(বাঁদিকে) বেন স্টোকস এবং মইন আলি। ছবি: টুইটার।
ভারতের বিরুদ্ধে শেষ বার টেস্ট খেলেছিলেন মইন আলি। সেটা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মন দেওয়ার জন্য তার পর টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার। প্রায় দু’বছর পর অবসর ভেঙে খেলবেন অ্যাশেজ সিরিজ়। কেন আবার ফিরলেন টেস্ট ক্রিকেটে? নিজেই জানিয়েছেন ফিরে আসার কারণ।
ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস ঘনিষ্ঠ বন্ধু মইনের। তাঁকে অবসর ভেঙে টেস্ট খেলার জন্য একাধিক বার অনুরোধ করেছেন নেতৃত্ব পাওয়ার পর। কিন্তু বন্ধুর আহ্বানে সাড়া দেননি মইন। তা হলে হঠাৎ কী ঘটল? অ্যাশেজ সিরিজ়ের আগে আবার টেস্ট খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন?
স্টোকসের অনুরোধ নয়। মইন টেস্টে ফিরলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের জন্য। তাঁর অনুরোধে নয়। তাঁর টেস্ট খেলার দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে। ম্যাকালাম কোচ হওয়ার পর থেকে ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেট খেলছে আগ্রাসী মেজাজে। ব্যাটিং, বোলিং সব ক্ষেত্রেই চেনা ছক ভেঙে প্রতিপক্ষ দলকে ম্যাচের শুরু থেকেই ভেঙেচুরে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে ক্রিকেটকে বলা হচ্ছে ‘বাজ়বল’। এই বাজ়বলের টানেই আবার টেস্ট খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংরেজ ব্যাটার। মইন বলেছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার অন্যতম কারণ হল অ্যাশেজ। এটা খুব বড় সিরিজ়। অ্যাশেজের অংশ হতে পারা একটা দারুণ ব্যাপার। তা ছাড়া আমাদের দল টেস্টেও এখন দারুণ উত্তেজক ক্রিকেট খেলছে। আগে যখন খেলতাম, তার থেকেও ভাল এখনকার সময়টা।’’
অবসর ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কি কারও পরামর্শ নিয়েছিলেন? মইন বলেছেন বন্ধু স্টোকসের কথা। ৩৫ বছরের ব্যাটার বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি স্টোকসির (স্টোকসকে এই নামে ডাকেন মইন) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, ব্যাটারদের কী ভাবে খেলতে বলে। স্টোকসি বলেছিল, ‘আমরা এখন যে ভাবে খেলছি, সেটা তোমার জন্য এক দম যথাযথ। খেললে তোমারও ভাল লাগবে।’ আসলে আমি ব্যাট করার সময় একটা গতিতে রান করতে ভাসবাসি।’’ তা হলে কি আপনাকে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে এ বার থেকে দেখা যাবে? মইন বলেছেন, ‘‘আমাকে অ্যাশেজের প্রথম দু’টি টেস্টের দলে রাখা হয়েছে। আপাতত এটুকুই ভাবছি। দেখা যাক কী হয়।’’
ভারতের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলার পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলেননি মইন। দীর্ঘ বিরতির জন্য টেস্ট খেলতে সমস্যা হবে না বলে মনে করেন আত্মবিশ্বাসী মইন। ইংল্যান্ডের নির্বাচকরাও তাঁর উপর আস্থা রাখায় খুশি তিনি। চোটের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দু’টি টেস্টে খেলতে পারবেন না জ্যাক লিচ। তাঁর পরিবর্ত হিসাবে মইনকে দলে নিয়েছেন ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ড টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে পারেনি। যদিও ম্যাকালাম দায়িত্ব নেওয়ার পর গত এক বছরে ১৩টির টেস্ট খেলে ১১টি জিতেছেন স্টোকসরা। ম্যাকালামের আগ্রাসী ক্রিকেটের দর্শন ঢেকে দিয়েছে জো রুটের নেতৃত্বাধীন দলের ব্যর্থতা। ম্যাকালাম কোচ হিসাবে এবং স্টোকস অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঘরে-বাইরে জিততে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। ম্যাকালামের নতুন ক্রিকেট দর্শন আকৃষ্ট করেছেন মইনকে। তিনি বলেছেন, ‘‘ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করার মতো দক্ষতা কখনও ছিল না আমার। আমি নিশ্চিত কোচ এবং অধিনায়ক জানে আমার থেকে কী পেতে পারে। বেশি মেডেন ওভার খেলা পছন্দ করি না। যেমনই বল পাই খেলার চেষ্টা করি। ব্যাট হাতে চাপ তৈরি করার চেষ্টা করি।’’
শুধু ব্যাটার নন। অফ স্পিনার হিসাবেও যথেষ্ট কার্যকর মইন। আশা করছেন, টেস্ট ক্রিকেটে ফেরাটা উপভোগ করতে পারবেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৬৪টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা।