সুনীল ছেত্রী। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন এশিয়ান গেমসেও সম্ভবত খেলা হবে না সুনীল ছেত্রীদের। গত দু’মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হলেও কেন্দ্রীয় সরকার এশিয়ান গেমসে ভারতীয় ফুটবল দলকে খেলার অনুমতি না-ও দিতে পারে। বাধা হতে পারে ভারতের র্যাঙ্কিং। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা ক্রীড়া মন্ত্রকের কাছে খেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করবে।
এশিয়ান গেমসে অনূর্ধ্ব ২৩ দল যাওয়ার কথা। সেই দলেরও কোচ ইগর স্তিমাচ। সেপ্টেম্বরের শুরুতে থাইল্যান্ডে কিংস কাপের পর তিনি অনূর্ধ্ব ২৩ দল নিয়ে হ্যাংজু যাবেন, এমনই পরিকল্পনা রয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ)। কিন্তু কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক ভারতীয় ফুটবল দলকে ছাড়পত্র না-ও দিতে পারে।
দলগত খেলাগুলির ক্ষেত্রে এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে ক্রমতালিকায় প্রথম আটের মধ্যে থাকলে তবেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক দল পাঠানোর অনুমতি দেয়। এ ছাড়াও দেখা হয় ক্রমতালিকায় শেষ এক বছরের অবস্থান। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের এই নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এবং বিভিন্ন খেলার সর্বভারতীয় সংস্থার কাছে।
কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের এই নির্দেশিকা মানা হলে ভারতের পুরুষ এবং মহিলা ফুটবল দলের এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই। কারণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সুনীলেরা রয়েছেন ১৮ নম্বরে। ভারতের মহিলা দল রয়েছে ১০ নম্বরে। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন খেলার অনুমতি চেয়ে যদি আবেদন করেও তা খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এআইএফএফ-র সেক্রেটারি জেনারেল শাজি প্রভাকরণ বলেছেন, ‘‘সব ক্রীড়া সংস্থার মতো আমরাও দু’দিন আগে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের নির্দেশিকা পেয়েছি। গত এক বছরে এশিয়ার ক্রমতালিকায় আমাদের দুই দলের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে। ক্রমতালিকা অনুযায়ী ভারতের ফুটবল দলের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা কম। নিয়ম মানতেই হবে। তবু আগামী সোমবার আমরা কেন্দ্রের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করব।’’
১৯৫১ এবং ১৯৬২ সালে এশিয়ান গেমসের ফুটবলে সোনা জিতেছিল ভারত। অথচ এখন আর ফুটবল দলকে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র দেয় না কেন্দ্র। পদক জয়ের সম্ভাবনা নেই, এমন কোনও দলকে নীতিগত ভাবে এশিয়ান গেমস বা অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতায় পাঠানোর বিরোধী কেন্দ্র। ২০১৮ সালেও এশিয়ান গেমসে ফুটবল দল পাঠানোর অনুমতি দেয়নি সরকার। গত তিন দশক ধরেই ভারতীয় ফুটবল দলের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হচ্ছে।
কোনও কোনও ক্ষেত্রে যে এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি, তা নয়। সেটাই আশা দিচ্ছে এআইএফএফ কর্তাদের। কারণ, সংশ্লিষ্ট খেলার বিশেষজ্ঞদের এবং স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (সাই) সুপারিশ যুক্তিগ্রাহ্য মনে হলে নির্দেশিকার বাইরে গিয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক অনুমতি দেয়। একাধিক ক্ষেত্রে তেমন উদাহরণ রয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রকের এক আধিকারিকও সে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আপাত ভাবে অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ফুটবলদলগুলি ছাড়পত্র পেয়ে যেতে পারে। তাদের নাম পাঠানো হতে পারে এশিয়ান গেমসের আয়োজকদের কাছে।’’
শনিবার এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন। কল্যাণ আইওএ-র যুগ্ম সচিব এবং সিইও। শাহ তাঁকে ভারতীয় ফুটবলকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এটাই এখন ফেডারেশন কর্তাদের সব থেকে বড় ভরসা। উল্লেখ্য, চিনের হ্যাংজুয়ে এশিয়ান গেমস চলবে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত।