মহড়ার আগে ইডেন একপ্রস্ত দেখে নেওয়া। বাঁ দিক থেকে বিক্রম, তনুশ্রীশঙ্কর, নীলয়, মধুমিতা রায় ও জয়া শীল ঘোষ। -নিজস্ব চিত্র
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে অমিতাভ বচ্চনকে দিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইয়ে গোটা দেশকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। রবি শাস্ত্রী মঙ্গলবার রাতেও মুম্বইতে এক হোটেল কর্তাকে বলছিলেন, আইডিয়াটা দুর্দান্ত ছিল।
এ বার বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফের আইসিসিকে আবেদন করে সাত মিনিটের ছাড়পত্র আদায় করেছেন। পুরুষদের ফাইনালের মাঝামাঝি ওই সময় তিনি ভারত এবং আরও বেশি করে বিশ্ব দরবারে বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরতে চান। মঙ্গলবার দুপুরে ফোনে সৌরভ বললেন, ‘‘বড় বড় স্পোর্টস অনুষ্ঠানে যেমন হয় একটা রঙবেরঙের প্রদর্শনী আমরা দেখাতে চাইব। যা থেকে ভারত এবং আরও বেশি করে বাংলার নিজস্বতা বেরিয়ে আসে।’’
ভারত যদি ফাইনালে ওঠে তবু জাতীয় সঙ্গীত গাওয়াবার জন্য কাউকে আনার কোনও পরিকল্পনা এ বার আর নেই। অমিতাভ বচ্চনের পর একমাত্র গ্রহণযোগ্য হতে পারত লতা মঙ্গেশকরের নাম। কিন্তু এ দিনও খোঁজ নিয়ে জানা গেল লতার শরীর বেশ অসুস্থ। ফোনেই আসতে পারছেন না তো কলকাতায় গিয়ে গান গাওয়া তো দূরের গ্রহ!
ব্যাট-বলের বাইরে তাই সাত মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই মাঠের বাইরে সেরা চমক হতে যাচ্ছে। যা কোরিওগ্রাফি করছেন তনুশ্রীশঙ্কর সহ একাধিক বিখ্যাত শিল্পী। পরিচালনার দায়িত্বে বিখ্যাত তবলা বাদক বিক্রম ঘোষ। এ দিন ফোনে বিক্রম বললেন, ‘‘অনুষ্ঠানের নাম রাখা যেতে পারে স্পেকট্যাকল। যদিও কিছু ঠিক হয়নি।’’ বিক্রমদের লক্ষ্য ধ্বনি, ছন্দ এবং নাচের বিভিন্ন ফর্ম প্রদর্শনের মাধ্যমে ইডেনের বুকে একটা অপরূপ দৃশ্য তৈরি! তনুশ্রীশঙ্কর তাঁর প্রয়াত স্বামী আনন্দকে নিয়ে এর আগে সাতাশির বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং ছিয়ানব্বইয়ের বিশ্বকাপ উদ্বোধন— দুটোতেই জড়িত ছিলেন। তনুশ্রীশঙ্কর বললেন, ‘‘এ বার অবশ্য আমি নয় আমার মেয়ে নাচছে।’’
বিক্রম বলছিলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি ব্যাপারটা যে অসম্ভব উত্তেজক এবং অ্যাড্রিনালিন নিঃসরণকারী একটা অনুশীলন সেটা মাথায় রেখে আমাদের পারফরম্যান্স হবে খুব দ্রুত লয়ের। গান থাকছে না তবে নানান ঘরানার নাচ থাকবে। ভরতনাট্যম, ওড়িশি, মণিপুরী।’’ নাচে অংশ নেবেন বিক্রম-পত্নী জয়া, শর্মিলা বিশ্বাস, প্রীতি পটেল, মধুমিতা রায় প্রমুখ। ড্রাম এবং বিভিন্ন ধরনের রিদম ছাড়াও থাকবে মৃদঙ্গম আর একান্তই বাংলার ঢাক, মাদল, ধামসা। শ’খানেক শিল্পী অংশ নেবেন। বিক্রমের মনে হচ্ছে মাত্র সাত দিনের মধ্যে বিশ্ব মঞ্চে এত বড় দায়িত্ব পালন মোটেও সহজ হবে না। কিন্তু তাঁরা প্রাণ ঢেলে রিহার্সাল শুরু করে দিয়েছেন। ভারত যদি ফাইনাল খেলে তা হলে ধোনির ছক্কার সঙ্গে মাদল। কোহালির ড্রাইভের আগে ঢাক। কোলাজ হিসেবে মন্দ কী!