(বাঁ দিকে) যশপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
এ বারের বিশ্বকাপে টানা ১০টি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল ভারতীয় দল। ফাইনালে হারতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কাছে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আয়ারেরা ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন প্রতি ম্যাচে। প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য দেওয়া বা রান তাড়া করার ক্ষেত্রে প্রতি ম্যাচেই মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন তাঁরা। ফলে কোনও ভাবেই এই দলকে ব্যর্থ বলা যাবে না। ভারতের আরও দুই ক্রিকেটার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন দলের এই সাফল্যে। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের নিয়ন্ত্রণে রেখে রোহিত, কোহলিদের কাজ সহজ করে দিয়েছেন তাঁরা। বলা যায় খেলা ঘোরানো খেলা খেলেছেন তাঁরা।
যশপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ শামি। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এ বারের বিশ্বকাপের সেরা জোরে বোলিং জুটি। বুমরা-শামি জুটি নিয়েছেন ৪৪টি উইকেট। অর্থাৎ, ১১টি ম্যাচে প্রতিপক্ষের মোট ১১০ উইকেটের ৪০ শতাংশই দুই জোরে বোলারের দখলে। প্রথম চারটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি শামি। তিনি খেলেছেন ৭টি ম্যাচ। তাতেই প্রতিপক্ষের মোট ৭০টি উইকেটের মধ্যে ২৪টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ ৩৮.৩৩ শতাংশ উইকেট একাই নিয়েছেন বাংলার জোরে বোলার। শামিই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। খুব পিছিয়ে নেই বুমরাও। তিনি পেয়েছেন ২০টি উইকেট।
বিশ্বকাপে বোলারদের পরিসংখ্যান দেখলে বুমরা এবং শামি দু’জনেই শীর্ষে রয়েছেন। উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে শামি। আর ওভার প্রতি কম রান খরচ করার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বুমরা। শীর্ষে রয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি ওভার প্রতি খরচ করেছেন ৩.৪০ রান। ভারতের অভিজ্ঞ অফস্পিনার মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তা-ও চেন্নাইয়ের স্পিন সহায়ক উইকেটে। আর বুমরা ১১টি ম্যাচে ৯১.৫ ওভার বল করে ওভার প্রতি খরচ করেছেন ৪.০৬ রান। এখনকার সাদা বলের ক্রিকেটে যা অত্যন্ত কঠিন। কারণ এখন উইকেট তৈরি হয় মূলত ব্যাটারদের কথা ভেবে। ওভার প্রতি ৬ রানের কাছাকাছি ওঠা খুব স্বাভাবিক। তবু ভারতের উইকেটেও কৃপণ বোলিং করেছেন বুমরা। এই ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে শামি। তিনি ৪৮.৫ ওভারে রান দিয়েছেন ৫.২৬ করে। এখনকার সাদা বলের ক্রিকেটে যা মোটেও বেশি নয়।
বুমরা-শামি জুটির দাপট কেবল বিশ্বকাপের ম্যাচগুলিতে প্রতিপক্ষ দলগুলিকেই চাপে রাখেনি। একই সঙ্গে দলের তৃতীয় জোরে বোলার মহম্মদ সিরাজের অফ ফর্মকেও ঢেকে দিয়েছে অনেকটা। সেপ্টেম্বরের এশিয়া কাপেও বেশ ভাল ফর্মে ছিলেন সিরাজ। কিন্তু বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট তুলতে পারছেন না। আবার প্রচুর রানও দিচ্ছেন। সেই দুর্বলতা কোনও ম্যাচেই বুঝতে দেননি বুমরা এবং শামি। বিশ্বকাপের ভারতীয় দলের দাপটের নেপথ্যে এই দুই জোরে বোলারের অবদান অস্বীকার করা যাবে না কোনও ভাবেই।