গোল করার পর উচ্ছ্বাস হিজাজির। ছবি: ইস্টবেঙ্গল এফসি-র ফেসবুক থেকে।
কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালে জামশেদপুর এফসিকে ২-০ গোলে হারাল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। ইস্টবেঙ্গলের দুই গোলদাতা হলেন হিজাজি এবং সিভেরিয়ো। ছ’বছর পর আবার সুপার কাপের ফাইনালে উঠল লাল-হলুদ ব্রিগেড।
গত ৪ নভেম্বরের পর থেকে কোনও ম্যাচ হারেনি ইস্টবেঙ্গল। সুপার কাপেও অব্যাহত রইল লাল-হলুদ শিবিরের জয় যাত্রা। আগের ম্যাচে মোহনবাগানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল ইস্টবেঙ্গল শিবির। সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ সেমিফাইনালে দেখা গেল ক্লেটন সিলভাদের খেলায়। যদিও খালিদ জামিলের দল গোটা ম্যাচেই সমানে সমানে লড়াই করেছে।
বুধবারের সেমিফাইনাল আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেছিলেন ক্লেটন, নন্দকুমার, জেভিয়ার সিভেরিয়োরা। জামশেদপুরের অর্ধেই বল থাকছিল অধিকাংশ সময়। ইস্টবেঙ্গলের একের পর এক আক্রমণে কিছুটা চাপে পড়ে যায় জামশেদপুরের রক্ষণ। ১৯ মিনিটে হিজাজির গোল অবশ্য সেটপিস মুভমেন্টের ফসল। কর্ণার থেকে বল পান সিভেরিয়ো। কিন্তু তিনি শট না নিয়ে সামনে দিকে এগিয়ে যান। তাতেই খুলে যায় গোলের মুখ। পিছন থেকে উঠে আসা হিজাজি গোল করতে ভুল করেননি।
০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের ঝাঁঝ বৃদ্ধি করে জামশেদপুর। জামিলের ফুটবলারেরা একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকেন ইস্টবেঙ্গল বক্সে। ৩০ মিনিটে হাউকিপ বল নিয়ে ফাঁকায় উঠে যান ইস্টবেঙ্গল বক্সে। ব্যাক পাসে বল দেন মনজোরোকে। তাঁর শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন প্রভসুখন সিংহ গিল। প্রথমার্ধে অন্তত তিন বার দলের পতন রোখেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোল করার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন লাল-হলুদের বিষ্ণুও। তাঁর চেষ্টা ব্যর্থ করেন জামশেদপুরের গোলরক্ষক রেহেনেশ। প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ করেন কুয়াদ্রাতের ছেলেরা।
ইস্টবেঙ্গল শিবির অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে বাঁদিক দিয়ে জামশেদপুরের বক্সে উঠে যান বড় ম্যাচের গোলদাতা নন্দকুমার। তবে নিজে গোল করার চেষ্টা না করে তিনি বল দেন নিশু কুমারকে। নিশু ঠান্ডা মাথায় ক্রশ রাখেন পোস্টের সামনে। গোলের সামনে বল পান সিভেরিয়ো। পা ছুঁইয়ে ৪৭ মিনিটে দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করেন স্প্যানিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ইস্টবেঙ্গল ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরও হাল ছাড়েনি জামশেদপুর। গোল শোধ করার লক্ষ্যে একের পর এক আক্রমণ তৈরি করেন তাঁরা। কিন্তু প্রভসুখনকে পরাস্ত করতে পারেননি।
ইস্টবেঙ্গল অবশ্য ৩-০ ব্যবধানে জিততে পারল ক্লেটন ৮১ মিনিটে পেনাল্টি নষ্ট না করলে। আসানসোলের ছেলে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বল নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে বল নিয়ে জামশেদপুরের বক্সে ঢুকে পড়লে তাঁকে ফাউল করা হয়। কাছেই থাকা রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টি দেন। ক্লেটন আসেন শট নিতে। ইস্টবেঙ্গল অধিনায়কের শক্তিশালী শট জামশেদপুরের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও বারে গেলে ফিরে আসে। সংযুক্ত সময় ফ্রিকিক থেকে নেওয়া ক্লেটনের শট থেকে প্রতিপক্ষের বক্সে বল পান ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা হিজাজি। কিন্তু গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি।
২০১৮ সালে শেষ বার সুপার কাপের ফাইনালে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল। সে বার সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসির কাছে ১-৪ ব্যবধানে হেরেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। আগামী রবিবার ইস্টবেঙ্গল সদস্য, সমর্থকদের ভরসা কুয়াদ্রাতের ফুটবল মস্তিষ্ক।