প্রস্তুতি: কখনও ডুবে ফিল্ডিং ড্রিলে। ছবি: পিটিআই
ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে দুই টিমের দ্বৈরথ নিয়ে যতটা না চর্চা হচ্ছে, তার চেয়ে কিছু কম হচ্ছে না নাগপুরের বাইশ গজ নিয়ে।
শেষ কয়েকটা ম্যাচে নাগপুরের পিচ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। ২০১৫ সালে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে তিন দিনে হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। যার পরে আইসিসি এই পিচকে ‘পুওর’ রেটিং দিয়েছিল। তার পরের বছর, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড স্পিনারদের সামনে মাত্র ৭৯ রানে আউট হয়ে যায় ভারত। এই মাঠে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে আট মাস আগে। যেখানে ২০ ওভারের খেলায় ১৪৪ রান করেও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় ভারত।
এ বারও কি একই রকম ছবি দেখা যাবে? আবার দাপট দেখাবেন স্পিনাররা? পিচ কিউরেটর দাবি জানাচ্ছেন, এ বার সে রকম হবে না। বিদর্ভ ক্রিকেট সংস্থার দায়িত্বে থাকা প্রবীণ হিংগনিকর বলছেন, ‘‘যা হয়েছে, সে সব ভুলে যান। এখানে বাউন্স হয়তো খুব বেশি থাকবে না, কিন্তু বাউন্সটা সমান থাকবে। অসমান বাউন্সের উইকেট নয় এটা। দর্শকদের ম্যাচ দেখে ভাল লাগবে। রানও উঠবে।’’ কিউরেটর জানাচ্ছেন, পিচ পুরোপুরি বদলে ফেলা হয়েছে। ‘‘আমরা মাটি পুরোপুরি বদলে ফেলেছি। নতুন পিচ পরীক্ষা করেও দেখা হয়েছে। কাল ভাল একটা ম্যাচ দেখতে পাবেন বলে আশা করছি,’’ সাংবাদিকদের বলেছেন প্রবীণ।
আরও পড়ুন: অভিষেকেই এক ইনিংসে আট উইকেট নিয়ে নজির পাক পেসারের
কখনও পরীক্ষা করে নিচ্ছেন ব্যাট। কখনও বা অনুশীলনের ফাঁকে হাল্কা মেজাজে। শনিবার নাগপুরে ভারত অধিনায়কের বিভিন্ন মুহূর্ত। ছবি: এএফপি
সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ ভারত হেরে যাওয়ার ফলে হোয়াইটওয়াশের আর আশা নেই। কিন্তু যে প্রশ্নটা থাকছে, সেটা হল, ভারত কি শেষ ম্যাচেও দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাবে? আগের ম্যাচে দলে ফিরেছিলেন মহম্মদ শামি এবং উমেশ যাদব। কিন্তু দু’জনেই প্রচুর রান দিয়েছেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে উমেশ যাদব বলে যান, ‘‘অনেক দিন পরে বেঙ্গালুরুতে হেরে গেলাম আমরা। কিন্তু তাতে টিমের মনোবলে কোনও ধাক্কা লাগেনি। আমরা ১৫-২০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছিলাম। আমি আর শামি অনেক দিন পরে ওয়ান ডে খেলছি। কিন্তু আমরা সিনিয়র খেলোয়াড়। টিমের প্রয়োজনে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। ডেথ ওভারে আমাকে আর শামিকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে।’’
ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ পাবেন কি না, জানেন না। তবে তাঁকে যে এ রকম বেছে বেছে খেলানো হচ্ছে, তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই উমেশের। বরং বলছেন, ‘‘ফাস্ট বোলারদের জন্য এটা বেশ ভাল একটা ফর্মুলা। টানা খেলে গেলে শরীরের ওপর একটা চাপ পড়ে। বিশেষ করে উপমহাদেশে। একটা টেস্ট সিরিজ শেষ করেই আবার ওয়ান ডে-তে নেমে পড়লে খেলার সেই তীব্রতা ধরে রাখা কঠিন।’’
সিরিজের শেষ ম্যাচ নিয়মরক্ষার হলেও অস্ট্রেলিয়া আবার নিজেদের বিরাট-মন্ত্রে নিজেদের তাতাতে চাইছে। কী সেটা? গত বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়ান ডে সিরিজে ০-৪ পিছিয়ে ছিল ভারত। ওই সময় বিরাট বলেছিলেন, তিনি সিরিজ ৪-৪ করে দেশে ফিরতে চান। অর্থাৎ শেষ ওয়ান ডে এবং বাকি তিনটি টি-টোয়েন্টি জিতে স্কোর ৪-৪ করবেন। কোহালির টিম ঠিক সেটাই করেছিল। এখন সেই কাজটাই করতে চায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়ান ডে সিরিজে স্টিভ স্মিথের দল ১-৩ পিছিয়ে। কিন্তু শেষ ওয়ান ডে এবং তিনটি টি-টোয়ন্টি জিতে তাঁরা স্কোর ৫-৩ করতে চান।
অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার কেন রিচার্ডসন তাঁর দেশের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া সফরে বিরাট এ ভাবেই ৪-৪ করেছিল। আমাদের সামনেও সেটাই লক্ষ্য। শেষ ম্যাচ এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে মোট জয়ের দিক দিয়ে ভারতকে টপকে যেতে হবে।’’ স্মিথ-বাহিনী সেটা করতে পারে কি না, সেটাই দেখার।
ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: পঞ্চম ওয়ান ডে (নাগপুর, দুপুর ১.৩০)