প্রথম দিনের শেষেই বাংলা শিবির যে পিছিয়ে গিয়েছে, তা মেনে নিয়েছিলেন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। ছবি: পিটিআই
রঞ্জি ফাইনালের প্রথম ওভারে উইকেট হারিয়েছিল বাংলা। যত সময় এগিয়েছে, তত সৌরাষ্ট্র ম্যাচের দখল নিয়েছে। প্রথম দিনের শেষেই বাংলা শিবির যে পিছিয়ে গিয়েছে, তা মেনে নিয়েছিলেন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। দ্বিতীয় দিনেও বাংলা ম্যাচে ফিরতে পারেনি। এত কিছুর পরেও ইডেনে খেলা দেখতে আসা হাজার দুয়েক দর্শকের উৎসাহে কোনও ঘাটতি দেখা গেল না। দিনের শেষে ১৪৩ রানে এগিয়ে সৌরাষ্ট্র।
প্রথম দিন যত দর্শক ইডেনে খেলা দেখতে এসেছিলেন, শুক্রবার সেই সংখ্যা খানিকটা কমে যায়। বাংলার ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং বল হাতে উইকেট না পাওয়াই কারণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও এক দর্শক প্রায় প্রতি বলে শঙ্খধ্বনি দিলেন। দ্বিতীয় দিনে গুটি কয়েক উইকেট নেয় বাংলা। কিন্তু দর্শকরা চিৎকার করছিলেন তাতেও। উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বাংলার বোলাররা এ দিনও ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারছিলেন না। কখনও মনেই হচ্ছিল না যে তাঁরা উইকেট নিতে পারেন। সৌরাষ্ট্রের ব্যাটাররা অনায়াসে খেলে যাচ্ছিলেন ঈশান পোড়েল, মুকেশ কুমার, আকাশ দীপদের। যে পিচে জয়দেব উনাদকটদের খেলতেই পারছিলেন না বাংলার ব্যাটাররা, সেই পিচে বাংলার পেসারদের বলে কোনও বিষ দেখা গেল না।
গোটা মরসুমে উইকেট নিয়েছেন আকাশ। ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। কিন্তু ফাইনালে নিজের ছন্দে পাওয়া গেল না তাঁকে। ঈশান প্রথম দিন লাইন, লেংথ ঘেঁটে ফেলেছিলেন। দ্বিতীয় দিন বল করতে এসে একটি উইকেট নিয়ে বিরাট হুঙ্কার দিলেন তিনি। সকাল থেকে দেড় ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে দেওয়া আগের দিনের রাতপ্রহরী চেতন সাকারিয়ার উইকেট নিয়ে বাংলা দল যে ভাবে উৎসব করল তা চোখে লাগার মতো। দিনের শেষে ঈশানের ঝুলিতে ২ উইকেট।
শুধু বোলাররা নন, বাংলার দুর্দশার কারণ ফিল্ডাররাও। স্লিপে ক্যাচ পড়ল, শাহবাজ় আহমেদ বাউন্ডারিতে সহজ ক্যাচ ফেললেন। দিনের শুরুতে মুকেশের বল নড়াচড়া করছিল। সেই সামান্য সময়টা কাটিয়ে দেন ওপেনার হারভিক দেসাই এবং রাতপ্রহরী চেতন। বল ছাড়তে শুরু করেন তাঁরা। বাংলার বোলাররা কোনও ভাবেই তাঁদের খেলতে বাধ্য করতে পারছিলেন না। শুরুর সময়টা কাটিয়ে দিতেই ইডেনে ব্যাট করা সহজ হয়ে যায়। প্রথম দিন যেমন শাহবাজ় এবং অভিষেক পোড়েল ব্যাট করার সময় হয়েছিল। দ্বিতীয় দিন তেমন অর্ধশতরান করলেন হারভিক, অর্পিত ভাসাভাড়া এবং চিরাগ জানি। বাংলা শিবির থেকে ধীরে ধীরে ম্যাচটা নিয়ে চলে যাচ্ছেন তাঁরা।
ইডেনে ঢোকার মুখে বিরাট হোর্ডিং, ফুল দিয়ে সাজানো গেট। বাংলার প্রাক্তন রঞ্জি জয়ীদের মাঠে আমন্ত্রণ জানানো। সিএবি সব ব্যবস্থাই করেছে। কিন্তু সেই সবই এখন ম্লান হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সময়ের সঙ্গে রঞ্জি ট্রফি ছোঁয়ার সম্ভাবনাও কমে যাচ্ছে যে। শুক্রবার ইডেনে চা বিরতির পর আলো কমে যাওয়ায় খেলা শুরু হতে দেরি হয়। মনোজ তিওয়ারির দলের রঞ্জি জয়ের আশার আলোও কমছে সেই সঙ্গে।