সঞ্জয় সেনের মোহনবাগানকে ছুঁয়ে ফেলার চ্যালেঞ্জ ইস্টবঙ্গলের সামনে! লিগ শুরু হওয়ার পর প্রথম বার এই সুযোগ হাজির।
লাল-হলুদ কোচ ট্রেভর মর্গ্যানের ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ আবার স্বদেশীয় কলিন টোলের স্ট্র্যাটেজিকে টেক্কা দেওয়ার।
প্রথম বার আই লিগে খেলছে মিনার্ভা পঞ্জাব। চার ম্যাচে যারা জয়ের মুখ দেখেনি এখনও। ড্র করেছে একটি। এ রকম খাতায়-কলমে দুর্বল টিমের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে দু’টি বিষয় চিন্তা বাড়িয়েছে মর্গ্যানের। এক) লুধিয়ানার ঠান্ডা। দুই) যে মাঠে খেলা হবে, সেই গুরু নানক স্টেডিয়ামের খারাপ পরিস্থিতি।
লুধিয়ানায় পৌঁছনোর পর থেকেই বুকেনিয়া-মেহতাবরা ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। যেহেতু বিকেলে ম্যাচ রয়েছে, তাই কিছুটা হলেও ঠান্ডা কম হতে পারে ম্যাচের সময়। ফের বৃষ্টি নামলে অবশ্য আলাদা কথা। কিন্তু শনিবার সকালে স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে গিয়ে অবশ্য মাথায় হাত মর্গ্যান সহ পুরো ব্রিগেডেরই। তবে সেটা অন্য কারণে। খেলার বাইরে অন্য কাজে ব্যবহার হওয়ায় টার্ফের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে।
মাঠটা একেই অসমান। এবড়ো-খেবড়ো। তার উপর বড় বড় গর্তে ভর্তি। ফলে বলের বাউন্স ঠিক থাকছে না। ঠিক করে বল ধরা যাচ্ছে না। সঠিক নিশানায় পাস বাড়ানোও কঠিন হচ্ছে। মাঠটা বেশ ছোটও। লুধিয়ানা থেকে ফোনে মর্গ্যান বলছিলেন, ‘‘মাঠটা কেমন যেন। দেখে মনে হচ্ছে পিটিয়ে পিটিয়ে একেবারে ফ্ল্যাট করে দেওয়া হয়েছে। যাই হোক এ সব নিয়ে আমি ভাবছি না। আই লিগে যে কোনও পরিস্থতিতে, যে কোনও মাঠে গিয়ে খেলতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ হল তিন পয়েন্ট পাওয়াটা।’’ কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘মাঠের হাল খুব খারাপ। শনিবার তো মূল মাঠেই প্র্যাকটিস করলাম। গর্তে ভরা। এবড়ো-খেবড়ো। মাঠটা ছোটও। চোট লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। শুনলাম এখানে নাকি মোটর গাড়ির রেস ছিল। সে জন্যই বোধহয় গোটা মাঠে ছাইয়ের গুঁড়োর মতো কিছু পদার্থ পড়ে রয়েছে।’’ ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন নাকি স্টেডিয়ামের মাঠে প্যারেডও হয়েছে বলে খবর পেয়েছে লাল-হলুদ। সব মিলিয়ে পঞ্জাবের টিমের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ‘মাঠ আতঙ্কে’ ভুগছে মশাল বাহিনী।
জুনিয়র ছেলেদের নিয়ে মূলত মিনার্ভা টিমটা তৈরি করেছেন কর্তারা। সঙ্গে অবশ্য মননদীপ, জোয়েল সানডেদের মতো কিছু অভিজ্ঞ ফুটবলারকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের মাঠে এটাই প্রথম ম্যাচ মিনার্ভার। ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পঞ্জাব টিমের কোচ সুরিন্দর সিংহ বলে দেন, ‘‘ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচ। আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়েই নামছি।’’ টিমের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কলিন টল টিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কয়েক দিন আগে। একটা সময়ে ভারতের যুব ফুটবলের উন্নতির দায়িত্ব ছিল এই ব্রিটিশ কোচের হাতেই। টোলের যোগদানে স্বভাবতই টিমের আত্মবিশ্বাসও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া মননদীপ তাই বলছিলেন, ‘‘ঘরের মাঠে তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য আমরা সব শক্তি নিয়ে ঝাঁপাব।’’
ইস্টবেঙ্গল আবার আগের ম্যাচেই গত বারের চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়েছে। মর্গ্যানের টিম আত্মবিশ্বাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। যা খবর তাতে টিমে তেমন কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। তবে রবিন সিংহ গোলে ফিরলেও লাল-হলুদের বিদেশি স্ট্রাইকাররা কিন্তু গোল পাচ্ছেন না। টিমের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবও চোখে পড়ছে। তা সত্ত্বেও লাল-হলুদের পাখির চোখ মিনার্ভার মঞ্চ থেকে তিন পয়েন্ট সংগ্রহ। দেখার, বাগানকে আজ ছুঁতে পারে কি না বেঙ্গল?
রবিবারে আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : মিনার্ভা পঞ্জাব (লুধিয়ানা, ৪-৩৫)