CSK vs DC match IPL 2025

হারের হ্যাটট্রিক চেন্নাইয়ের, ঘরের মাঠে আবার লজ্জা ধোনিদের, পর পর তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে দিল্লি

আইপিএলের শুরু থেকেই চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে দুর্গ তাদের ঘরের মাঠ। সব দলের মধ্যে ঘরের মাঠে তাদের নজিরই সবচেয়ে ভাল। সেই চিপকেই আবার একটি ম্যাচে হারল চেন্নাই। বেঙ্গালুরুর কাছে হারের পর আরও এক বার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৩
Share:
cricket

ফিরছেন চেন্নাইয়ের কনওয়ে (হলুদ জার্সি)। উল্লাস দিল্লির ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই।

আইপিএলের শুরু থেকেই চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে দুর্গ তাদের ঘরের মাঠ। সব দলের মধ্যে ঘরের মাঠে তাদের নজিরই সবচেয়ে ভাল। সেই চিপকেই আবার একটি ম্যাচে হারল চেন্নাই। বেঙ্গালুরুর কাছে হারের পর আরও এক বার। দিল্লির তোলা ১৮৩/৬-এর জবাবে চেন্নাই থামল ১৫৮/৫ রানে। হার ২৫ রানে। ব্যাটিং এবং বোলিং, দুই বিভাগেই শনিবার চেন্নাইকে অত্যন্ত সাদামাঠা দেখিয়েছে। পাঁচ বার আইপিএল জয়ীদের থেকে যা প্রত্যাশিত নয়। ১৬ বছর পর আইপিএলের প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতল দিল্লি। চেন্নাইয়ের মাঠে জিতল ১৫ বছর পর।

Advertisement

চেন্নাইয়ের পিচ এমনিতেই মন্থর। তাই পরে ব্যাট করতে নেমে ১৮৪ রান তোলা সহজ ছিল না। দীর্ঘ দিন পর ওপেনিং জুটিতে ফিরেছিলেন রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে। তবে এই আইপিএলে যে ভাবে চেন্নাইকে ওপেনিং জুটি ভোগাচ্ছে, তা শনিবারও অব্যাহত। দ্বিতীয় ওভারেই বাংলার মুকেশ কুমারের বলে তাঁর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাচিন। আশা ছিল রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে নিয়ে। তিনিও ব্যর্থ। পাঁচ রান করে মিচেল স্টার্কের বলে জেক ফ্রেজার ম্যাকগার্কের হাতে ক্যাচ দেন।

২০ রানে ২ উইকেট হারানো চেন্নাইয়ের সেই সময়ে দরকার ছিল বড় একটা জুটি। সেটাই বা হল কোথায়! দলকে যিনি ভরসা দিতে পারতেন, সেই কনওয়ে ফিরে গেলেন ১৩ রানে। চারে নামা বিজয় শঙ্কর চেন্নাইয়ের রানের গতিই কমিয়ে দিলেন। শুরু থেকেই এত বেশি বল খেলতে লাগলেন যে আস্কিং রেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকল।

Advertisement

দ্বিতীয় বলেই ফিরে যেতে পারতেন শঙ্কর। স্টার্কের ইয়র্কার তাঁর জুতোয় আছড়ে পড়া সত্ত্বেও অভিষেক পোড়েলের আপত্তিতে দিল্লি রিভিউ নেয়নি। অভিষেক বোঝাতে থাকেন, বল আগে ব্যাটে লেগেছে। রিপ্লে-তে স্পষ্ট দেখা যায় বল আগে শঙ্করের জুতোয় লেগেছে। এর পরে শঙ্করের গোটা দুয়েক ক্যাচও ছাড়ে দিল্লি। এত বার জীবন পেয়েও তা কাজে লাগিয়ে দলকে জেতাতে পারেননি চেন্নাই ব্যাটার।

শিবম দুবে (১৮), রবীন্দ্র জাডেজা (২) ব্যর্থ হওয়ার পর সাতে ব্যাট করতে নামেন ধোনি। তখনও খেলার ৯.২ ওভার বাকি। পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেল, ২০২৩ সালের পর এই প্রথম এত আগে (বল বাকি থাকার হিসাবে) নামলেন ধোনি। তিনি যতগুলি ম্যাচে সাতে ব্যাট করতে নেমেছেন, তার মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ ম্যাচে জিতেছে চেন্নাই। শনিবারের পর সেই পরিসংখ্যান আরও খারাপ হতে বাধ্য।

ধোনি-শঙ্কর ক্রিজ়ে থাকার সময় শুরুতে চেন্নাইয়ের খেলা দেখে মনেই হচ্ছিল না তাদের জেতার কোনও ইচ্ছা রয়েছে। দু’জনেই কেউই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে পারছিলেন না। ধোনিকে দেখে খারাপ লাগতে বাধ্য। ১০০-র বেশি রান বাকি থাকা অবস্থায় খেলতে নামলে যে ধরনের খেলা মানুষ প্রত্যাশা করে, তার ধারেকাছেও ছিলেন না ধোনি। স্পিন এবং পেস, দু’ধরনের বলেই তাঁর দুর্বলতা লক্ষ করা যাচ্ছিল। এক সময় ‘থ্রিডি’ ক্রিকেটার শঙ্করের কথা আরও কম বলা গেলে ভাল। ৪৩ বলে অর্ধশতরান করেন, টি-টোয়েন্টির যুগে এই স্ট্রাইক রেট ভাবাই যায় না। টি-টোয়েন্টিতে এর থেকেও কম বলে শতরান হয়ে যায়! দু’জনে মিলে প্রায় ১০ ওভার ব্যাট করলেন। তা সত্ত্বেও জিততে পারল না চেন্নাই। শঙ্কর অপরাজিত থাকলেন ৬৯ রানে। ধোনি করলেন ৩০ রান। শেষ দিকে তবু একটু আগ্রাসী খেলার চেষ্টা করেছিলেন। তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

তার আগে, টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লির অধিনায়ক অক্ষর পটেল। ম্যাচের আগের দিন জল্পনা বাড়িয়েছিলেন চেন্নাইয়ের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসি। জানিয়েছিলেন, শনিবারের ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে পারেন ধোনি। কারণ রুতুরাজের কনুইয়ে চোট। তবে টসের সময় আশাভঙ্গ হল ধোনি-সমর্থকদের। টস করতে নামেন রুতুরাজই।

চেন্নাইয়ের মাঠে দুপুরে খেলা থাকলে আগে ব্যাট করাই প্রথা। আগের ২০টি ম্যাচের ১৮টিতেই আগে ব্যাট করেছে টসে জয়ী দল। দিল্লির শুরুটা ভাল হয়নি। খলিল আহমেদের প্রথম চারটি বল কোনও মতে খেলে দেওয়ার পর পঞ্চম বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের হাতে ক্যাচ দেন জেক ফ্রেজ়ার ম্যাকগার্ক।

দিল্লি এ দিন পায়নি ফাফ ডুপ্লেসিকে। অক্ষর জানান, ডুপ্লেসির শরীর খারাপ। ফলে ম্যাকগার্কের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন কেএল রাহুল। অভিষেকের সঙ্গে জুটি বেধে তিনিই দলের হাল ধরেন। অভিষেক বেশ আগ্রাসী খেলেন। মুকেশ চৌধুরির একটি ওভার থেকে ১৯ রান নেন। তবে পাওয়ার প্লে-তে বেশি রান তুলতে পারেনি দিল্লি।

সপ্তম ওভারে জাডেজা তুলে নেন অভিষেককে (৩৩)। চারে নামা অক্ষর প্রথম বলেই জাডেজাকে ছয় মারলেও রাহুলের সঙ্গে লম্বা জুটি গড়তে পারেননি। একটা দিক রাহুল ধরে রাখলেও অপর দিক থেকে উইকেট পড়ছিল। শেষ দিকে এসে ট্রিস্টান স্টাবস (১২ বলে অপরাজিত ২৪) কিছুটা চেষ্টা করেন। শেষ ওভারে রাহুলও ফিরে যান। চেন্নাইয়ের সফলতম বোলার খলিল ২৫ রানে ২ উইকেট নেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement