আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। —ফাইল চিত্র।
তিন দিন বিশ্রামের পরে শুক্রবার বিকেল থেকে আইএসএলের শেষ চারের প্রস্তুতি শুরু করল মোহনবাগান। যুবভারতীতে অনুশীলনে ফুটবলাররা থাকলেও আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস নেই। আবার কি অসুস্থ হয়ে পড়লেন সবুজ-মেরুনের চাণক্য?
অসুস্থতার কারণে চেন্নাইয়িন এফসি, পঞ্জাব এফসি এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে অনুশীলন করাতে পারেননি হাবাস। ছিলেন না ডাগআউটেও। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে তিনি যোগ দিয়েছিলেন দলে। তাঁর কোচিংয়েই যুবভারতীতে ২-১ জিতে প্রথমবার লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হন জনি কাউকো, দিমিত্রি পেত্রাতস-রা।
হঠাৎ কী হল হাবাসের? শেষ চারের প্রস্তুতি শুরুর দিনে কেন তাঁকে দেখা গেল না অনুশীলনে? সবুজ-মেরুন অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, শুক্রবার একাধিক ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে হাবাসের। তাই আসতে পারেননি তিনি। মাঠে নামতে না পারলেও অনুশীলনে কড়া নজর ছিল হাবাসের! কী ভাবে? যুবভারতীর অনুশীলন মাঠের লাগোয়া পাঁচতারা হোটেলে থাকেন কোচ-সহ বিদেশি ফুটবলাররা। হাবাসের সহকারী ম্যানুয়েল কাসকালানার ঘর থেকে পুরো মাঠ দেখা যায়। শুক্রবার বিকেলে সেখানেই বসেছিলেন স্পেনীয় কোচ। ম্যানুয়েলের ঘরের জানলা দিয়েই কড়া নজর রেখেছিলেন অনুশীলনে।
শুক্রবার বিকেলে মেঘনাদের মতো আড়ালে থাকলেও সেমিফাইনালে কি ডাগআউটে দেখা যাবে হাবাসকে? সবুজ-মেরুনের ফুটবলাররা আত্মবিশ্বাসী। দিমিত্রি থেকে অধিনায়ক শুভাশিস বসু— খোলাখুলিই বলেন, হাবাস-ই দলের প্রধান শক্তি। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করা অসম্ভব। তাঁদের আশা দুর্বল শরীর নিয়েও যে ভাবে তিনি মুম্বই ম্যাচে ডাগআউটে ছিলেন, সেমিফাইনালেও থাকবেন।
প্রতিপক্ষ বিশেষে রণকৌশল তৈরি করেন হাবাস। আইএসএলের শেষ চারে মোহনবাগান কোন দলের বিরুদ্ধে খেলবে। শুক্রবার বিকেলে তখনও চূড়ান্ত হয়নি কেরল ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে শেষ চারে উঠবে ওড়িশা এফসি। এই কারণেই হয়তো অনুশীলনে আক্রমণাত্মক ফুটবলের উপরেই বেশি জোর দিয়েছিলেন। মুম্বইয়ের লালিয়ানজ়ুয়ালা ছাংতের দৌড় থামাতে ম্যাচ চলাকালীন দ্রুত রণকৌশল বদলে জনি কাউকো-কে ব্যবহার করেছিলেন হাবাস। এ দিন অনুশীলনে দেখা গেল, ফিনল্যান্ডের হয়ে ইউরো-তে খেলা তারকাকে সেমিফাইনালে গোল করার বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মোহনবাগানের। এই কারণেই দুই প্রান্ত থেকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে মনবীর সিংহ, লিস্টন কোলাসো, দিমিত্রিদের সেন্টার থেকে গোল করার মহড়া জনি দিলেন দীর্ঘক্ষণ ধরে। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে অসংখ্য গোল করেছেন তিনি। এ দিন গোল করার মহড়া সারলেন পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে। হাবাস বার্তা দিয়ে রাখলেন দিমিত্রি, জেসন কামিংস-দের গোল করা আটকাবে? ভুলে যেও না আমার দলে জনি আছে।
সেমিফাইনালে মাঠে ফিরতে মরিয়া সবুজ-মেরুনের আর এক তারকা সাহাল আব্দুল সামাদও। জাতীয় দলের অনুশীলনে পায়ের পেশিতে চোট পাওয়ার পর থেকেই মাঠের বাইরে তিনি। শেষ চারটি ম্যাচে খেলতে পারেননি সাহাল। শুক্রবার বিকেলে দেখা গেল, ফিজ়িয়োর কাছে আলাদা ভাবে অনুশীলন করছেন সাহাল। জানা গিয়েছে, দৌড়তে কোনও সমস্যাও হচ্ছে না তাঁর। সব ঠিক থাকলে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল সাহালের। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ। সেমিফাইনালে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।