বিভিন্ন দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগগুলিতে সুযোগ কমছে বাবরদের। ফাইল ছবি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টি-টোয়েন্টি লিগগুলিতে বাড়ছে ভারতের বিনিয়োগ। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের দাবি, ভারতীয় সংস্থাগুলি বিভিন্ন দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি কিনে নেওয়ায় পাক ক্রিকেটারদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কমেছে।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগ বা দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগের বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকানা রয়েছে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির হাতে। সেটাই চিন্তা বাড়িয়েছে পাক ক্রিকেট কর্তাদের। গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগের নিলামে পাকিস্তানের এক জন ক্রিকেটারও দল পাননি। উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার ছ’টি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানাই রয়েছে আইপিএলের ছ’টি ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের হাতে। প্রায় একই অবস্থা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগেও। সেখানকার ছ’টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মধ্যে পাঁচটিরই মালিকানা ভারতীয় সংস্থার হাতে। আমিরশাহির লিগে সুযোগ পেয়েছেন পাকিস্তানের মাত্র এক জন ক্রিকেটার। আমেরিকার একটি সংস্থার হাতে রয়েছে ‘ডেসার্ট ভাইপার’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকানা। সেই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি দলে নিয়েছে শুধু আজম খানকে।
দক্ষিণ আফ্রিকা বা আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের উপর কোনও সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের সিরিজ রয়েছে নিউজ়িল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে। পাক ক্রিকেটারদের দু’দেশের টি-টোয়েন্টি লিগে দল না পাওয়ার যা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন পিসিবি কর্তারা। যদিও তাঁদের দাবি, পাক ক্রিকেটারদের দল না পাওয়ার প্রধানতম কারণ ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির ভারতীয় মালিকানা। পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সুযোগ করে দিতে অন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন রামিজ রাজারা। বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে নতুন সমঝোতায় যেতে চান তাঁরা। পাকিস্তান সুপার লিগে খেলার ছাড়পত্র দিলে সম সংখ্যক ক্রিকেটারকে তাদের দেশের লিগে খেলার ছাড়পত্র দেবে পিসিবি।
সম্প্রতি পাকিস্তানের দু’জন ক্রিকেটার অন্য দেশের ভারতীয় মালিকানার ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে খেলেছেন। বার্বাডোজ় রয়্যালসের হয়ে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন আজম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকানা রয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের হাতে। বার্বাডোজ় রয়্যালসেরই মহিলা দলে খেলেছেন ফতিমা সানা। তার আগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেছেন ইয়াসির শাহ, সাদাব খান এবং মহম্মদ হাসনাইন। এই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিকানা রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষের হাতে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের পর পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় আইপিএলের দরজাও। আগামী দিনেও বাবর আজমদের জন্য আইপিএলের দরজা খোলার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বিভিন্ন দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগগুলিতে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটের জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করেন মইন খান। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘ওরা অনেকেই বেশ ভাল খেলোয়াড়। তবুও ওরা যথেষ্ট আয় করার সুযোগ পাচ্ছে না। এর পিছনে রাজনৈতিক এবং অন্য কিছু কারণ রয়েছে। ওদের জন্য খারাপ লাগে। ওরা ক্রিকেটের মান বাড়াতে পারত।’’
পাক ক্রিকেট কর্তারা চাইছেন, পিএসএলে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করতে। তাতে বিদেশি ক্রিকেটাররা আরও বেশি পিএসএলে খেলতে আগ্রহী হবে। সেখানেও রয়েছে সমস্যা। পাকিস্তানের টাকার সঙ্গে আমেরিকার ডলারের বিনিময় মূল্য। আমেরিকার ডলারের নিরিখে যে পরিমাণ পারিশ্রমিক বাড়ানো দরকার, তা পাকিস্তানের টাকার মূল্যে বিপুল। অন্য দেশের টি-টোয়েন্টি লিগগুলিতে বাবরদের খেলার সুযোগ করে দেওয়াই এখন চ্যালেঞ্জ রামিজদের কাছে।