AFC Champions League

Indian referees: এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক ম্যাচে চার ভারতীয় রেফারি, ছিলেন বাংলার প্রাঞ্জলও

বাংলা বা ভারতীয় রেফারিদের মান নিয়ে ওঠে নানা প্রশ্ন। কাঠগড়ায় তোলা হয় তাঁদের ফিটনেসকেও। সেই সব সমালোচনারই জবাব দিলেন এ দেশের চার জন রেফারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২ ১৫:৫৭
Share:

সিডনির মাঠে প্রাঞ্জল (মুখে মাস্ক) এবং অরুমুঘন। ছবি: টুইটার থেকে

ফুটবল ম্যাচে রেফারিং করা অনেকটা ‘থ্যাঙ্কলেস জব’। ভাল ভাবে ম্যাচ পরিচালনা করতে পারলে তেমন কৃতিত্ব নেই। কিন্তু সামান্য ভুলেও রেহাই মেলে না। সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেলে বা পছন্দ না হলে সংশ্লি়ষ্ট দলের ফুটবলাররা তেড়ে আসেন। রেফারির মুণ্ডপাত করেন কোচ, সমর্থকরাও।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ মানেই রেফারিদের স্নায়ুর সঙ্গে লড়াই। সামান্য ভুলেরও যেন ক্ষমা নেই। বহু সময় বাংলা তথা ভারতীয় রেফারিদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দু’দলের কর্তা, সদস্য, সমর্থকদের একাংশ। বিতর্ক এড়াতে বাংলার ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ অনেক সময় ভিন রাজ্য বা দেশের রেফারিদের নিয়ে আসে বড় ম্যাচ পরিচালনার জন্য।
বাংলা বা ভারতীয় রেফারিদের মান নিয়ে ওঠে নানা প্রশ্ন। কাঠগড়ায় তোলা হয় তাঁদের ফিটনেসকেও। সেই সব সমালোচনারই জবাব দিলেন এ দেশের চার জন রেফারি। সেই চার জনের অন্যতম বাংলার প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ৮ মার্চ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলা ছিল সিডনি এফসি এবং কায়া এফসি-র। সিডনির জুবিলি স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন চার জন ভারতীয়। প্রধান রেফারি ছিলেন রোয়ান অরুমুঘন। দুই সহকারী রেফারি ছিলেন অরুণ শশীধরন পিল্লাই এবং কেনেডি সাপাম। চতুর্থ রেফারির দায়িত্ব পালন করেন বাংলার প্রাঞ্জল। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে অস্ট্রেলীয় দলটি ৫-০ ব্যবধানে হারায় ফিলিপিন্সের দলটিকে। ওই ম্যাচ পরিচালনা ঘিরে বড় কোনও বিতর্ক হয়নি। দু’দলের ফুটবলার, কোচেরা ভারতীয় রেফারিদের খেলা পরিচালনায় বেশ খুশি।

Advertisement

খেলাটি দক্ষতার সঙ্গেই পরিচালনা করেন চার ভারতীয় রেফারি। ২০২২ সালের জন্য ফিফা প্যানেলে জায়গা পাওয়া চার জন মহিলা-সহ ১৮ জন ভারতীয় রেফারির মধ্যেই রয়েছেন এঁরা। ফিফা প্যানেলে প্রধান রেফারিদের তালিকায় রয়েছেন প্রাঞ্জল এবং অরুমুঘন। সহকারী রেফারির তালিকায় আছেন পিল্লাই এবং সাপাম।

কেরলের পালাক্কাডের বাসিন্দা অরুমুঘন। ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় স্তরের ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করছেন। শারীরিক সক্ষমতার দিক থেকে দেশের অন্যতম সেরা ৪২ বছরের এই রেফারি। ২০০৯ থেকেই রয়েছেন ফিফার তালিকায়। কড়া ধাঁচের রেফারি বলেই তিনি পরিচিত।

Advertisement

৩৫ বছরের প্রাঞ্জলের কথা বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা জানেন। ২০১৪ সালে এএফসি এবং ২০১৫ সাল থেকে ফিফা প্যানেলে রয়েছেন বাংলার এই দক্ষ রেফারি। বহু কঠিন খেলা পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। কলকাতা ডার্বি একাধিক বার খেলিয়েছেন। পাশাপাশি, এএফসি-র হয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচ খেলিয়েছেন তিনি। ইরান যে ম্যাচে মহিলাদের স্টেডিয়ামে ঢোকার অনুমতি দিল, সেই ম্যাচে বাঁশি হাতে ছিলেন প্রাঞ্জল। ইরানের ঐতিহাসিক আজাদি স্টেডিয়ামে হয়েছিল সেই ম্যাচ। ২০১৬ সালে তাঁকে বর্ষসেরা রেফারির পুরস্কার দেয় সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন।

৪১ বছরের সাপাম মণিপুরের ইম্ফলের বাসিন্দা। ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় স্তরে রেফারিং করছেন। এখনও পর্যন্ত খেলিয়েছেন মোট ১২৮টি ম্যাচ। মূলত সহকারী রেফারি হওয়ায় লাল বা হলুদ কার্ড ব্যবহারের সুযোগ এখনও পাননি তিনি।

৩৯ বছরের পিল্লাই তামিলনা়ডুর ত্রিবান্দুমের বাসিন্দা। তিনিও ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় স্তরে রেফারিং করছেন। এখনও পর্যন্ত খেলিয়েছেন মোট ১২৭টি ম্যাচ। লাল বা হলুদ কার্ড ব্যবহারের সুযোগ পাননি তিনিও।

ভারতীয় ফুটবলে ম্যাচ পরিচালনা করে খুব বেশি রোজগার এখনও হয় না রেফারিদের। যা হয় তাও অনিয়মিত। তাই সংসার চালাতে প্রায় সকলেই যুক্ত অন্য পেশার সঙ্গে। তবু ফুটবলের প্রতি ভালবাসায়, টানে বাঁশি মুখে ওঁরা দৌড়ন মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। প্রায় ফুটবলারদের মতোই শারীরিক সক্ষমতা রাখতে হয়, বলের কাছাকাছি বা লাইনে থাকতে।

আন্তর্জাতিক ম্যাচে বা বিদেশের মাটিতে ভারতীয় রেফারিদের খেলা পরিচালনা নতুন নয়। একটি খেলার চার জন রেফারিই ভারতের, এমন খুব বেশি দেখা যায় না। সে দিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অরুমুঘন, প্রাঞ্জল, পিল্লাই, কেনেডিরা গর্বিত করলেন ভারতীয় ফুটবলকে। জবাব দিলেন দেশের মাঠে তাঁদের নিয়ে যাবতীয় সমালোচনারও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement