হারের সঙ্গে স্লেজিংও হজম করল ইস্টবেঙ্গল

স্লেজিংয়ের জন্য অ্যাশলে ওয়েস্টউডকে অনেক বার সতর্ক করেছে ফেডারেশন। তাতেও অবশ্য সুনীল ছেত্রীদের কোচ বদলাননি। শনিবার বারাসতে যার শিকার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও।

Advertisement

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৮
Share:

শহরে পৌঁছেই ডংদের হার দেখলেন মেন্ডি।

বেঙ্গালুরু এফসি-১ (সুনীল ছেত্রী)
ইস্টবেঙ্গল-০

Advertisement

স্লেজিংয়ের জন্য অ্যাশলে ওয়েস্টউডকে অনেক বার সতর্ক করেছে ফেডারেশন। তাতেও অবশ্য সুনীল ছেত্রীদের কোচ বদলাননি।

Advertisement

শনিবার বারাসতে যার শিকার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছিল, উত্তেজিত ভাবে ইস্টবেঙ্গল বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে হাত-পা ছুড়ছেন বেঙ্গালুরু কোচ। সঙ্গে চলছিল মুখও। কী বলছিলেন ওয়েস্টউড? ‘‘শুরু থেকে শেষ আমাদের আজ অকথ্য গালাগাল করে গিয়েছেন উনি। চতুর্থ রেফারিকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রেফারিরাও ব্যবস্থা নেননি,’’ ম্যাচ শেষে বিপক্ষের ব্রিটিশ কোচের মুখোশ এ ভাবে খুলে দিলেন লাল-হলুদ কোচ। রাতের খবর, ফেডারেশনের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল।

কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেও কটাক্ষ করেন বেঙ্গালুরু কোচ। ‘‘আমাদের ডিফেন্সকে নিয়ে ওরা কোনও হোমওয়ার্ক করেনি। বুঝতে পারেনি সেখানে আই লিগের দ্রুততম ডিফেন্ডার ওসানো আছে।’’ কোচের স্লেজিংয়ের রেশ পড়ে এ দিন সুনীলদের মধ্যেও। জাতীয় দলে এক সঙ্গে খেলেন। অথচ ক্লাবের লড়াইয়ে মাঠে অর্ণব মণ্ডলের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন ভারত অধিনায়ক।

ঝামেলা, কথা কাটাকাটি, স্লেজিং— শনিবাসরীয় বিকেলে হাইপ্রোফাইল ম্যাচে ছিল অনেক কিছু। কিন্তু দিনের শেষে তাতে সবচেয়ে খারাপ হল ইস্টবেঙ্গলেরই। এ বারের আই লিগের প্রথম হার তো হলই, লিগ টেবলেও অনেকখানি পিছিয়ে পড়লেন র‌্যান্টিরা। সবে পাঁচ নম্বর ম্যাচ। কিন্তু তাতে কী? মাত্র নয় দলের হোম-অ্যাওয়ে টুর্নামেন্টে কিন্তু একটা ম্যাচের হার অনেকটাই পিছিয়ে দেয় যে কোনও দলকে।

এ দিন জিতে শুধু শীর্ষে থাকাই নয়, ইতিহাসের চাকাও উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিলেন সুনীলরা। ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হলেই ওয়েস্টউডের ঘোড়া থমকে যায়, সেই মিথ ভেঙে গেল। খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন লাল-হলুদের নতুন তারকা রিক্রুট বার্নার্ড মেন্ডি। হাফটাইমে তিনি বলছিলেন, ‘‘আমাদের দল তিন পয়েন্ট পেলে আমার মাঠে আসা সার্থক হবে।’’ খেলা দেখে বেরোনোর সময় ফরাসি ডিফেন্ডারের মুখ শুকনো। যা হওয়াই স্বাভাবিক। যে ভাবে রাহুল বেকের পাশ দিয়ে সুনীল হাঁটু দিয়ে গোলটা করে গেলেন তাতে মেন্ডি কেন, যে কোনও লাল-হলুদ সমর্থকেরই বুক কাঁপবে। সোমবার মাঠে নামছেন মেন্ডি। তার আগেই যে তাঁর দল চ্যাম্পিয়নের লড়াই থেকে অনেকখানি পিছিয়ে গেল। তা সে মেন্ডির কোচ মানুন, বা না মানুন।

ইস্টবেঙ্গল গোলের জন্য তাকিয়ে ছিল র‌্যান্টি আর ডংয়ের দিকে। আই লিগে এখনও ডংয়ের গোল নেই। তাঁর ফ্রি কিকের বিষও যেন উধাও। আর গোলে ঢুকছে না। এ দিন যেমন, বেঙ্গালুরু কিপার অমরিন্দর সিংহ সহজেই ডংয়ের ফ্রিকিক সেভ করলেন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে। বাগানের গ্লেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোল করছিলেন র‌্যান্টি। তিনিও এ দিন ব্যর্থ।

ঘরের মাঠে বিশ্বজিৎ শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছিলেন। র‌্যান্টির সঙ্গে জোয়াকিমকে জুড়ে দিয়ে একটা ফাটকা খেলতে চেয়েছিলেন। লাভ হয়নি। বেঙ্গালুরুর দুই স্টপার জন জনসন এবং ওসানোকে বেকায়দায় ফেলতে ৪-৩-৩ স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল। তা-ও মাঠে মারা গিয়েছে।

নিট ফল, বেঙ্গালুরু কোচের স্লেজিং এবং কটাক্ষ সত্ত্বেও মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হল বিশ্বজিতের টিমকে। আগুনে লাল-হলুদের কাছে যা কেউ প্রত্যাশা করে না!

ইস্টবেঙ্গল: রেহেনেশ, সামিদ (রাহুল), অর্ণব, বেলো, নারায়ণ, ডং, মেহতাব, রফিক, বিকাশ, জোয়াকিম (লোবো), র‌্যান্টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement