সুনীল নারাইনের (বাঁ দিকে) ব্যাট পরীক্ষা করে দেখছেন আম্পায়ার। মাঝে দাঁড়িয়ে অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। ছবি: সমাজমাধ্যম।
লজ্জা বেড়েই চলেছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। মঙ্গলবার পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ১১২ রান তাড়া করতে নেমে ১৬ রানে হেরেছে তারা। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রান করে জিতেছে পঞ্জাব। সেই হারের ধাক্কার পাশাপাশি ব্যাট পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন কলকাতার দুই ক্রিকেটার। ফলে লজ্জা আরও বেড়েছে।
এ বারের আইপিএলে ক্রিকেটারদের ব্যাটের মাপ পরীক্ষা করে দেখছেন আম্পায়ারেরা। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চাইলে খেলার মাঝেই তা করতে পারেন তাঁরা। আম্পায়ারদের কাছে একটি নির্দিষ্ট মাপ রয়েছে। সেই মাপের ফাঁক দিয়ে ব্যাট মসৃণ ভাবে যাচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখছেন আম্পায়ারেরা। এ বারই এই নিয়ম চালু হয়েছে আইপিএলে। সেই পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হয়েছেন কলকাতার দুই বিদেশি সুনীল নারাইন ও অনরিখ নোখিয়া।
কেকেআরের ইনিংস শুরু হওয়ার আগে দেখা যায়, ডাগআউটের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাটারদের ব্যাট পরীক্ষা করছেন আম্পায়ার সৈয়দ খালিদ। নারাইন যে ব্যাট দেন তা নির্দিষ্ট মাপের মধ্যে দিয়ে মসৃণ ভাবে যাচ্ছিল না। একটা জায়গায় গিয়ে আটকে যাচ্ছিল। আম্পায়ারের সঙ্গে কিছু কথা বলেন নারাইন। আম্পায়ার বার বার পরীক্ষা করে দেখেন। কিন্তু প্রতি বার এক ঘটনা ঘটে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কেকেআরের অঙ্গকৃশ রঘুবংশীর ব্যাট অবশ্য নির্দিষ্ট মাপের মধ্যে দিয়ে মসৃণ ভাবে চলে যায়। তার পরেই নারাইনকে ব্যাট বদল করতে বলেন আম্পায়ার। নতুন ব্যাট অবশ্য নির্দিষ্ট মানের মধ্যে দিয়ে যায়। সেই ব্যাট নিয়ে খেলতে নামেন নারাইন।
কেকেআরের ইনিংসের একেবারে শেষ দিকে নোখিয়ার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। তিনি যে ব্যাট নিয়ে নেমেছিলেন, তা নির্দিষ্ট মাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল না। ফলে মাঠেই ব্যাট বদলাতে হয় নোখিয়াকে। এ বারের আইপিএলে প্রথম এই ঘটনা ঘটল। কোনও দলের দুই ক্রিকেটার ব্যাট পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন। ফলে লজ্জা আরও বাড়ল কেকেআরের।
বোর্ডের নিয়ম, কোনও ব্যাট চওড়ায় ৪.২৫ ইঞ্চি বা ১০.৮ সেন্টিমিয়ারের বেশি হতে পারবে না। ব্যাট ২.৬৪ ইঞ্চি বা ৬.৭ সেন্টিমিটারের বেশি মোটা হতে পারবে না। ব্যাটের ধার ১.৫৬ ইঞ্চি বা ৪ সেন্টিমিটারের বেশি হতে পারবে না। ব্যাটের ওজন ব্যাটারেরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী বাড়াতে বা কমাতে পারবেন। তবে বাকি তিনটি মাপ বোর্ডের দেওয়া মাপের থেকে বেশি কোনও ভাবেই করা যাবে না।
আম্পায়ারেরা জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ম্যাচের আগে সাজঘরে ব্যাটারদের মাপ পরীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। প্রত্যেক ব্যাটার তাঁদের একটি করে ব্যাট আম্পায়ারদের কাছে জমা দেন। তা দেখে আম্পায়ার সম্মত হলে সেই ব্যাট দিয়ে খেলা যায়। তা হলে কেন আবার মাঠের মধ্যে ব্যাট পরীক্ষা করা হচ্ছে? জবাবে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক আম্পায়ার জানিয়েছেন, পরীক্ষার জন্য যে ব্যাট জমা দেওয়া হয়েছে সেই ব্যাট নিয়েই যে ব্যাটার নেমেছেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। প্রত্যেকের কাছে অনেক গুলি ব্যাট থাকে। অনেক সময় মাঠেই ব্যাটারেরা ব্যাট বদল করেন। সেই কারণে মনে হলে আম্পায়ারেরা ব্যাট পরীক্ষা করে দেখেন। সেই পরীক্ষাতেই ‘ফেল’ করলেন কেকেআরের দুই ক্রিকেটার।