ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের একপেশে ওয়ান ডে সিরিজ জয় নিয়ে যখন তুমুল হইচই চলছে, ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারত ফেভারিট কি না তা নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন ভারত অধিনায়ক ঠারেঠোরে বলে দিলেন যে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরীক্ষাটাই হল না! ওয়ান ডে সিরিজে ভারতকে ন্যূনতম ঝামেলাতেও ফেলতে পারেনি অ্যালিস্টার কুকের টিম।
পরীক্ষাটা বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে কি না, সরাসরি বলেননি ধোনি। কিন্তু সিরিজ জিতে উঠে বলে দিয়েছেন, “আমাদের পরীক্ষায় পড়তে হয়নি, কারণ ম্যাচে শুরুর দিকে ফাস্ট বোলাররা ভাল বল করে দিয়েছে। যখন ওরা ভাল বল করতে পারেনি, তখন স্পিনাররা দায়িত্ব নিয়েছে। ব্যাটিংয়ে প্রথম ম্যাচ থেকেই আমরা উন্নতি করে চলেছি। পরীক্ষায় পড়া ভাল, কিন্তু সব সময় আপনি চাইবেনও না পরীক্ষায় পড়তে। কখনও কখনও সহজে ম্যাচ জিততেও আপনি চাইবেন। সব সময় শেষ ওভারে গিয়ে জিততে কেউ চাইবে না।”
কোথায়-কোথায় অপরীক্ষিত থেকে গেল ভারত?
ধোনি একটা উদাহরণ দিচ্ছেন—স্লগ ওভার বোলিং। ভারত অধিনায়কের মনে হচ্ছে, প্রতিপক্ষের হাতে উইকেট না থাকলে ভারতকে স্লগে চাপে ফেলা সম্ভব নয়। “এই সিরিজে যেমন স্লগ ওভার বোলিং নিয়ে কোনও পরীক্ষাতেই আমাদের পড়তে হয়নি। নতুন বলে আমাদের বোলিং ভাল হয়েছে। স্পিনাররা ভাল করেছে। ফিল্ডিং ভাল হয়েছে, দুর্ধর্ষ কিছু ক্যাচ দেখা গিয়েছে। পার্টনারশিপ হয়েছে। শুধু স্লগ ওভার বোলিংয়ে টিমটা কী অবস্থায় দেখে নেওয়া যায়নি। সেটা সম্ভবও নয় যদি না প্রতিপক্ষের হাতে যথেষ্ট উইকেট থাকে,” বিশ্লেষণ ক্যাপ্টেন কুলের।
ঘুরিয়ে তাচ্ছিল্য প্রদর্শনে ইংল্যান্ডকে টেস্ট সিরিজ জয়ের পাল্টা উপহার দেওয়া নয়, ভারত অধিনায়ক কথা বলতে বলতে নস্ট্যালজিকও হয়ে পড়েছেন। “আমি প্রথম যখন টিমকে নেতৃত্ব দিই, সেটা যেমন দারুণ ছিল, তেমন এখন যে টিমটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছি সেটাও সমান ভাল,” বলেছেন ধোনি। আর চব্বিশ বছর পর ইংল্যান্ডে দ্বিপাক্ষিক ওয়ান ডে সিরিজ জেতা নিয়ে ধোনির সংযোজন, “ক্রিকেটে চড়াই যেমন থাকে, উতরাইও থাকে। যারা যারা আমার টিমে আছে, সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ওদের সাহায্য ছাড়া, অবদান ছাড়া, সিরিজ জেতা এ ভাবে সম্ভব হত না।” ধোনি আরও স্বস্তিতে দুঃস্বপ্নের টেস্ট সিরিজের পর এমন একটা স্বপ্নের মুহূর্ত আসায়। বলছেন, “সবচেয়ে বড় কথা আমরা প্রথম ম্যাচ থেকেই উন্নতি করেছি। টেস্ট সিরিজটা আমাদের খুব কঠিন গিয়েছে। কিন্তু ফর্ম্যাটটা পাল্টে যাওয়ায় লাভও হয়েছে। ক্রিকেটের এই ফর্ম্যাটে মাঠে যেমন আপনাকে প্রভাব দেখাতে হবে, তেমনই নিজের শটও খেলতে হবে। ওপেনিং পার্টনারশিপটা নিয়ে একটু সমস্যা ছিল। লম্বা পার্টনারশিপ হচ্ছিল না। কিন্তু শেষ ম্যাচে সেটাও হল। ওপেনারদের যেটা এখন ধরে রাখতে হবে।”