বিধ্বস্ত ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা।সুমন বল্লভ
ইস্টবেঙ্গলকে গত মরসুমে আইএসএলে হারিয়ে অভিষেকের ডার্বি স্মরণীয় করে রেখেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। রবিবাসরীয় যুবভারতীতেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন এটিকে-মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচ।
সংযুক্ত সময়ে রিজ়ার্ভ বেঞ্চের সামনে রীতিমতো ছটফট করছিলেন জুয়ান। রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই দু’হাত মুঠো করে আকাশের দিকে ছুড়লেন। তার পরেই মাঠে ঢুকে জড়িয়ে ধরলেন ফুটবলারদের। স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জয় খুবই আনন্দের। ওরা ভাল এবং শক্তিশালী দল। তা ছাড়া দুই প্রধান দীর্ঘ দিন পরে যুবভারতীতে খেলল। দু’দলের দর্শকরাই দারুণ উপভোগ করেছেন ম্যাচ। দু’দলের সমর্থকরাই অসাধারণ। কলকাতা ফুটবলেরই জয় হল। তবে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য খারাপই লাগছে।’’
সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে জিতলেও লিস্টন কোলাসোরা যে ভাবে সুযোগ নষ্ট করেছেন, তা যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গোপন করেননি সবুজ-মেরুনের কোচ। বললেন, ‘‘আমাদের এই সমস্যা দূর করার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। অসংখ্য গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে সুযোগ তৈরি হওয়াই আসল।’’জুয়ানের মতো অভিষেকের ডার্বিতে জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের। খেলা শেষ হওয়ার পরে ফুটবলারদের নিয়ে গ্যালারির সামনে গিয়ে সমর্থকদের অভিবাদন গ্রহণ করলেও হতাশ ব্রিটিশ কোচে বলছিলেন, ‘‘আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে ফলে খুশি হয়েছি? একাধিক সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। এখনও বুঝে উঠতে পারছি না, কী ভাবে বলটা গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে গোলের মধ্যে ঢুকে গেল।’’ এর পরেই টানা ম্যাচ খেলা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘ছয় দিনে তিনটে ম্যাচ খেলতে হয়েছে। বাড়ির পোষ্যকেও কেউ এ রকম ভাবে খাটায় না। ভাগ্য ভাল কোনও ফুটবলার চোট পায়নি।’’ মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘আমরা খুব বেশি দিন অনুশীলন করার সুযোগই পাইনি। তা সত্ত্বেও ছেলেরা দারুণ খেলেছে। প্রতি ম্যাচেই ওরা উন্নতি করছে।’’
আরও উন্নতি চান জুয়ানও। ডার্বি জিতলেও দলের খেলায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। তাঁর কথায়, ‘‘টানা ছটি ডার্বিতে জয় ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ঠিকই, তবে মনে রাখতে হবে সোমবার থেকে নতুন দিন ও সপ্তাহ শুরু হবে। প্রত্যেক দিনই উন্নতি করতে হবে।’’ ইস্টবেঙ্গলেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে জুয়ান বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলও দারুণ দল। ওদের ফুটবলাররাও অসাধারণ।’’ স্টিভনও বলে গেলেন, ‘‘মোহনবাগান যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে। ওরা দীর্ঘ দিন অনুশীলন করারসুযোগও পেয়েছে।’’
ডুরান্ড কাপে মোহনবাগানের শেষ ম্যাচ ভারতীয় নৌ সেনার বিরুদ্ধে আগামী বুধবার। তবে সবুজ-মেরুন শিবিরের সকলের নজর থাকবে আজ, সোমবারের মুম্বই সিটি এফসি বনাম রাজস্থান ইউনাইটেড দ্বৈরথে। এই দু’টি দলেরই সংগ্রহে এই মুহূর্তে চার পয়েন্ট। যারা জিতবে সাত পয়েন্ট অর্জন করে শেষ আটে খেলা কার্যচ নিশ্চিত করে ফেলবে। এই কারণেই শেষ ম্যাচে জিততেই হবে মোহনবাগানকে। সোমবার রাজস্থান যদি জিতে যায় এবং নৌ সেনা হারিয়ে দেয় মোহনবাগানকে, সে ক্ষেত্রে চার পয়েন্টেই আটকে থাকবেন কিয়ান নাসিরি-রা। জুয়ান তাই বলে গেলেন, ‘‘আমাদের শেষ ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট অর্জন করতেই হবে।’’ ইস্টবেঙ্গলের খেলা বাকি রয়েছে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে। স্টিভনের দলের সামনেও সুযোগ থাকবে আগামী রবিবার শেষ ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়ে শেষ আটে ওঠার। স্টিভন বললেন, ‘‘ফুটবলারদের এক দিন বিশ্রাম দিয়ে মঙ্গলবার থেকে প্রস্তুতিশুরু করতে চাই।