হেভিওয়েটে ইন্দ্রপতন! ব্রিটেনের টাইসম ফিউরির কাছে হেরে মুকুট খোয়ালেন বর্তমান বিশ্বের হেভিওয়েট বক্সিংয়ের অবিসংবাদী সংবাদ ভ্লাদিমির ক্লিচকো। ১১ বছর অপরাজিত থাকার পর ৩৯ বছরের এই কিংবদন্তী ইউক্রেনিয়ান বক্সার এই প্রথমবার হারের সম্মুখীন হলেন।
এই ম্যাচের আগে জোর চর্চা ছিল ‘টাইসম কি পারবেন ক্লিচকের একাধিপত্যে ভাগ বসাতে?’ আশঙ্কা তৈরি কারণ ছিলেন টাইসন স্বয়ং। কেন না এর আগে ২৪টা বাউটের মধ্যে একটাতেও হারেননি তিনি। শনিবারের পর সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াল ২৫।
বর্তমান সংখ্যাতত্ত্ব যাই বলুক, শনিবার কিন্তু ফেভারিট ছিলেন ক্লিচকোই। কারণ একটাই। ৬৭টি বাউটের মধ্যে জিতে ছিলেন ৬৪টিতেই। জো লুইয়ের পরে আর কেউই এত বার বিশ্ব খেতাব জেতেননি।
কিন্তু শনিবার সব হিসেব উল্টে দিলেন টাইসন। রিঙের মধ্যে দু’জনের উচ্চতার ফারাকটাই যেন হার-জিতের হিসেবটা গড়ে দিল।
ক্লিচকের চোটের জন্য আগেই এই মহা দ্বৈরথ পিছিয়ে গিয়ে ছিল। চোট সারিয়ে রিঙে কিরে আসার জন্য ৫ মাসে ৩২ কেজি ওজন কমিয়ে ছিলেন তিনি। অস্ট্রিয়াতে আল্পসের নীচে নির্জনে প্র্যাকটিস করে গেছেন তিনি।
কিন্তু হল না শেষ রক্ষা। শনিবার প্রথম থেকেই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেল টাইসন ফিউরি। এসপিরিট এরেনার ৫০ হাজার দর্শকের অধিকাংশেরই প্রতিপক্ষের হয়ে গলা ফাটানো তাঁকে দমাতে পারেননি। রীতিমত আধিপত্য রেখেই ম্যাচ জিতলেন তিনি।
‘‘আজ থেকে বক্সিংয়ে নতুন যুগের সূচনা হল। মহম্মদ আলির পর আমার মত ক্যারিস্মেটিক চ্যাম্পিয়ন দুনিয়া দেখেনি।’’ ম্যাচ জিতে হুঙ্কার টাইসনের।
এর সঙ্গেই তিনি জুড়েছেন ‘‘আমার ৬ মাসের পরিশ্রম সার্থক, স্বপ্ন সত্যি হল।’’
অন্যদিকে, শনিবার কিন্তু ক্লিচকো তাঁর চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় রাউন্ডে কয়েক বার পরিচিত ক্লিচকোর দেখা মিললেও, সুপার ফর্মে থাকা টাইসনের কাছে আদতে তা ধোপে টেকেনি। মেনে নিয়েছেন শনিবারের খেলায় টাইসনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেননি তিনি।
খেতাব জিতে টাইসন স্ত্রী র দিকে যখন ছুটে গেলেন, তখন তাঁর ঠোঁটে গর্বের হাসি, চোখে আনন্দের জল।
অন্যদিকে, হতাশ ক্লিচকো তখন বসে আছেন চেয়ারে। চোখ টাইসনের ঘুষিতে রক্তাক্ত।
রিম্যাচের আহ্বান তিনি করেই ফেলেছেন। মুকুট কি পুনরুদ্ধার হবে? নাকি সত্যি সত্যি ক্লিচকো যুগের অবসান হয়ে বক্সিং দুনিয়ার নতুন রাজার জমানা শুরু হয়েই গেল? উত্তর সময়ই দেবে।