গ্যালারির গান আর স্লোগানে যখন ময়দানে বিদেশি ছোঁয়া, তখনই উলটপুরান। হঠাৎ-ই ফিরল অভব্যতার ছবি।
ইস্টবেঙ্গল-টালিগঞ্জ অগ্রগামীর ম্যাচ দেখে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক দল লাল-হলুদ সমর্থক মোহনবাগান তাঁবুতে ঢুকে অভব্য আচরণ করে। হামলা করার চেষ্টা করে। এলোপাথাড়ি ইট ছোড়ে তাঁবুতে। যাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ক্লাবের নামাঙ্কিত গ্লো-সাইন বোর্ড। ভাঙচুর হয় মূল গেটের ভিতরের কিছু জায়গায়। মোহনবাগান সদস্যরা পাল্টা তেড়ে গেলে তাঁরা পালিয়ে যায়। মোহনবাগান মাঠ সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাতেই ময়দান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে লেখেন, ‘‘ক্লাবের তাঁবুতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক।’’ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ আশে। থানা থেকে জানানো হয়, একটি ডায়েরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভাসল ইডেন, চায়নাম্যান মহড়া ইন্ডোরে
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অবশ্য এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘এটা আমাদের ক্লাবের সংস্কৃতি নয়। আমরা চাই প্রশাসন ওই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’ পাশাপাশি তাঁর আবেদন, ‘‘শিলিগুড়িতে যেন এর রেশ না পড়ে। শান্তিতে ডার্বি হোক।’’
এ দিকে, মঙ্গলবারের ম্যাচ জেতায় ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ছিল উৎসবের মেজাজ। ডার্বির আগের ম্যাচে পাঁচ গোল। তাও আবার সুভাষ ভৌমিকের দলের বিরুদ্ধে। এই ফলে সদস্য-সমর্থকদের মতো বিশ্মিত কোচ খালিদ জামিলও। বললেন, ‘‘এটা অপ্রত্যাশিত ফল। ভাবিনি এত গোল হবে।’’
লিগ টেবলের পরিস্থিতি যা তাতে পয়েন্টের বিচারে দুই প্রধান একই বিন্দুতে (২২ পয়েন্ট) থাকলেও গোল পার্থক্যে ইস্টবেঙ্গল অনেক এগিয়ে। অর্থাৎ শিলিগুড়ির ডার্বি ড্র হলে ইস্টবেঙ্গল গড়ে ফেলবে টানা আট বার লিগ জেতার অনন্য রেকর্ড। হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়ন। খলিদ অবশ্য ম্যাচের পর মানতে চাননি তাঁরা ডার্বিতে সুবিধাজনক জায়গায় আছেন। বললেন, ‘‘গোল পার্থক্যে এগিয়ে আছি ঠিক। বাকি সব তো সমান। এটা সুবিধা আবার অসুবিধাও। আমরা এগিয়ে আছি ভেবে আত্মতুষ্ট হলেই বিপদ।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘মোহনবাগানের আক্রমণ এবং রক্ষণ যথেষ্ট ভাল। ওরাও কোনও ম্যাচ হারেনি, আমরাও। ডার্বিতে লড়াই হবে সমান সমান।’’ স্বভাবতই মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামার আগে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাননি।
মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী এ দিন অনুশীলনের পর বলেছেন, ‘‘ময়দানে এখন যে কোচেরা কোচিং করছেন তাদের মধ্যে খালিদ-ই সেরা।’’ সেটা যে বিপক্ষ কোচের কৌশল তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাঁর। বললেন, ‘‘উনিও তো আমার মতোই এখনও পর্যন্ত ফল করেছেন। সাতটা ম্যাচ জিতেছেন। আমিও তো সবে শুরু করলাম।’’
অনেকের আপত্তি সত্ত্বেও উইলিস প্লাজাকে দলে নিয়েছিলেন খালিদ। প্লাজা গোল পাচ্ছিলেন না বলে সমালোচনাও হচ্ছিল। এ দিন অবশ্য লাল-হলুদ কোচ তা নিয়ে কিছু বলেননি। বলেন, ‘‘প্লাজা হ্যাটট্রিক করেছে। কিন্তু এটা ওর সেরা ম্যাচ নয়।’’ টালিগঞ্জ কোচ সুভাষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘প্লাজার গোলগুলো পড়ে পাওয়া। প্রথম গোলটা যে কর্নার থেকে হয়েছে সেটাও ছিল না। এ দিন ম্যাচে লালকার্ড দেখেন টালিগঞ্জের গৌতম কুজুর। মারামারি করে।