কোনও ক্রিকেটারের একটা সিরিজ বা একটা মরসুম খারাপ গেলেই তাঁকে নিয়ে গেল গেল রব ওঠাটা নতুন কিছু নয়। ডেল স্টেইনকেও এই সময়টা পেরিয়ে আসতে হয়েছে।
গত মরসুমের কথা। তেমন ফর্মে ছিলেন না স্টেইন। তার পরই প্রশ্ন উঠে যায়, ক্রিকেটের স্টেইনগান কি গোলাগুলি বন্ধ করে দিলেন? এমনকী বিধ্বংসী পেস বোলারের কেরিয়ার শেষ হতে বসেছে, এমন আশঙ্কার কথাও প্রকাশ করা হয়েছিল তাঁর দেশের মিডিয়ায়।
সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে অবশ্য অনেকটা সময় লেগে গেল তাঁর। ২০১৪-র ডিসেম্বরে সেঞ্চুরিয়নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে ছ’উইকেট নিয়েছিলেন। এত দিন পর আবার চলল স্টেইনগান। সেই পয়া সেঞ্চুরিয়নেই। যেখানে এখানে আরও ২৫ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এ বার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ৫-৩৩-এর বোলিং-ই কেইন উইলিয়ামসনদের ২০৪ রানে হারিয়ে দেয়। প্রথম ইনিংসেও নিয়েছিলেন তিনটে উইকেট। যার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার বলছেন, ‘‘অন্যরা আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে বললেও আমি কখনওই তা ভুলেও ভাবিনি।’’
গত বছর ভারতে এসে মোহালি টেস্টের পর আর কুঁচকির চোটের জন্য খেলতে পারেননি। সেই সিরিজের প্রসঙ্গ টেনে এনে স্টেইন এ দিন বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু টেস্টে খেলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু শেষ চেষ্টা করেও পারিনি। তার পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শূন্য থেকে শুরু করে দ্রুত একশোয় পৌঁছনোর চেষ্টা করতে গিয়ে কাঁধের হাড় ভেঙে যায়। এটা আমার বয়সের জন্য নয়, দুর্ভাগ্য। আমি জানতাম, আমার মধ্যে ক্রিকেট কিন্তু তখনও ফুরিয়ে যায়নি।’’
সেই সিরিজের আট মাস পর টেস্টে নেমে চেনা মেজাজে ফিরে এবার স্টেইন বলছেন, ‘‘ক্রিকেট ভরপুর উপভোগ করি আমি। বিশেষ করে টেস্ট। আমার মনে হয় ক্রিকেটের জন্যই এই পৃথিবীতে এসেছি আমি।’’ আর অবসরের প্রশ্নে ৩৩ বছর বয়সি প্রোটিয়া তারকা বলছেন, ‘‘কখন ছাড়তে হবে, কবে থামতে হবে, আমি জানি না। কিন্তু যদি দেখি এখনও আমার বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানরা হিমশিম খাচ্ছে, এখনও যথেষ্ট গতি রয়েছে আমার বোলিংয়ে, তা হলে খেলা চালিয়ে যাব না কেন?’’
আর হাফ ডজন শিকার পেলেই দেশের সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেটশিকারী শন পোলককে ছুঁয়ে ফেলবেন। এখন এটাই লক্ষ্য স্টেইনের। বলেন, ‘‘সত্তর বছর বয়সে আর কিছু মনে থাকবে না। মনে থাকবে এই মুহূর্তটা। অস্ট্রেলিয়ায় জয়, ইংল্যান্ডে জয়, আর যদি একটা বিশ্বকাপ জিততে পারি, মনে থাকবে সেটাও।’’