n মহড়া: ভিয়েতনামে প্রস্তুতি নিয়ে কলকাতায় এসেছে আফগানিস্তান।
এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের চূড়ান্ত পর্যায়ের ম্যাচের জন্য ভারত, হংকং ও কাম্বোডিয়া নিজেদের দেশে প্রস্তুতি নিয়েছে। ব্যতিক্রম একমাত্র আফগানিস্তান। কলকাতায় আসার আগে ভিয়েতনামে অনুশীলন করছেন হারুন আমিরি-রা!
কেন?আফগানিস্তান শিবিরে খোঁজ নিতেই উঠে এল চমকপ্রদ তথ্য। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য আতঙ্কে অধিকাংশ ফুটবলারই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যেতে চাননি। এই কারণেই ভিয়েতনামে এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। রবিবার বিকেলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে অনুশীলনের পরে আফগানিস্তান জাতীয় দলের এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘আমাদের জাতীয় দলের মাত্র দু’জন ফুটবলার আফগানিস্তানের ক্লাবে খেলে। বাকিরা সকলেই বিদেশের লিগে খেলছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ইউরোপের ক্লাবে খেলে। কেউ কেউ খেলে অস্ট্রেলিয়ায়। কেউ আবার কানাডায়। ভারতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন গোকুলম এফসিতে ছিল আমাদের শরিফ মুখাম্মদ। অধিকাংশই কাবুলে গিয়ে অনুশীলন করতে রাজি হয়নি। তাই আমরা ভিয়েতনামে প্রস্তুতি নিয়েছি।’’
আফগানিস্তানের দখল তালিবান নেওয়ার পরেই প্রাণ বাঁচাতে ফুটবল ফেডারেশনের প্রায় সব শীর্ষ কর্তাই বিদেশে চলে গিয়েছেন। নাম গোপন রাখার শর্তে তাঁদেরই এক জন রবিবার ফোনে বলছিলেন, ‘‘আফগানিস্তানের যা পরিস্থিতি, তাতে কখন কী হয় কেউ জানেন না। মানুষের বেঁচে থাকাটাই এখন সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে কেউ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আফগানিস্তানে যাবে না। তা ছাড়া আমাদের অধিকাংশ ফুটবলারই বিদেশে খেলে। ওদের কাছে আফগানিস্তানে ফেরা এখন একেবারেই নিরাপদ নয়। একই কারণে বিদেশি কোচেরাও রাজি হচ্ছেন না জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে।’’
এই মুহূর্তে কী অবস্থা কাবুল-সহ পুরো আফগানিস্তানের? জাতীয় দলের এক সদস্য বললেন, ‘‘পরিস্থিতির পরিবর্তন খুব একটা হয়নি আমাদের। প্রয়োজন ছাড়া আমরা কেউ-ই বাড়ির বাইরে বেরোই না।’’ আরও বললেন, ‘‘খেলাধুলোর জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা ফেরেনি। আতঙ্কের মধ্যে থেকে ভাল খেলা সম্ভব নয়। এই কারণেই আমরা ভিয়েতনামে প্রস্তুতি শিবির করেছিলাম।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘তবে আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার জাতীয় দলকে সব রকম ভাবে সাহায্য করছে।’’
এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে আমিরিদের প্রথম ম্যাচ ৮ জুন হংকংয়ের বিরুদ্ধে। বিপক্ষের গতিময় ফুটবল আটকাতে রবিবার বিকেলে যুবভারতীতে আফগানিস্তানের কোচ আনাউস দাস্তগির রক্ষণ মজবুত করে প্রতিআক্রমণে খেলার উপরেই বেশি জোর দিয়েছেন। ভিয়েতনামও যে হেতু হংকং ও কাম্বোডিয়ার মতোই খেলে, তাই কলকাতায় আসার আগে তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছিলেন শরিফরা। ০-২ গোলে হেরে যান তাঁরা। যদিও তা নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন নন আফগানিস্তানের ফুটবলাররা। তাঁদের পাখির চোখ ভারতকে হারানো। ১১ জুন প্রীতম কোটালদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়াই লক্ষ্য আফগানিস্তানের। এই ম্যাচে তাদের ভরসা দীর্ঘ দিন ভারতে খেলা সুনীল ছেত্রীর বন্ধু আমিরি-ই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।