ত্রাতা: হানামতের বিস্ময় গোল হার বাঁচায় দলের। ফাইল চিত্র।
চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে সংযুক্ত সময়ে তাঁর বিস্ময় গোলেই নাটকীয় ভাবে হার বাঁচিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। অথচ লাল-হলুদের নতুন তারা লালরিনলিয়ানা হানামতের মন খারাপ দল জিততে না পারায়।
আঠারো বছরের হানামতের বাবা-মা দু’জনেই শিক্ষক। চেয়েছিলেন ছেলে লেখাপড়া শিখে প্রতিষ্ঠিত হোক। কিন্তু হানামতের স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হওয়ার। শেষ পর্যন্ত ছেলের ইচ্ছেই মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা। হানামতেকে ভর্তি করে দেন আইজ়লের একটি ফুটবল অ্যাকাডেমিতে। কয়েক দিনের মধ্যেই মিজ়োরাম যুব দলে ডাক পান তিনি। সমস্যা দেখা দেয় পুণে এফসি অনূর্ধ্ব-১৮ আই লিগে খেলার জন্য হানামতেকে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পরে। ছোট ছেলেকে পুণেতে যেতে দিতে একেবারেই রাজি ছিলেন না বাবা-মা। এই যুদ্ধেও শেষ পর্যন্ত জিতলেন সেস ফ্যাব্রেগাস, সুনীল ছেত্রী ও মালসোয়াম টুলঙ্গার (মামা) ভক্ত হানামতে। গত মরসুমে ছিলেন হায়দরাবাদ এফসি-তে। অনুশীলনের পরে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় গোয়া থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে ইস্টবেঙ্গলের হানামতে বলছিলেন, ‘‘মামার উৎসাহেই নানা বাধা সত্ত্বেও ফুটবলার হওয়ার লক্ষ্য থেকে সরে আসিনি। এখনও আমাকে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করেন।’’ যোগ করলেন, ‘‘চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরেই ফোনে অভিনন্দনবার্তা পাঠিয়েছেন মামা। সেই সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন, দ্রুত এই ম্যাচ ভুলে পরের দ্বৈরথের জন্য মনোনিবেশ করতে।’’ নিজেকে কী ভাবে উজ্জীবিত করেন ম্যাচের আগে? হানামতে বললেন, ‘‘ম্যাচের আগে আমার আদর্শ ফ্যাব্রেগাসের খেলার ক্লিপিংস দেখি। এ ছাড়া সুনীল ছেত্রীর গোল করার ভিডিয়োও দেখি।’’
চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে ধনুকের মতো শরীর বেঁকিয়ে হেডে গোল করেছিলেন হানামতে। লক্ষ্যভেদের রহস্য কি বিশেষ অনুশীলনে লুকিয়ে রয়েছে? হানামতে বললেন, ‘‘অনুশীলনে এই ধরনের গোল করার অনুশীলন কখনও করিনি।’’ হাসতে হাসতে যোগ করলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় পোস্টে বলটা রাখা। ভাবিনি গোলে ঢুকে যাবে।’’ ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে আগামী সোমবার। প্রথম পর্বের সাক্ষাতে ৪-৬ গোলে হারের যন্ত্রণা এখনও কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে হানামতের মনে। বললেন, ‘‘আমার পাখির চোখ এখন এই ম্যাচ গোল করে দলকে জেতানো।’’
হানামতেকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত কোচ মারিয়ো রিভেরাও। তাঁর কথায়, ‘‘অসাধারণ গোল করেছে হানামতে। ডার্বিতে গোলের সুযোগ নষ্ট করে হতাশ হয়ে পড়েছিল। আশা করছি, এই গোলটা করে ওর আক্ষেপ দূর হয়েছে। হানামতের বড় গুণ, নিজের খেলায় উন্নতি করার জন্য সব সময় মুখিয়ে থাকে।’’ মারিয়ো প্রশংসা করলেন ফ্রি-কিকে ড্যারেন সিডোয়েলের গোলেরও। বললেন, ‘‘আয়াখ্স আমস্টারডামের যুব দল থেকে উঠে এসেছে ড্যারেন। অনেকেই ওর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আমি আস্থা হারাইনি। অনুশীলনে এই ধরনের গোল বহু বার ড্যারেনকে করতে দেখেছি।’’ এ দিকে বৃহস্পতিবার অনুশীলনে বলবন্ত সিংহের সঙ্গে সংঘর্ষে মুখে চোট পান ফ্রান্সিসকো সোতা।