সাইমন।
আই লিগ দোরগোড়ায়। প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকে ছেড়ে দেশে ফিরে গেলেন তাঁরই আনা অন্যতম সাপোর্ট স্টাফ সাইমন মল্টবি। আগের দিনও দলের প্র্যাকটিসে যাঁকে খোশমেজাজে দেখা গিয়েছিল।
সেই সাইমন বৃহস্পতিবার রাতে ক্লাবের কাউকে কিছু না জানিয়ে শহর ছেড়েছেন। কবে ফিরবেন তা-ও জানেন না কোচ।
মর্গ্যানকে মূলত যে জন্য ইস্টবেঙ্গলের ফিরিয়ে আনা সেই আই লিগ জিততে ম্যাচফিট টিম তৈরি করতে যে সময় ফিজিক্যাল ট্রেনারকে সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল লাল-হলুদ কোচের, সেই সময়ই তাঁর পাশে নেই গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট স্টাফ।
আনন্দবাজারের কাছ থেকে খবরটা শুনে ইস্টবেঙ্গলে স্পনসরদের প্রতিনিধি অমিত সেন বিস্ময় প্রকাশ করলেন। ‘‘তাই নাকি? এখনই ফোন করে খবর নিচ্ছি।’’ তবে ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘সাইমন দেশে ফিরে গিয়েছে বলে একটা মেল পাঠিয়েছে মর্গ্যান।’’
সাইমনকে নিয়ে যিনি এ মাসেই শহরে এসেছিলেন সেই মর্গ্যান ফোনে বললেন, ‘‘ওর পরিবারে কিছু সমস্যা হয়েছে। তাই বাড়ি ফিরে গিয়েছে। কবে আসবে তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আশা রাখি ও ফিরবে।’’
সাহেব কোচকে মনে করিয়ে দেওয়া হল, আট দিন পরেই তো আই লিগ অভিযান শুরু করবে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানে ব্রাজিলিয়ান ট্রেনার গার্সিয়া যখন পুরোদমে ফুটবলারদের তৈরি করে তুলে দিচ্ছেন সঞ্জয় সেনের হাতে, তখন লাল-হলুদ শিবির এ রকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাইমনের দেশে ফেরায় কতটা অসুবিধায় পড়বে? যার উত্তরে মর্গ্যানের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, ‘‘ও তো ফিজিক্যাল ট্রেনারই নয়। ফিজিও। অসুবিধা হবে না।’’
প্রশ্ন উঠছে, তা হলে এক জন নিছক ফিজিওকে কেন এত দিন ফিজিক্যাল ট্রেনার বলা হচ্ছিল ক্লাবের তরফে? এ ভাবে দেশে ফেরার জন্য কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না? ফুটবল সচিব জবাবে বলছেন, ‘‘আই লিগের আগে আমাদের টিমে এটা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। কিন্তু পরিবারে অসুবিধা বললে তো আর আটকে রাখতে পারি না।’’
কেন ফিরে গেলেন সাইমন জানতে চাইলে ইস্টবেঙ্গল কোচ ও কর্তা দু’পক্ষেরই মুখে কুলুপ। গতকালও মাঠে ফুটবলারদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি জিমে অর্ণব-মেহতাবদের চোট পরীক্ষা করে দেখেছেন সাইমন। এ দিন ফুটবলাররা মাঠে নেমে সহকারী কোচ ওয়ারেন হ্যাকেটকে দেখতে পেলেও সাইমনকে না দেখে কিছুটা অবাক হয়ে যান। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বললেন, ‘‘সকালে সাইমনকে দেখিনি। ক্লাবও ওর ব্যাপারে কিছু জানায়নি। শুধু বলা হয়েছিল উনি আজ আসেননি।’’ সন্তোষবাবু যদিও বলছেন, ‘‘আশা করছি দিন পনেরোর মধ্যে ও ফিরবে। না ফিরলে তখন কোচকে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।’’
দেখার সাইমন ফেরেন, না কোচকে ‘অন্য ব্যবস্থা’ করতে হয়। কিন্তু একটা প্রশ্ন তো থেকেই যাচ্ছে। সাইমন আসলে ইস্টবেঙ্গল টিমের কী? ফিজিক্যাল ট্রেনার, না ফিজিও?