অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারকে আউট করে উল্লাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রবি শাস্ত্রী। ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়। একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন তাঁরা। অন্য দিকে হরভজন সিংহ ও এস শ্রীসন্থ। আইপিএলে তাঁদের চড়কাণ্ড এখনও মাঝেমধ্যেই খবরে উঠে আসে। ওভাল মিলিয়ে দিয়েছে তাঁদের। এই চার প্রাক্তনকেই দেখা যাচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায়।
সৌরভ ও শাস্ত্রীর সমস্যার শুরু ২০১৬ সালে। তখন বিসিসিআইয়ের নির্বাচক কমিটিতে ছিলেন সৌরভ। ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার আবেদন করেছিলেন শাস্ত্রী। কিন্তু তিনি যখন কমিটির সামনে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন তখন সেখানে ছিলেন না সৌরভ। পরে সেই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শাস্ত্রী। পাল্টা সৌরভ জানিয়েছিলেন, শাস্ত্রীর যে সময়ে ইন্টারভিউ দেওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক পরে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন তিনি। তাই বেরিয়ে গিয়েছিলেন সৌরভ। ইন্টারভিউ শেষে শাস্ত্রীর বদলে কোচ করা হয় অনিল কুম্বলেকে।
পরে কুম্বলে পদত্যাগ করার পরে শাস্ত্রীকেই কোচ করা হয়। তখনও সৌরভের সঙ্গে তাঁর বিবাদ হয়েছিল। কখনও ঘনিষ্ঠ মহলে, কখনও সংবাদমাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে বলেছেন তাঁরা। কিন্তু ২০২১ সালে শাস্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কোনও বিবাদ নেই।
রবি শাস্ত্রী (বাঁ দিকে), সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হিন্দি ধারাভাষ্য দিতে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে সৌরভ ও শাস্ত্রীকে। কথা বলতে বলতে শাস্ত্রীর কাঁধে হাত দিতেও দেখা গিয়েছে সৌরভকে। একে অপরের বিশ্লেষণের প্রশংসা করেছেন তাঁরা। দেখে মনে হয়েছে, কোনও দিনই যেন তাঁদের মধ্যে কোনও বিবাদ হয়নি।
হিন্দি ধারাভাষ্যে দেখা যাচ্ছে হরভজন ও শ্রীসন্থকে। ২০০৮ সালের আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলার সময় পঞ্জাব কিংসের (তখন কিংস ইলেভেন পঞ্জাব) শ্রীসন্থকে চড় মেরেছিলেন ভাজ্জি। মাঠের মধ্যেই হাউহাউ করে কেঁদেছিলেন শ্রীসন্থ। এই ঘটনার জন্য হরভজনকে সেই মরসুমের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছিল।
হরভজন সিংহ (বাঁ দিকে), এস শ্রীসন্থ (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র
পরে অবশ্য অনেক বার শ্রীসন্থের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন হরভজন। তিনি জানিয়েছেন, রাগের মাথায় চড় মেরেছিলেন। কিন্তু সেটা করা উচিত হয়নি তাঁর। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দেখাননি তিনি। শ্রীসন্থও জানিয়েছেন, হরভজনকে নিজের বড় দাদার মতো মনে করেন তিনি। ভাজ্জির বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একসঙ্গে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার। হাসি-মস্করা করছেন। জড়িয়ে ধরছেন। বোঝা যাচ্ছে, ১৫ বছর আগের সেই ঘটনা ভুলে গিয়েছেন তাঁরা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল মিলিয়ে দিয়েছে তাঁদের।