতাম। তুমি আমাকে অনেক ভুগিয়েছ। কারণ, আমি বার্সেলোনার হয়ে খেলতাম। আমার কাছে তুমি ইতিহাসের সেরাদের এক জন। তুমি সকলের চেয়ে আলাদা। ভিন্ন, মার্জিত এবং জাদুকরও। তোমার মধ্যে সব কিছু ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লেভারকুসেনের বিপক্ষে তোমার সেই গোলটি আমার মনে আছে। ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে বিশ্বকাপে করা গোলটিও ভুলতে পারিনি।’’
১০ নম্বর জার্সির গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই কিংবদন্তির মধ্যে। দিয়েগো মারাদোনার প্রসঙ্গ টেনে মেসি বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে ১০ নম্বর জার্সি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ১০ নম্বর জার্সির প্রসঙ্গ উঠলে, সবার আগে আসে মারাদোনার নাম। আমরা সকলেই ওঁর মতো হতে চাই। যদিও তা সম্ভব নয়। মারাদোনা এক জনই হয়।’’ আরও বলেছেন, ‘‘আমি মারাদোনার খেলা খুব অল্পই দেখেছি। উনি যখন শেষ ক্লাব হিসেবে নিউওয়েলসে ফিরেছিলেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বা সাত বছর। তাই আমার খুব বেশি মনে নেই। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের কথাও মনে পড়ে না। যদিও পরে ভিডিয়োয় খেলা দেখেছিলাম। মারাদোনা ছিলেন আমাদের আদর্শ। আমাদের জীবন জুড়ে তিনি রয়েছেন ও থাকবেন। আমার সন্তানরা মারাদোনাকে চিনেছে কখনো তাঁকে না দেখেই। ওরা আমার কাছে শুনেছে ও ভিডিয়ো দেখেছে ওর খেলার।’’
জ়িদান এই অনুষ্ঠানেই মেসিকে প্রশ্ন করেছিলেন, কোনও ম্যাচ আবার তিনি খেলতে চান কি না? আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তি বলেছেন, ‘‘ফুটবলজীবন নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কিন্তু ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালের ক্ষত আমার মনে এখনও রয়ে গিয়েছে। যদিও গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই যন্ত্রণা কিছুটা ভুলতে পেরেছি।’’ এই অনুষ্ঠানের পরে অষ্টম বালঁ দ্যর ট্রফি নিয়ে ইন্টার মায়ামি বনাম নিউ ইয়র্ক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে গিয়েছিলেন মেসি। যদিও ১-২ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনা অধিনায়কের ক্লাব।