১৯৭৪ সালের জয়ী দলের সদস্যদের সঙ্গে ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে (মাঝখানে)। —নিজস্ব চিত্র।
৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে ভারতীয় ফুটবলের এক গৌরবময় দিনের। ১৯৭৪ সালে এএফসি যুব প্রতিযোগিতা জিতেছিল ভারতীয় দল। সেই দলের ফুটবলারদের সংবর্ধনা দিলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে। ৫০ বছর পূর্তিতে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে কল্যাণ শুভেচ্ছা জানান ফুটবলারদের।
১৯৭৪ সালে তাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ফাইনালে ইরানের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল ভারত। তাই ইরানের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।
অনুষ্ঠানে কল্যাণ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, চেয়ারপার্সন সুব্রত দত্ত ও সচিব অনির্বাণ দত্ত। তাঁরা সেই দলের সাত জন ফুটবলারের হাতে স্মারক তুলে দেন। তাঁরা হলেন— ১৯৭৪ সালের সেই দলের অধিনায়ক শাব্বির আলি, সিসি জেকব, দিলীপ পালিত, শিশির গুহ দস্তিদার, রঞ্জিত দাস ও এসপি কুমার। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সেই দলের কোচ অরুণ ঘোষ। তাই তাঁর জামাই এসে স্মারক নেন।
অনুষ্ঠানে কল্যাণ জানান, তাঁর ফুটবলার হয়ে ওঠার নেপথ্যে সত্তরের দশকের ফুটবলারদের অবদান রয়েছে। ফেডারেশন সভাপতি বলেন, “আমি ছোটবেলায় শুনেছিলাম সত্তরের দশক ভারতীয় ফুটবলের সোনার সময় ছিল। তাই এটা আমার কাছে বড় মুহূর্ত। শাব্বিরদা আমায় জানিয়েছিল, এই বছর সেই প্রতিযোগিতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। তার পরেই এই সংবর্ধনার ভাবনা। আশা করছি ভারতের বর্তমান ফুটবলারেরা প্রাক্তনদের দেখে অনুপ্রাণিত হবেন।”
১৯৭৪-এর চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক শাব্বিরের মনে এখনও সেই প্রতিযোগিতার স্মৃতি টাটকা। তিনি বলেন, “ফেডারেশন যে পাঁচ দশক পরে আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। সেই প্রতিযোগিতায় আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল, চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তাইল্যান্ডে যাওয়ার এক মাস আগে থেকে আমরা শিবির শুরু করেছিলাম। প্রস্তুতি ঠিক মতো হয়েছিল। তারই ফল পেয়েছিলাম। আশা করছি আমাদের মতো পুরনোদের দেখে এখনকার ফুটবলারেরা কিছু শিখবে।”
ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী কল্যাণ। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি বলেন, “আমরা ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। ফিফার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি দেখে ওরা খুশি। ভুবনেশ্বরে এআইএফএফ ও ফিফার যৌথ উদ্যোগে অ্যাকাডেমি তৈরি হয়েছে। সেখানে আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কোচ যুক্ত। ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ হয়েছে। মহিলাদের যুব বিশ্বকাপও হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে ভারতীয় ফুটবলের সামনে বিশ্বের দরজা খুলে যাচ্ছে।”
বিশ্বকাপে ভারত এক দিন খেলবে, এই লক্ষ্যেই তাঁদের কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ফেডারেশন সভাপতি। কল্যাণ বলেন, “ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বর্তমানকে আমাদের বদলাতে হবে। সেই সঙ্গে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতার উপর জোর দিয়েছি। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ফুটবলের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। ভারতে এতগুলো প্রতিযোগিতা হচ্ছে। ডুরান্ড কাপ, সুপার কাপ, আইএসএল, আই লিগ-১, ২, ৩ চলছে। বরদোলইয়ের মতো পুরনো প্রতিযোগিতা আবার শুরু করার চেষ্টা করছি। আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের স্বপ্ন এক দিন সফল হবেই।”