শোয়েব-শামি টুইট-যুদ্ধে শোরগোল ক্রিকেট দুনিয়ায়। —ফাইল চিত্র
গত কয়েক দিন ধরে মহম্মদ শামি ও শোয়েব আখতারের টুইট-যুদ্ধ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই বিতর্কে ঢুকে পড়েছেন আরও অনেকে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের হারের পরে হঠাৎ কেন আখতারকেই খোঁচা দিতে গেলেন শামি? এর পিছনে কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে?
বিতর্কের সূত্রপাত আখতারের একটি ভিডিয়ো ঘিরে। ইংল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ভারত ছিটকে যাওয়ার পরে একটি ইউটিউব ভিডিয়োতে ভারতীয় দলের ভুলভ্রান্তি তুলে ধরেছিলেন আখতার। তখন শামিকে দলে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘ভারতের হারের জন্য ম্যানেজমেন্ট অনেকটাই দায়ী। হঠাৎ করে কোথা থেকে শামিকে তুলে নিয়ে চলে এল। দলে এত ভাল বোলার ছিল। তাদের সরিয়ে কী ভাবে দলে জায়গা পায় শামি? এ রকম সিদ্ধান্ত নিলে হারতেই হবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে ভারত ছিটকে যাওয়ার পর থেকে এ বারের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেননি শামি। এ বারের বিশ্বকাপের দলেও তাঁকে প্রথমে রিজার্ভ হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা ও দীপক চাহার চোট পাওয়ায় শামিকে দলে নেওয়া হয়। এ বারের বিশ্বকাপে ছ’টি ম্যাচ ৬ উইকেট নিয়েছেন শামি। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে আরশদীপ সিংহ ও হার্দিক পাণ্ড্যর পরে রয়েছেন তিনি।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের হারের পরে একটি টুইটও করেছিলেন শামি। একটি ভগ্ন হৃদয়ের ইমোজি দিয়ে টুইট করেছিলেন আখতার। পাকিস্তান ফাইনালে হারার পরে সেটি শামি রিটুইট করেন। লেখেন, ‘দুঃখিত বন্ধু। একেই বলে কর্ম।’ সঙ্গে তিনটি ভগ্ন হৃদয়ের ইমোজি দিয়েছেন বাংলার জোরে বোলার। শামির এই টুইটের পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পাল্টা টুইট করেছেন আখতার। হর্ষ ভোগলের একটি টুইটের উল্লেখ করেছেন তিনি। হর্ষ সেখানে লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের প্রশংসা করতেই হবে। বোর্ডে ১৩৭ রান নিয়ে খুব কম দলই ওদের মতো লড়াই করতে পারত। বিশ্বের সেরা বোলিং আক্রমণ ওদের।’’ এই টুইটের উল্লেখ করে আখতার লিখেছেন, ‘‘একেই বলে সংবেদনশীল টুইট।’’ অর্থাৎ, তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে শামি সংবেদনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।
শামিকে বিতর্ক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি। বলেছেন, ‘‘শামি এখনও জাতীয় দলে খেলে। এই ধরনের বিষয় ওর এড়িয়ে চলা উচিত।’’ আফ্রিদি আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের দিকে সবাই নজর রাখে। আমরা কী করছি, সেটা দেখে। তাই আমাদের এমন কিছু করা বা বলা উচিত নয় যাতে দু’দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়। হিংসা বা বিদ্বেষ ছড়ানো আমাদের কাজ নয়।’’ ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় নিয়ে আরও জোর দিয়েছেন আফ্রিদি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সম্পর্ক ভাল করতে হবে। ক্রিকেট তার একটা মাধ্যম। আমরা একে অপরের সঙ্গে যত বেশি খেলব তত ভাল হবে দু’দেশের সম্পর্ক।’’ এ ভাবে দু’দেশের ক্রিকেটাররা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ ওয়াসিম আক্রম। বিতর্ক না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।