মহম্মদ হাবিব। —ফাইল চিত্র।
৬০ এবং ৭০ দশকের কলকাতা ফুটবলের অন্যতম বড় তারকা মহম্মদ হাবিব। মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসে হায়দরাবাদে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কলকাতার তিন প্রধানেই খেলেছিলেন তিনি। ৭৪ বছর বয়সে প্রয়াত হাবিব।
বেশ কিছু বছর ধরে অ্যালঝেইমার্সে ভুগছিলেন হাবিব। ২০১৯ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। হায়দরাবাদে জন্ম হলেও তাঁর পুরো ফুটবল জীবনই কেটেছে কলকাতায়। ১৯৬৬ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। নবাবের শহরে জন্ম বলে কলকাতা ময়দানে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘বড়ে মিঞা’ নামে। তাঁর ভাই আকবর ছিলেন ‘ছোটে মিঞা’।
ইস্টবেঙ্গলে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত খেলার পর মোহনবাগানে যোগ দিয়েছিলেন হাবিব। ফুটবল জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই ইস্টবেঙ্গলে কাটিয়েছিলেন তিনি। মহমেডানেও খেলেছিলেন। ১৯৮৪ সালে মোহনবাগানের হয়ে খেলে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। মোহনবাগানে ১৯৬৮ সালে খেলার সময় অমল মজুমদারের প্রশিক্ষণে খেলেছিলেন হাবিব।
এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন সৈয়দ নঈমুদ্দিন। সেই দলের অন্যতম স্ট্রাইকার ছিলেন হাবিব। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেই নঈম জানতে পারেন হাবিবের মৃত্যুর কথা। শুনে ভেঙে পড়েন তিনি। নঈম বললেন, “ভারতের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ও কত বড় ফুটবলার ছিল, সেটা সব থেকে ভাল বলতে পারবে, ওর বিরুদ্ধে খেলা ডিফেন্ডারেরা। কখনও লড়াই ছেড়ে পালাত না। ফুটবল নিয়ে যেমন সিরিয়স ছিল, তেমন শৃঙ্খলা মেনে চলত। ওর মৃত্যু ভারতীয় ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি।”
প্রাক্তন ফুটবলার প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন হাবিব তাঁর যোগ্য সম্মান পাননি। পাঁচ বছর একসঙ্গে খেলেছিলেন তাঁরা। প্রসুন বললেন, “ভারতে ফুটবলারদের সঠিক মূল্যায়ন হয় না। কেন্দ্রীয় সরকার হাবিবদাকে অর্জুন পুরস্কার দিয়েছিল। হাবিবদার আরও অনেক বেশি কিছু পাওয়া উচিত ছিল। ভারতের সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের তালিকায় হাবিবদাকে রাখব। পাঁচ বছর একসঙ্গে খেলার সুযোগ হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি। খেলার মাঝেও আমাদের শেখাতেন। দাদা (প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়) রেগে গেলে সেটাও সামাল দিতেন। আমাকে আর বাবলুকে (সুব্রত ভট্টাচার্য) নিজের ভাই আকবরের থেকেও বেশি ভালবাসতেন হাবিবদা।”
এআইএফএফ প্রধান কল্যাণ চৌবে টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন। হাবিবের কোচিংয়ে খেলেছিলেন কল্যাণ। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমিতে কোচ ছিলেন হাবিব। কোচিং করিয়েছিলেন মোহনবাগানেও।