চারমূর্তি: ইম্ফল রওনা হওয়ার আগে প্র্যাক্টিসে ইস্টবেঙ্গলের চার বিদেশি (বাঁ দিক থেকে) বোরখা, জনি, কাশিম ও এনরিকে। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আই লিগের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ নেরোকা এফসি। কিন্তু মাঝমাঠের প্রধান অস্ত্র মহম্মদ আল আমনার খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত লাল-হলুদ শিবিরে!
পিঠের ব্যথায় কাবু ইস্টবেঙ্গল মিডফিল্ডার মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুর থেকে কলকাতায় ফিরেই ভর্তি হন হাসপাতালে। এ দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও অনুশীলন করেননি। আই লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে দলের সঙ্গে মণিপুরের ইম্ফলেও যাননি তিনি। এই পরিস্থিতিতে কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসও শনিবার নেরোকা এফসি-র বিরুদ্ধে আমনাকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে রাজি নন। অথচ দলের মধ্যেই কেউ কেউ লাল-হলুদ মিডফিল্ডারকে খেলাতে মরিয়া।
বুধবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুশীলনের পরে লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, ‘‘নেরোকার বিরুদ্ধে আমনা সম্ভবত খেলবে না। তবে তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমার দলে আরও চব্বিশ জন ফুটবলার রয়েছে। তাই কোনও এক জনকে নিয়ে ভাবছি না।’’ এই সময়ই কোচের কাছে এসে নিচু স্বরে এক কর্তা জানান, বৃহস্পতিবার সকালের উড়ানে ইম্ফল পাঠানো হচ্ছে আমনাকে। যা শুনে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে যান মেনেন্দেস। এর পরে তিনি বলেন, ‘‘আমনার একটু সমস্যা রয়েছে। তবে ম্যাচের আগে ও নিজে যদি মনে করে খেলার মতো জায়গায় রয়েছে, তা হলে খেলবে।’’ আমনা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আগের চেয়ে অনেক ভাল রয়েছেন তিনি।
নেরোকা বিরুদ্ধে আমনা খেলতে পারবেন না ধরে নিয়েই এ দিন ৪-৪-২ ছকে অনুশীলন করিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ। আক্রমণে এনরিকে এসকুইদোর সঙ্গে খেলালেন জবি জাস্টিনকে। প্রথম ম্যাচের রণকৌশল কী হবে, তা অবশ্য গোপনই রাখলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পাসিং ফুটবলে জোর দিয়েছেন। নেরোকা-কে হারাতে তিকিতাকাই কি অস্ত্র? মেনেন্দেসের কথায়, ‘‘তিকিতাকা, ডাইরেক্ট ফুটবল, কাউন্টার অ্যাটাক ও সেট পিস— জয়ের জন্য এই চার ধরনের রণকৌশল প্রয়োজন। আমরা সব ধরনেরই অনুশীলন করেছি।’’ একই রকম ভাবে এড়িয়ে গেলেন কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ব্যর্থতার প্রসঙ্গ। বললেন, ‘‘নতুন ভাবে শুরু করতে চাই। নেরোকার বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই। তার আগে অতীত নিয়ে ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য জয় দিয়ে আই লিগে অভিযান শুরু করা।’’
এ দিনের অনুশীলনে অবশ্য দেখা যায়নি চব্বিশ ঘণ্টা আগে জনি আকোস্তার সঙ্গে নয়াদিল্লিতে আই লিগের ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া লালরিনডিকা রালতেকে। যদিও জনি পুরোদমেই অনুশীলন করেছেন। জানা গিয়েছে, দলের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক ব্রিগেডিয়ারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই অনুশীলনে আসেননি ডিকা। কোচকে সেই কর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত বারোটায় কলকাতায় পৌঁছেছেন বলে বিশ্রাম চেয়েছিলেন ডিকা। যা শুনে হতাশা গোপন করেননি লাল-হলুদ কোচ। পরে সমর্থকদের উপহার দেওয়া রসগোল্লা খেয়ে মুখে হাসি ফেরে মেনেন্দেসের।
এ দিন বিকেল তিনটে নাগাদ ইম্ফল পৌঁছে আর অনুশীলন করেনি ইস্টবেঙ্গল। টিম হোটেলেই বিশ্রাম নিয়েছেন ফুটবলারেরা। বৃহস্পতিবার থেকেই নেরোকা ম্যাচের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করার পরিকল্পনা মেনেন্দেসের।