নিজের বাড়ির সামনে আভা খাটুয়া। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বাস হচ্ছে না বাবা-মায়ের। বিশ্বাস হচ্ছে না যে শেষ মুহূর্তে মেয়ের নাম বাদ পড়েছে প্যারিস অলিম্পিক্সের দল থেকে। হতাশ পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের প্রত্যন্ত গ্রাম খুড়শির খাটুয়া পরিবার। জাতীয় রেকর্ড গড়ে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন আভা খাটুয়া। পোল্যান্ডে অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিও শুরু করেছিলেন। কিন্তু প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগেই ধাক্কা খেতে হয়েছে তাঁকে। কী কারণে আভার নাম বাদ পড়েছে তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। বিশ্ব অলিম্পিক্স সংস্থা ও ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা এখনও মুখ বন্ধ করে রাখলেও শোনা যাচ্ছে, হরমোনের সমস্যার কারণে হয়তো নাম বাদ গিয়েছে আভার।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার ডিএসডি (ডিফারেন্স অফ সেক্স ডেভেলপমেন্ট) নিয়ম হয়তো পূরণ করতে পারেননি আভা। অর্থাৎ, আভার শরীরের হরমোনে পুরুষালি ভাব রয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছেন, ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার ঘটনা যে হয়নি তা প্রায় পরিষ্কার। আভার নাম বাদ পড়ার সবচেয়ে বড় যে কারণ মনে হচ্ছে, তা হল তাঁর ডিএসডি নিয়ম পূরণ করতে না পারা।
এই একই সমস্যায় পড়েছিলেন ভারতের আর এক অ্যাথলিট দ্যুতি চাঁদ। ফলে ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে পারেননি তিনি। হাইপারএন্ড্রোগাইনিজ়ম পরিস্থিতির জন্য সমস্যা হয়েছিল তাঁর। যদিও পরে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে সুযোগ পান দ্যুতি।
অলিম্পিক্সের আগে পঞ্চকুলায় আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতা চলাকালীন অ্যাথলিটস ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের কর্তারা বেশ কয়েক জন অ্যাথলিটের রক্তের নমুনা নিয়েছিলেন। সেই নমুনা পাঠানো হয়েছিল বিশ্ব সংস্থার কাছে। সেই নমুনা পরীক্ষা করার পরেই আভাকে বাদ দেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। পুরো বিষয়টিই ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।
গত ৬ জুলাই অলিম্পিক্সের প্রস্তুতি শিবিরে যাওয়ার আগে আভা বলেছিলেন, “প্যারিস অলিম্পিক্সে সুযোগ পাওয়ায় আনন্দ হচ্ছে। এক জন অ্যাথলিট যখন খেলাধুলা শুরু করে তখন তার স্বপ্ন থাকে অলিম্পিক্স। আমারও সেই লক্ষ্য ছিল। আমি মহারাষ্ট্রের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি।” কয়েক দিন পরেই সেই হাসি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নাম বাদ যাওয়ার পরে আভার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে হতাশা ঝরে পড়েছে বাবা-মায়ের কথায়। আভার বাবা লক্ষ্মীকান্ত বলেন, “কত আশা নিয়ে মেয়ে অলিম্পিক্সে অংশ নিতে গিয়েছিল। কিন্তু শুনছি ওর নাম তালিকায় নেই। খুবই খারাপ লাগছে।” মা মঞ্জুর কথায়, “মেয়ের সঙ্গে কথা হয়নি। তবে শুনছি ওর নাম তালিকায় নেই। প্যারিসেই আছে মেয়ে।”